এখন সময় কতো? এই মুহূর্তের সময় যদি আপনি জানতে চান, তাহলে খুব সহজেই ঘড়ির সাহায্য নিতে পারছেন। আপনার হাতে থাকা হাত ঘড়ি, দেয়াল ঘড়ি বা মোবাইলের ঘড়ির মাধ্যমে সময় জেনে নিতে পারছেন। বিজ্ঞানের দ্রুত বিকাশের জন্য সবকিছুরই আধুনিকায়ন হচ্ছে। আচ্ছা, আপনি বর্তমানে যে আধুনিক ঘড়িতে সময় জানতে পারছেন, এই যান্ত্রিক ঘড়ির প্রাচীন ইতিহাস জানেন কী? পৃথিবীর সর্বপ্রথম যান্ত্রিক ঘড়ি হচ্ছে সূর্য ঘড়ি। সূর্য ঘড়িকে ইংরেজিতে Sundial বলা হয়।
যে ঘড়ির সময় নিরুপন করা হয় সূর্যের আলোর সাহায্যে তাকেই সূর্য ঘড়ি বলে। এই ঘড়ি পৃথিবীর ইতিহাসে সর্বপ্রথম প্রাকৃতিক ঘড়ি। যেহেতু এই ঘড়ির সাহায্যে সময় দেখার জন্য সূর্যালোক এর প্রয়োজন হয়। তাই রাতের বেলা বা সূর্য যখন অনুপস্থিত থাকে তখন সময় জানা সম্ভব হয় না।
প্রাচীন সভ্যতার স্থান মিশর এবং ব্যাবিলনে সূর্য ঘড়ির উৎপত্তি। আনুমানিক ৫৫০০ বছর আগে এই ঘড়ির নিদর্শন পাওয়া যায়। অনেক আগে সময় জানার জন্য, সূর্য এবং মাটিতে এর ছায়ার ব্যবহারকে কেন্দ্র করে সান ডায়াল তৈরি হয়েছিল। এতে কোন সেকেন্ড বা মিনিটের কাটা নেই। একটি গোলাকার চাকতি তে, একটি নির্দেশক কাঁটা এবং একটি দাগ কাঁটা সময়ের ঘর মিলেই তৈরি করে এই ধরনের ঘড়ি।
এই ঘড়ি সূর্যের বিভিন্ন অবস্থানের উপর ভিত্তি করে সময় নির্দেশ করে থাকে। প্রকৃতপক্ষে একটি কৌশল বলা যায়। এই ঘড়ির নকশাতে, সময় নির্দেশক হিসাবে ধারালো প্রান্ত বিশিষ্ট একটি চিকন রড বসানো থাকে। অপরদিকে ঘড়িটার পৃষ্ঠতলে ঘন্টা নির্দেশক লেখাগুলো থাকে।
এধরণের ঘড়িতে,নিচের পৃষ্ঠতলের চাকতিটা ১৮০ ডিগ্রী কোনে বাকানো থাকে। একই সাথে চাকতি তে ৬ থেকে ১৯ পর্যন্ত সংখ্যা দাগ কাঁটা থাকে। যেগুলো ঘন্টার কাটা নির্দেশ করে। এছাড়াও মিনিট এর জন্যও আলাদা দাগ কাঁটা থাকে।
যখন দিনে সূর্য পরিক্রমন করে বিভিন্ন সময়ে, তখন পৃথিবীর সাপেক্ষে সূর্যের অবস্থানের পরিবর্তন হয়। ফলে, একেক সময়ে চিকন রডের উপর সূর্যের আলো পড়তে থাকে। আর তাই বিভিন্ন সময়ে ওই চিকন রডের অভিক্ষেপ বা ছায়া নিচে থাকা ঘন্টা নির্দেশক পৃষ্ঠতলের উপর পড়ে। এভাবেই আমরা সূর্য ঘড়ির মাধ্যমে নির্ভুল সময় জানতে পারি।
আপনার রয়েছে দেশের মধ্যেই সূর্য ঘড়ি দেখার সুযোগ। পুরান ঢাকার ওয়ারিতে অবস্থিত বলধা গার্ডেনে এবং সাজেক উপত্যকাতে সূর্য ঘড়ি রয়েছে।
মন্তব্য লিখুন