প্রকৃতি আর মানুষ্য হৃদয়ের অন্তরঙ্গতার গড়মিল একসাথে গাঁথা। প্রকৃতি শব্দটি উচ্চারণের সাথে সাথে আমাদের চোখে ভেসে আসে সারি সারি বৃক্ষ আর অপরুপ নদীর সমাহার। আর এই সবকিছুর সম্মিলিত রুপের অদ্বিতীয় সমাবেশে বনের রাজা মহাবন আমাজন ।
আর্টিকেলে যা থাকছেঃ
মহাবন আমাজন যার সৃষ্টি প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি বছর পূর্বে ইওসিন যুগে। সৃষ্টিতত্বের শুরুতেই জেনে নেওয়া যাক পৃথিবীর এ গহীন বনের আমাজান নামকরণ রহস্য। ধন সম্পদের প্রতি আকৃষ্টতা মানুষের একটি স্বাভাবিক প্রবৃত্তি।
মনে করা হয় প্রাচীন অভিযাত্রীরা প্রবেশ করে এ গহীন বনে। তারা বিশ্বাস করত এ গহীন বনের মধ্যে লুকিয়ে আছে অলডোরাভো নামের এক সোনায় মোড়ানো শহর যার প্রতিরক্ষার দায়িত্বে ছিল আমাজন নামের এক গোষ্ঠীর নারী যোদ্ধা।
প্রাচীন অভিবাসীরা শত প্রচেষ্ঠায়ও সেই শহরের সন্ধান পাননি। তবে এই প্রাচীন নারী যোদ্ধাদের নাম আমাজন আর পৌরাণিক ইতিহাসের আদলেই পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ বন পরিচিতি পায় আমাজন নামে।
প্রায় ৭০ লক্ষ বর্গমাইল অঞ্চল জুড়ে নদী, বনাঞ্চল আর বৃক্ষ রাজির মহা সমাবেশ নিয়ে দাড়িয়ে আছে মহাবন আমাজান। মহাবন আমাজন মূলত রেইনফরেস্ট নামে পরিচিত ভৌগোলিক অবস্থানের কারনে এই অঞ্চলের জলবায়ু আদ্র ও স্যাঁতসেতে তাই বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেশি তবে সারা বছর জুড়ে বৃষ্টিপাত থাকে না এ মহাবনে।
৭০ লক্ষ বর্গমাইলের প্রায় ৫০ লক্ষ বর্গমাইল জুড়েই আদ্র ও স্যাঁতসেতে জলবায়ু বিদ্যমান। আয়তনের বিশালতায় আমাজান বন প্রায় ৯টি দেশ জুড়ে বিস্তৃত। মোট বনাঞ্চলের ৬০% রয়েছে ব্রাজিলে, ১৩% পেরুতে, ১০% কলম্বিয়ায়, বাকি অংশ রয়েছে ৬টি দেশ ভেনেজুয়েলা, ইকুয়েডর, বলিভিয়া, গায়ানা,ফরাসি গায়ানা এবং সুরিনাম জুড়ে।
পৃথিবীর সকল রেইনফরেস্টের প্রায় ৫০% ধারণ করে আমাজন। দক্ষিণ আমেরিকার সিংহভাগ অঞ্চল আমাজনের অন্তর্ভুক্ত। তাছাড়া আয়তনের বিচারে আমাজন বাংলাদেশের তুলনায় প্রায় ৮ গুন বড়।
নদীর প্রবাহকে ঘিরে গড়ে ওঠে বৃক্ষরাজি আার প্রানী বৈচিত্র্যের সমাহার। আমাজান বনের প্রাণ শক্তির মূল উৎস এই আমাজান নদী। আমাজনের সৃষ্টি মূলত এই নদীকে কেন্দ্র করে। আমাজন নদী পেরুর আন্দিজ পর্বতমালার অববাহিকার মাসিস অংশ থেকে জন্মলাভ করে প্রবাহিত হয়েছে সমগ্র আমাজন জুড়ে। রিও আমাজনীয়া নামে পরিচিত এ নদীর রয়েছে অনেক গুলো স্থানীয় নাম তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ইনি, টাম্বো, ইউবায়ালী ইত্যাদি।
