টিভি সেটের সামনে বসলেই যারা চ্যানেল ঘুড়িয়ে “ডিসকভারি” অথবা “ন্যাশনাল জিওগ্রাফি” চ্যানেলে চলে যায় তাদের অনেকেরই পছন্দের একটি টিভি শো হলো “ম্যান ভার্সেস ওয়াইল্ড“। যেখানে সবার জনপ্রিয় “বিয়ার গ্রিলস” (একজন অ্যাডভেঞ্চারার বা অভিযাত্রী) বিভিন্ন প্রতিকূল পরিবেশে কীভাবে টিকে থাকা যায় তার বিভিন্ন কৌশল দেখায়। এই দুঃসাহসী অভিযাত্রী বা সারভাইভার এর জীবনের জানা-অজানা অনেক তথ্য জানাবার চেষ্টা করবো আজকের এই লেখায়।
বিয়ার গ্রিলস এর পূর্ণ নাম “এডওয়ার্ড মাইকেল বিয়ার গ্রিলস“। বিয়ার গ্রিলস ৭ জুন ১৯৭৪ সালে যুক্তরাজ্যের আয়ারল্যান্ডের ডোনাঘাডি এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন।
তিনি একজন খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী। তার পিতার নাম স্যার মাইকেল গ্রিলস। স্যার মাইকেল গ্রিলস ছিলেন কনজারভেটিভ পার্টির একজন রাজনীতিবিদ। বিয়ার গ্রিলসের মায়ের নাম হলো লেডি গ্রিলস। বিয়ার গ্রিলস তার পিতা-মাতার দ্বিতীয় এবং সর্ব কনিষ্ঠ সন্তান। বিয়ারের একজন বড়বোন আছে। তার নাম লারা ফাউসেট, যিনি পেশায় একজন টেনিস কোচ।বিয়ার গ্রিলসের বয়স যখন কেবল এক সপ্তাহ তখন তার বড়বোন লারা ই বিয়ার গ্রিলসের নাম রাখেন “বিয়ার”।
বিয়ার গ্রিলস তার শৈশবের ৪ বছর অতিবাহিত করেছেন উত্তর আয়ারল্যান্ডের ডোনাঘাডি এলাকায়। এরপর পরিবারের সাথে স্থানান্তরিত হয় ক্যামব্রিজ অঞ্চলে। বিয়ার গ্রিলস ইটন হাউস ও লুডগ্রুভ স্কুল থেকে স্কুল শিক্ষা, ইটন কলেজ থেকে উচ্চ শিক্ষা এবং ইউনিভার্সিটি অফ লন্ডন থেকে স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেছেন। এছাড়াও ইংরেজি, স্প্যানীয় এবং ফরাসি ভাষায় তার দক্ষতা রয়েছে।
ছোটবেলা থেকেই তার মধ্যে এমন সাহসী গুণ ছিলো।বিয়ার গ্রিলসের পিতা নৌচালনায় বেশ দক্ষ ছিলেন।খুব অল্প বয়সেই বিয়ার তার পিতার কাছ থেকে নৌচালনা শিখেছিলেন এবং তার বাবার কাছ থেকেই পর্বতারোহন শেখেন। স্কাইডাইভিং এবং কারাতেও কৈশোরেই শিখে ফেলেছিলেন বিয়ার গ্রিলস। এমনকি মাত্র আট বছর বয়সে কাব স্কাউট হন বিয়ার গ্রিলস। এছাড়াও আর একটি অবাক করা তথ্য হলো বিয়ার যখন ইটন কলেজের ছাত্র ছিলেন তখন তিনিই প্রথম সেখানে একটি পর্বতারোহণ ক্লাব প্রতিষ্ঠা করেন।
আপনি কী জানতেন বিয়ার গ্রিলস একজন সেনাবাহিনীর অফিসার ছিলেন? আর্ম ফোর্সের সৈন্যদের অ্যাডভেঞ্চার পূর্ণ জীবন বিয়ার গ্রিলসের কাছে বেশ আকর্ষণীয় মনে হতো তাই পড়ালেখা শেষ হবার পর বিয়ার গ্রিলস ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে যোগ দেয়।
সেখানে বিয়ার ইউনাইটেড কিংডম স্পেশাল ফোর্স রিজার্ভে কাজ করেন। এরপর ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর স্পেশাল এয়ার সার্ভিসের তিন বছরের অভিজ্ঞতা তাকে করে তুললো একজন সেরা স্কাইডাইভার। আর এই স্পেশাল এয়ার সার্ভিসে থাকাকালীন স্কাইডাইভিং করতে গিয়ে ১৯৯৬ সালে বিয়ার গ্রিলস এক ভয়াবহ দূর্ঘটানার সম্মুখীন হয়।
সেসময় বিয়ার জাম্বিয়ায় প্যারাশুট ট্রেনিং করাচ্ছিলেন কিন্তু হঠাৎ করে বিয়ার লক্ষ করেন যে তার প্যারাশুটটি কাজ করছে না। প্যারাসুট কাজ না কারার কারণে বিয়ার এই দূর্ঘটানায় কবলিত হয়।প্যারাশুট কাজ না করায় প্রায় ১৭ হাজার ফিট উঁচু থেকে সোজা মাটিতে পরে বিয়ার গ্রিলস।এই দূর্ঘটনায় বিয়ার মারাত্মক ভাবে আহত হয়। এবং এই দূর্ঘটনায় বিয়ারের মেরুদণ্ডের তিনটি হাড় ভেঙে যায়। ডাক্তার জানায় যে বিয়ার আর কখনোই হাঁটতে পারবে না।
সেজন্য তাকে সেনাবাহিনীর সকল কার্যকলাপ থেকে অবসর নিতে হয়। প্রায় বারোমাস পর্যন্ত বিয়ার গ্রিলসের চিকিৎসা চলে। অন্যকেউ হলে হয়তো হাল ছেড়ে দিত কিন্তু বিয়ার হাল ছাড়েনি। বারোমাসের চিকিৎসা আর কঠোর পরিশ্রম এর মাধ্যমে ডাক্তারদের ভবিষ্যতবাণী মিথ্যা করে দিয়ে আবার হাটঁতে শুরু করেন বিয়ার গ্রিলস। আপনি কী জানতেন বিয়ার গ্রিলসের মেরুদণ্ডের তিনটি হাড় ভাঙা?
