ব্রেইন স্ট্রোক খুব পরিচিত শব্দ আমাদের কাছে। কিন্তু আমরা হয়ত অনেকেই জানি না, পৃথিবীর কোন না কোন প্রান্তে প্রতি দুই সেকেন্ডে কেউ না কেউ স্ট্রোক করে। প্রতি ছয়জন মানুষের মধ্যে একজন জীবনের যে কোন পর্যায়ে এসে ব্রেইন স্ট্রোক করেন।
আমাদের মস্তিষ্কের অক্সিজেন সাপ্লাই কমে যাওয়াই হচ্ছে ব্রেইন স্ট্রোক। স্ট্রোক পৃথিবীতে মানুষের মৃত্যুর খুব সাধারণ কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম। তাই স্ট্রোক করলে তার দ্রুত চিকিৎসা করানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
কিন্তু মাঝে মাঝে সিদ্ধান্তহীনতার জন্য অনেক দুর্ঘটনা ঘটে যায়। তাই স্ট্রোক এর ব্যাপারে না জানলেই নয়। চলুন আজ জেনে নেই ব্রেইন স্ট্রোক সম্পর্কে কিছু কথা –
আর্টিকেলে যা থাকছেঃ
মস্তিষ্কের অভ্যন্তরে কোন অংশে রক্ত সরবারহ বাধাগ্রস্ত হলে মস্তিষ্কের কোষগুলো প্রয়োজনীয় অক্সিজেন বা শর্করা সরবারহ পায় না, একেই স্ট্রোক (stroke) বলে। সাধারণত দুই প্রকারের স্ট্রোক হয়;
যখন কোন রক্তনালী বন্ধ (block) হয়ে যায় অথবা রক্তনালী দিয়ে ঠিকমতো রক্ত প্রবাহিত হতে পারে না, তখন Ischemic stroke হয়। রক্তনালী যে উপাদানগুলো জমে বন্ধ হয়ে যায়, তাকে আমরা clot বলি। ইসচেমিক স্ট্রোকই সাধারণত বেশি ঘটে থাকে।
রক্তনালী যখন ছিদ্র হয়ে যায় এবং সেই ছিদ্র দিয়ে রক্ত leake হয়। এই ঘটনাকে Hemorrhagic stroke বলে। Hemorrhagic stroke তুলনামূলক কম হয়।
মানুষের হৃৎপিণ্ডে চারটি প্রকোষ্ঠ থাকে। কোনো কারণে যদি প্রকোষ্ঠগুলো ঠিকমতো কাজ করতে না পারে , রক্তপ্রবাহ ধীরগতি সম্পন্ন হয়। ফলে platelate, clotting factor একসাথে মিলে clot তৈরি করে। সেই clot হৃৎপিণ্ড থেকে রক্তের মাধ্যমে সোজা চলে যেতে পারে মস্তিষ্কে। যদি মস্তিষ্কের রক্তনালীতে clot আটকে যায়, তাকে Embolism বলে। Embolism এর জন্য রক্ত সামনের দিকে যেতে পারে না এবং মস্তিষ্কের কোষগুলোতে অক্সিজেন সাপ্লাই ব্যাহত হয়।
আরও পড়ুনঃ অ্যানিমিয়া বা রক্তশূন্যতা কি কেন লক্ষণ ও প্রতিকার
মজার ব্যাপার হলো, মস্তিষ্কের কোষগুলোতে কোনো পেইন রিসেপ্টর নেই। তাই রক্তনালী বন্ধ হয়ে গেলেও সেই ব্যক্তি কোনো ব্যাথা অনুভব করেন না। কিন্তু অক্সিজেন সাপ্লাই কম হওয়ার কারণে মস্তিষ্কের কার্য ক্ষমতা ধীরে ধীরে কমে যেতে থাকে। অনেকক্ষেত্রে, হঠাৎ করে এটা দেখা দিতে পারে।
ব্রেইন স্ট্রোক হওয়ার সাথে সাথে আমাদের শরীর যতটা সম্ভব দমিয়ে রাখতে চেষ্টা করে। তখন শরীর ক্ষতিগ্রস্থ মস্তিষ্কের অংশে বেশি বেশি রক্তপ্রবাহ ঠেলে দিতে চায়। তবে, এই অতিরিক্ত রক্তপ্রবাহ তখন তেমন কোনো ভালো ফলাফল বয়ে আনতে পারে না। মস্তিষ্কের কোষগুলো অক্সিজেনের অভাবে আস্তে আস্তে মারা যেতে শুরু করে। ফলাফল হতে পারে Permanent Brain Damage. এই জন্যই স্ট্রোকের পেশেন্টদের দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া জরুরী।
Ischemic stroke এবং Hemorrhagic stroke দুই অবস্থাতেই প্রায় একই লক্ষণ দেখা যায়। স্ট্রোকের সাধারণ উপসর্গগুলো হলোঃ
সাধারণত স্ট্রোকের চিকিৎসা রোগীর বয়স, স্ট্রোকের ধরন, মাত্রা ইত্যাদির উপর নির্ভর করে হয়। স্ট্রোক হলে সাথে সাথে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে। সাধারণত স্ট্রোক পুরোপুরি ভালো হয় না। রোগীকে যত্নের সাথে রাখতে হয় এবং কখনো ফিজিওথেরাপি করানোর প্রয়োজন মনে হতে পারে।
স্ট্রোকের পর বেশ কিছু জটিলতা দেখা দিতে পারে-
পরিশেষে বলা যায় যে, আমরা যদি কিছু স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি এবং সর্তক থাকি স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেকাংশে লাঘব করা সম্ভব।
মন্তব্য লিখুন