বিশালতার দিক দিয়ে এ নদী বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম নদী হিসেবে বিবেচিত। এ নদীর প্রায় ১১০০ টি শাখা নদী রয়েছে যা সমগ্র আমাজান বন জুড়ে জালের মত ছড়িয়ে আছে। এর মধ্যে ১৭ টি শাখা নদী আছে যার দৈর্ঘ্য ১০০০ মাইলের বেশি। শাখা নদী গুলোর মধ্য বামে অবস্থিত রিও, নেগ্রো, ওয়াইনিয়া ইত্যাদি নদী গুলো এবং ডানে অবস্থিত উখায়ালী, পুরাস, মাদেইরা, তপাজস, জিংগু ইত্যাদি নদী।
আরও পড়ুনঃ বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল -পৃথিবীতে ব্যাখ্যাতীত ঘটনা ঘটে নাকি পুরোটাই মিথ
আমাজন নদীর দের্ঘ্য প্রায় ৬৪০০ কিলোমিটার। এ নদী পুরো আমাজন জুড়ে বিস্তৃত হওয়ায় যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম হিসেবেও এ নদীকে ব্যবহার করা হয়।
দক্ষিণ আমেরিকার ৫টি দেশের মধ্য দিয়ে ৩০০০ মাইল পথ পাড়ি দিয়ে এ নদী পতিত হয়েছে আটলান্টিক মহাসাগরে। পৃথিবীর প্রায় বিশ ভাগ পানি সমুদ্রে প্রবাহিত করে নদীটি। প্রায় ৪২ লক্ষ ঘনফুট জল সাগরে পতিত হয় এ নদী দ্বারা। বর্ষা মৌসুমে যার পরিমান বেড়ে হয়ে যায় ৭০ লক্ষ ঘনফুট। এটি সর্ববৃহৎ পানি নিষ্কাশন বেসিন এবং পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তর নদী হিসেবে পরিচিত।
এ নদীর পানি প্রবাহের গতিবেগ এতটাই বেশি যে আটলান্টিকের অববাহিকায় পতিত হওয়ার পর ১২৫ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে এ নদীর পানি (মিঠা পানির) অস্তিত্ব পাওয়া যায়।
সমগ্র আমাজন জুড়ে অসংখ্য ছোট বড় ঝর্নার পানি নিষ্কাশনের একমাত্র পথ হিসেবে বিবেচিত নদীটি। তাছাড়া আমাজন নদীর একটি শাখা নদী রয়েছে যার পানির তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ৯৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত হয়ে থাকে। নদীর পানি সবসময় ফুটন্ত অবস্থায় থাকে। স্থানীয় লোকেরা কখনও নদীতে সাঁতার কাটে নাহ কারন তারা মনে করে এ নদী দেবতার শক্তি তাই নদীতে সাঁতার কাটলে তাদের অমঙ্গল হবে।
বনের বৈশিষ্ট্যই বৃক্ষরাজির সমাহার। বিশাল বৃক্ষরাজির অহরহ সমাবেশে পরিপূর্ণ আমাজন বন। বৃক্ষের সাথে অক্সিজেন প্রাপ্তির হার সমানুপাতিক। তাইতো আমাজনে উদ্ভিদ কূলের পরিপূর্ণতা আমাজন বন কে এনে দিয়েছে “পৃথিবীর ফুসফুস ” উপাধির সম্মান।
পৃথিবীর মোট অক্সিজেনের ২০ ভাগের উৎস স্থল এ মহাবন। এখানে দেখা মেলে ১২০ ফুট উচ্চতার উচু বৃক্ষের যা মাথা উচু করে প্রমান করে আমাজনের বৈচিত্র্যতা। যার ফলে বৃষ্টির পানি এবং সূর্যের আলো পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে নাহ আমাজনের ভূসংলগ্ন অংশে।
