প্রতিটি সুস্থ্য মানুষের অবশ্যই রক্তদান করা উচিৎ। তবে সেটা একটা নির্দিস্ট নিয়মের মধ্যে। রক্তদানের পূর্বে কিছু কিছু বিষয় রয়েছে যেগুলো আমাদের সকলেরই জানা প্রয়োজন। চলুন জেনে নেয়া যাক রক্তদানের নিয়মাবলি সম্পর্কে-
সাধারণত ১৮ থেকে ৬০/৬৫ বছর পর্যন্ত রক্ত দেওয়া যাবে। কিন্তু সে যদি পূর্বে কখন ও না দিয়ে থাকেন তাহলে বয়স ৬০ এর বেশি হওয়া যাবে না।
আমাদের দেহের লোহিত রক্ত কণিকা সাধারণত ১২০ দিন পর পর নতুন করে তৈরী হয়। রক্তদানের মধ্যবর্তী সময়ের ব্যবধান পুরুষের ক্ষেত্রে ৯০ দিন এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে ১২০ দিন হওয়া বাধ্যতামূলক।
প্লাটিলেট বা শ্বেত রক্তকণিকা দানের ক্ষেত্রে সর্বাধিক এক সপ্তাহে দুইবার এবং বছরে সর্বোচ্চ ২৪ বার দান করা যাবে।
যদি রক্তচাপ সর্বোচ্চ ১৬০/১০০ এবং সর্বনিম্ন ১১০/৬০ হয় তাহলে রক্তদান করা যাবে।
প্রেশারের ওষুধ চলাকালীন সময় রক্ত দান করা যাবে,যদি –
গত চার সপ্তাহের মধ্যে ওষুধ পরিবর্তন করে থাকলে কিংবা গত চার সপ্তাহের মধ্যে ওষুধের ডোজে তারতম্য হলে বা চার সপ্তাহের মধ্যে ওষুধের সংখ্যা বাড়ানো হলে রক্ত দেওয়া উচিত হবে না,সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
ডায়াবেটিস রোগীরা যদি রক্ত দিতে চান তাদের সর্বশেষ রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট আর ওষুধের প্রেসক্রিপশন সঙ্গে রাখতে হবে। থাইরয়েডের ক্ষেত্রে ও একই কথা প্রযোজ্য।
কারাগারে বন্দীরা রক্ত দিতে পারবেন না।
রুপান্তরকামী বা তৃতীয় লিঙ্গের কেউ রক্তদান করতে পারবেন না।
শারীরিক প্রতিবন্ধীরা রক্ত দিতে পারবেন যদি অন্যান্য রোগ না থাকে। এছাড়া হিমোগ্লোবিন মাত্রা ঠিক থাকলে অনেক ক্ষেত্রে এরা রক্ত দিতে পারবেন।
মানসিক প্রতিবন্ধী রক্ত দিতে পারবেন না।
দাঁত তোলা বা ছোটখাটো অপারেশনের পরে ছয়মাসের মধ্যে রক্ত দেওয়া যাবে না।
বড় অপারেশন, টাইফয়েড, জন্ডিসের পরে একবছর রক্ত দেওয়া যাবে না।
ডেঙ্গুজ্বর বা চিকনগুনিয়া হলে ছয়মাস রক্ত দেওয়া যাবে না।
ম্যালেরিয়া হলে তিনমাসের মধ্যে রক্ত দেওয়া যাবে না।
কুষ্ঠ রোগাক্রান্ত ব্যক্তি কোনদিনই রক্ত দিতে পারবেন না।
কোন ব্যক্তি শরীরে ট্যাটু করালে একবছরের মধ্যে রক্ত দেওয়া যাবে না।
কোলেস্টেরলের ওষুধ, ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রনের ওষুধ বা ব্যাথা ও জ্বরের ওষুধ খেলে রক্ত দিতে বাধা নাই।
এন্টিবায়োটিক কোর্স শেষ করার ৭২ ঘন্টা পর রক্ত দিতে হবে।
হেপাটাইটিস বি এর টীকা নেওয়ার দুই সপ্তাহের মধ্যে রক্ত দেওয়া যাবে না।
টিটেনাস টক্সয়েড ইনজেকশন নেওয়ার দুই সপ্তাহ পরে রক্ত দেওয়া যাবে।
কুকুর বা অন্য কোনো জন্তুর কামড়ের পরে, জলাতঙ্কের টীকা নিলে এক বছর রক্ত দেওয়া যাবে না।
পিরিয়ড চলাকালীন সময়ে রক্ত দেওয়া যাবে, যদি হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ঠিক থাকে।
সন্তানকে স্তন্যপান করালে রক্তদান করতে পারবেন না।
গর্ভপাতের তিন মাসের মধ্যে রক্ত দেওয়া যাবে না।
প্রসবের এক বছরের মধ্যে রক্তদান করা না।
মদ্যপ ব্যক্তি রক্তদান করতে পারবে না,মদ্যপানের ১২ ঘন্টার মধ্যে রক্ত দেওয়া যাবে না।
উপবাসী অবস্থায় রক্ত দেওয়া যাবে না।
কোনো বিদেশি নাগরিকদের রক্ত নেওয়া যাবে না।
আরও পড়ুনঃ
মন্তব্য লিখুন