নিখুত গল্প পড়ার আনন্দ ও নির্মল সাহিত্যের জন্য “ট্রেজার আইল্যান্ড” অন্যতম একটি উপন্যাস। ১৮৮৩ সালে রবার্ট লুইস স্টিভেনসন এই বিখ্যাত উপন্যাসটি লিখেন।
যুবক জিম হকিংস এর এডমিরাল বেনবো সারাই খানায় জাহাজের বুড়ো খালাসির সাথে দেখা হওয়া থেকে শুরু করে, গ্রীম্মপ্রধান দ্বীপের গুপ্তধন আনয়নের আগ পর্যন্ত প্রতেকটি চরিত্র ও কাহিনির ধারাবাহিকতা পাঠক হৃদয়ে এক প্রকার রোমাঞ্চকর অনুভুতি তৈরি করে।
বইটির অসাধারন প্লট ও স্টাইলিশ গতি পরিবর্তন পাঠককে প্রতিটি মূহুর্তের প্রতি আকর্ষন তৈরি করে। গল্পটি মুলত ভাল ও মন্দের মধ্যকার দন্দকে কেন্দ্র করে। তবে এ ক্ষেত্রে মন্দের একটি আর্কষনীয় রুপ দেখতে পাওয়া যায়। আর নেগেটিভ চরিত্রে ছিল গল্পের খল নায়ক লং জন সিলভার।
তার আর্কষনীয় চারিত্রিক বৈশিষ্ট খুব সুন্দর ভাবে লেখক উপস্থাপন করেছেন।
রবার্ট লুই স্টিভেনসন একজন সাহসি ও কৌতুহলি তরুন জিম হকিংস এর মাধ্যমে গল্পটি বর্ননা করেন। একদিন সে ঘটনা চক্রে তার বাবার পরিচালিত সারাই খানায় একটি দ্বীপ এর ম্যাপ খুজে পায়। যেই দ্বীপে রয়েছে অঢেল গুপ্তধন।
সে তার কাছের কিছু মানুষকে সাথে নিয়ে উক্ত দ্বীপের উদ্দেশ্যে সমুদ্র পথে যাত্রা শুরু করে। কিন্তু একজন বুরো জলদশ্যু লং জন সিলভারের ঐ গুপ্তধনের উপর নজর ছিল। তাই ছদ্দবেশে তারাও জিম হকিংসদের জাহাজে উঠে পরে। এরপরে উপন্যাসটির কাহিনী চাঞ্চল্যকরভাবে সামনের দিকে অগ্রসর হতে থাকে।
মুলত তাদের জাহাজে যারাই খালাসি হিসেবে উঠেছে তারা সবাই লং জন সিলভারের সহ ডাকাতছিল। এক সময় তাদের ছদ্দবেশ ফাঁস হয়ে যায়। তখন তারা প্রকাশ্যে জাহাজের মালিকদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ শুরু করে।
ছোট খাট লড়াইয়ের মধ্যেই তারা কোন মতে উক্ত দ্বিপে পৌছায়। সেখানেই অনেক ঘটনার সম্মুখীন হয় তারা। গল্পের শেষদিকে জিম বেন নামে এক লোকের সাথে পরিচিত হয়। বেন ঐ দ্বীপে একপ্রকার বন্দি অবস্থায় ছিল। কে বা কারা তার জাহাজকে আক্রমন করে তাকে ঐ দ্বীপে ফেলে রেখে চলে যায়।
যাই হোক গল্পের শেষে অসাধারন একটি টুইস্ট দেখতে পাওয়া যায়। এর কারনেই গল্পটি অতি নিখুতভাবে শেষ হয়। গল্পটির প্রথমদিকের কাহিনী সুচনা ও সব চরিত্রের সাথে পাঠকের পরিচয় করানোর ভঙ্গী লেখক অতি সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন।
এছাড়াও গল্পের শুরুথেকে শেষ পর্যন্ত প্রতিটি চরিত্রের ব্যক্তিত্বও অপরিবর্তনীয় ছিল। কিশোরদের জন্য বইটি একটি সেরা পছন্দ হবে। যারা আমার মত এ্যাডভেঞ্চার পছন্দ করেন তাদের কাছে বইটি খারাপ লাগার কোন সম্ভাবনা নেই।
এটির বাংলা অনুবাদ বিভিন্ন প্রকাশনিতে পাওয়া যায়। এছাড়াও বর্তমানে মাধ্যমিক শিক্ষা পর্যায়ে ‘বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র’ নামক সাহিত্য ক্যাম্পিং এ এই বইটি পাওয়া যায়।
তাই মাধ্যমিক শিক্ষাবর্ষে যারা রয়েছ তাদের এই বইটি একবার হলেও পড়া উচিত। তাছাড়াও বিভিন্ন অনলাইন ওযেব সাইটে এই বইটি সল্প মুল্যে পাওয়া যায়।
বই এর নাম: ট্রেজার আইল্যান্ড
লেখক: রবার্ট লুই স্টিভেনসন
প্রকাশনী: Fingerprint publishing
সাল: ১৮৮৩
জেনার: কিশোর উপন্যস
মন্তব্য লিখুন