যার কারনে ভূসংলগ্ন অংশের পরিবেশ সব সময় আর্দ্র ও স্যাঁতসাতে থাকে। বন জুড়ে বিস্তৃত প্রায় ৪০ হাজার জাতের গাছ। যার মধ্যে ৩০০০ জাতের গাছ ফলাদি এবং মাত্র ২০০ জাতের ফলাদি গাছের ফল খাওয়ার উপযুক্ত। এখানে রয়েছে প্রায় ১৫০০ প্রজাতির ঔষধী গাছ। পৃথিবীর মোট ঔষধের শতকরা ২৫ ভাগের কাঁচামালের সরাসরি উৎস আমাজান বন।
লতা পাতা গুল্ম আগাছায় পরিপূর্ণ এ বনের বৃক্ষরাজির বৈচিত্র্যতা প্রধান আকর্ষন। আমাজন বনে এক প্রকারের ভাসমান পদ্ম পাওয়া যায় যা একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের ভর বহনে সক্ষম এবং ৩ ফুটের বেশি বড় হতে পারে। এ প্রজাতির পদ্ম শুধু আমাজনেই পাওয়া যায়। ইংল্যান্ডের রানী ভিক্টোরিয়ার নামে এ বিরল প্রজাতির উদ্ভিদের নামকরণ করা হয় “ভিক্টোরিয়া অ্যামাজনীয়া“।
সমগ্র আমাজন মহাবনে যেন প্রাণিদের অবাধ বিচারনের চারণভূমি। বৃক্ষ রাজির ফাকে ফাকে প্রায় ১৩০০ প্রজাতির পাখির সমাহার, বিস্তৃত নদীর জলরাশিতে ২২০০ জাতের মাছের বিচারন। তাছাড়া ও ৪২৭ জাতের স্তন্যপায়ী, ৩৮৭ প্রজাতির সরীসৃপ আর ৪২৮ জাতের উভচরের উপস্থিতি মহাবন আমাজন -কে উপহার দিয়েছে পৃথিবীর সর্ব বৃহৎ প্রানী বৈচিত্র্যময়তার খেতাব।
পৃথিবীর সব থেকে বড় ও বৈচিত্র্যময় ইকোসিস্টেম দেখা যায় এ বনে। আমাজনের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে প্রায় ২৫ লক্ষ প্রজাতির পোকামাকড়। এদের মধ্যে বিষাক্ত প্রজাতির পোকামাকড়ের একটির কামড়ে নির্গত বিষ দিয়ে একাধিক মানুষের মৃত্যু ঘটাতে পারে।
চিতাবাঘ, কুমির, অ্যানাকোন্ডা, কোবরা, বন্য হাতি. জেবরা, পাইথন, প্রায় সমগ্র প্রানীদের দেখা মেলে এখানে। বিরল প্রজাতির প্রানীদের মধ্য উল্লেখযোগ্য রয়েছে গোলাপি ডলফিন, চিতাবাঘ, ডার্ক ফ্রগ, বিদুৎ হিল ইত্যাদি।
মহাবন আমাজন বনে রয়েছে প্রায় ১৫০ প্রজাতির প্রজাপতি। ভয়ংকর ও বিপদ জনক প্রানীদের অন্যতম আাশ্রয়স্থল আমাজন। উল্লেখ যোগ্য বিষাক্ত প্রানীদের মধ্যে রয়েছে পয়জন ডার্ক ফ্রগ, গ্রিন অ্যানাকোন্ডা যার দের্ঘ্য ৩০ ফুট এবং ওজনে ২৫০ কেজির বেশি হয়। অরপাইমা মৃষ্ট জলের সব থেকে বড় মাছ এটি মাংসাশী প্রানী। তাছাড়া রয়েছে ক্যাডিরু, পিরানহা, দ্যা পাকু, ইলেকট্রিক ইল, ব্লাককেমন ইত্যাদি।
অজানাকে জানার রহস্য আর কৌতুহল সমগ্র কাল প্রবাহিত করেছে মানুষের জীবনকে। আমাজন বন যার সমগ্র অঞ্চল জুড়ে এখনও মানুষের পদচিহ্ন পড়েনি তাকে ঘিরে রহস্য থাকটা তো নিতান্তই স্বাভাবিক। আমাজনের কিছু কিছু অঞ্চল জুড়ে রয়েছে রহস্যময় গোলাকার আকৃতির খাজ বা চিন্হ।
যা সৃষ্টির কারন আজও অজানা রহস্য হয়ে রয়েছে। ৫০ লক্ষ বছরের পুরনো গাছের আড়াল, আকৃতি, ভয়ংকর চাহনি সবই তো এক একটা রহস্যর প্রবেশ দ্বার। পেরু অংশের আমাজন বনে একটি গাছে ১৩ প্রজাতির পিপড়াদের বাসও অন্যতম রহস্য।
মানুষ পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ জীব যারা যুগের পর যুগ পৃথিবীকে শাসন করে আসছে তাদের বুদ্ধিমওা দ্বারা মহাবন আমাজন আমাজনেও মানবকুলের আধিপত্যটা প্রকট হওয়াটাই স্বাভাবিক। আমাজনে বসবাস করে প্রায় ৫০০- ৪০০ উপজাতি যারা আমাজন নদীকে কেন্দ্র করে গড়ে তুলেছে সভ্যতা।
৪০০ ধরনের উপজাতির মধ্যে প্রায় উপজাতিই আদি ইন্ডিয়ান গোষ্ঠী থেকে এসেছে। এদের মধ্যে ৫০ ধরনের উপজাতি আছে যাদের সাথে আধুনিক সভ্যতার কোন যোগাযোগ নেই। আধুনিক সভ্যতা থেকে এরা পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন। আধুনিক সভ্যতার সাথে যোগসূত্র স্থাপনের কোন আগ্রহ এদের নেই। তারা মূলত প্রানী শিকার ও চাষাবাদের মাধ্যমে তাদের জীবিকা নির্বাহ করে।
তাদের চাষাবাদ পদ্ধতি আর পশু শিকারের সাথে আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবহার নেই বললেই চলে। তাদের খাদ্যের যোগান তারা প্রাকৃতিক উপায়ে নিজ্বস পদ্ধতি অবলম্বনে মেটায়। সারি সারি বৃক্ষরাজির ছাল বাকল দিয়ে তারা বস্তুের চাহিদ মেটায়। পশু, মাছ আর বৃক্ষের ফল ফলাদি, চাষাবাদে উৎপাদিত ফসল মেটায় খাদ্যর চাহিদা।
চিকিৎসা বলতে ঔষধী গাছের ফল মূল ছাল বাকল এগুলোই ব্যবহার করে তারা। তীর, ধনুক, বর্ষা, অনেক ক্ষেত্রে বিষাক্ত গাছের ফল ব্যবহৃত হয় শিকারের বস্তু হিসেবে। গাছে আহরনে আদিবাসীরা খুবই পারদর্শী কারন জন্ম লগ্ন থেকেই তারা সারি সারি গাছ আর হিংস্র পশু পাখিদের সংস্পর্শে বেড়ে ওঠে। আমাজনীয় আদিবাসী বা উপজাতিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু গোষ্ঠীর নাম হল বারা, আবারা, মাকো, গৌরানী, বানিয়া, ওইকানা, জেবেরো, ডিনি, মারি এবং কারা ইত্যাদি।
সভ্যতার আধুনিকায়ন আর প্রকৃতির স্বাভাবিকতা ব্যাহত হওয়া পরস্পর আন্ত সম্পর্কিত। আমাজন বনের উপর ও রয়েছে সভ্যতা আধুনিকায়নের বিরূপ প্রভাব। ১৯৬০ সাল পর্যন্ত আমাজন বনে মানুষের প্রবেশ ছিল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
তখন প্রানী আর বৃক্ষরাজির চারন ভূমিতে বিচারনের ক্ষেত্রকে প্রভাবিত করার মত কেউ ছিল নাহ। ১৯৬০ সালের পরেই আমজনে মানুষ প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়। তারপরই শুরু হয় আদিবাসী ছাড়া অন্য আধুনিক মানুষের বাস।
মহাবন আমাজন আমাজনে একটা নির্দিষ্ট মৌসুমে চাষাবাদ ভালো হয় তাছাড়া বৃক্ষরাজিতে পরিপূর্ণ থাকায় চারণভূমির পরিমান ছিল কম। মানুষের সংখ্যা বাড়ার সাথে সাথে চারনভূমির পরিমান বাড়াতে শুরু হয় বৃক্ষনিধন, অবাধে বন উজার।
১৯৭০ সালে নির্মিত হয় ট্রান্স অ্যামাজনীয়ান হাইওয়ে যা আমাজন বনের আপন পরিবেশে বিরুপ প্রভাব ফেলতে শুরু করে। ১৯৯০ সালের মধ্যে প্রায় ৪ লক্ষ বর্গ কিলোমিটির ভূমি ধংস্ব হয়ে যায়। ২০০০ সালে উজারকৃত বনভূমির পরিমান দ্বারায় ৫ লক্ষ ৮৭ হাজার বর্গকিলোমিটার।
তাছাড়া প্রায় প্রতি বছরই অনাকাঙ্ক্ষিত দাবানল, অগ্নিকান্ড, বন্যা, মানুষ্য সৃষ্ট অগ্নিকান্ড বন উজারে কমছে আমাজনের বনাঞ্চল ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে প্রকৃতি প্রানী বৈচিত্র্য। বিগত দিন গুলোর পরিসংখ্যান অনুযায়ী এভাবে বন উজার হতে থাকলে হয়তো ৫০ বছরে সুবিশাল মহাবন আমাজনও একদিন ধংস্স হয়ে যাবে।
পুরো পৃথিবীর অক্সিজেনকে যদি একটা সিলিন্ডারে আবদ্ধ করা হয় তাহলে তার ২০ ভাগ যাবে আমাজন বন থেকে। মহাবন আমাজন বিশ্বের সব থেকে বড় কার্বন ডাই-অক্সাইডের গ্রাহক। উদ্ভিদ মূলত কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্রহন করে এবং অক্সিজেন ত্যাগ করে। কাজেই বন নিধনের সাথে সাথে পরিবেশে অক্সিজেনের পরিমান কমবে এবং কার্বনডাই-অক্সাইডের পরিমান বৃদ্ধি পাবে।
কার্বন ডাই-অক্সাইড যেহেতু গ্রীন হাউজ গ্যাস তাই বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি পাবে তার ফল স্বরূপ মেরু অঞ্চলের বরফ গলার পরিমান বাড়বে এবং তারই সাথে বাড়বে সমুদ্রের পানির উচ্চতা।
যা ধীরে ধীরে সৃষ্টি করবে ভয়াবহ বন্যা প্লাবিত হবে নিমাঞ্চল ক্ষতিগ্রস্থ হবে মানব সভ্যতা। আমাজান মহাবন বিশ্ব জলবায়ু তথা সমগ্র পৃথিবীর বৈশ্বিক উষ্ণতার উপর প্রভাব বিস্তার করে। তাই পৃথিবীর জলবায়ু কে সুষ্ঠ সুন্দর রাখতে হলেও আমাজনের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা অতীব জরুরি।
আমাজন মহাবন যা পৃথিবীর ফুসফুস সর্ববৃহৎ প্রানী বৈচিত্র্যর বিস্তৃত সমাবেশ পৃথিবীর অন্যতম সম্পদ তাই এ পৃথিবীর ফুসফুস যদি ক্ষতিগ্রস্থ হয় তবে থমকে যাবে সমগ্র দেহ তথা সমগ্র পৃথিবীর অক্সিজেন সরবরাহ।
তাই আমাদের প্রয়োজনে আমাদের পৃথিবীর অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখতে হলেও মহাবন আমাজন বনের সুষ্ঠ রক্ষণাবেক্ষণ প্রাণি বৈচিত্র্য সচ্ছলতা আনায়ন জরুরি। সর্বোপরি, সভ্যতার আধুনিকায়নের বিরুপ প্রভাব বা কালো আবছায়া থেকে মহাবন আমাজনকে রক্ষার্থে সোচ্চার হওয়া উচিত।
মন্তব্য লিখুন