আপনি কী জানেন বিয়ার গ্রিলস একজন এভারেস্ট বিজয়ী? ভয়াবহ প্যারাশুট দূর্ঘটনায় আহত হয়ে বিয়ার গ্রিলস যখন চিকিৎসাধীন অবস্থা থেকে ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছিলেন তখন তার ছোটবেলার স্বপ্ন মাউন্ট এভারেস্ট জয়ের ইচ্ছে পুনরায় জাগ্রত হয়।
মাত্র আট বছর বয়সে বিয়ার গ্রিলসের বাবা তাকে এভারেস্টের একটি ছবি উপহার দিয়েছিলেন, তখন থেকেই গ্রিলসের এভারেস্ট জয় করার স্বপ্ন ছিলো। ভয়াবহ সেই দূর্ঘটনা মাত্র আঠারো মাস পরে ১৯৯৮ এর ১৬ মে বিয়ার গ্রিলস তার ছোটবেলার স্বপ্ন মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেন। তখন বিয়ার গ্রিলসের বয়স ছিলো মাত্র ২৩ বছর।
মাত্র ২৩ বছর বয়সে এভারেস্ট জয়ের মাধ্যমে তিনি গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস-এ সর্বকনিষ্ঠ ব্রিটিশ হিসেবে এভারেস্ট জয়ের রেকর্ড করেন।
বিয়ার গ্রিলস ২০০০ সালে বিয়ে করেন।তার স্ত্রীর নাম সারাহ কেনিংস নাইট ওরফে সারা গ্রিলস। বিয়ার এবং সারা গ্রিলস দম্পত্তির তিনটি পুত্র সন্তান রয়েছে। তাদের নাম জেস, মার্মাডিউক এবং হাকলবেরি।
এভারেস্ট নিয়ে ইংল্যান্ডের বিখ্যাত প্রতিষ্ঠান ডিওডোরেন্ট একটি বিজ্ঞাপন তৈরি করেছিলো। সেই বিজ্ঞাপনে অংশগ্রহণের মধ্যে দিয়ে টেলিভিশনে অভিষেক ঘটে বিয়ার গ্রিলসের।
ইংল্যান্ডের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় কতৃক নির্মিত সেনাবাহিনীর মাদক-বিরোধী একটি টিভি ক্যাম্পেইনেও বিয়ার গ্রিলসকে দেখা যায়। বিশ্বখ্যাত হ্যারডস দোকানের বিজ্ঞাপনেও গ্রিলসকে দেখা যায়।
এছাড়াও বিয়ার গ্রিলসকে বেশ কিছু টেলিভিশন প্রোগ্রামে দেখা গিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে দ্য টুনাইট শো উইথ যে লেনো, ফ্রাইডে নাইট উইথ জোনাথন রোজ, দ্য লেট শো ডেভিড লেটারম্যান, অপরাহ উইনফ্রে শো ইত্যাদি। এখানেই শেষ নয়, অনেকেই হয়তো জানেন না যে বিয়ার গ্রিলস চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য প্রস্তাব পেয়েছিলেন। হ্যা, ওয়ার্নার ব্রাদার্স তাদের “ক্ল্যাশ অফ দ্য টাইটানস” চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য প্রস্তাব করেছিলেন বিয়ার গ্রিলসকে।
১৯৯৮সালে এভারেস্ট বিজয়ের মাধ্যমেই বিয়ার গ্রিলসের সব ধরনের অভিযানের শুরু হয়। ২০০৫ সালে ফ্রেঞ্চ ফরেন লিজিওনের আওতায় বিয়ার গ্রিলস এবং তার এগারো সহযোগী সাহারা মরুভূমিতে প্রশিক্ষণের উপর একটি টেলিভিশন শো নির্মান করেন। যার নাম ছিলো “এস্কেপ টু দ্য লিজিওন“।
এই প্রোগ্রামটি যুক্তরাজ্যের “চ্যানেল ফোর” এবং যুক্তরাষ্ট্রের মিলিটারি চ্যানেলে প্রচারিত হয়। শো টি খুবই জনপ্রিয় ছিলো তাই ২০০৮ সালে এটি আবার পুনঃপ্রচারিত হয় যুক্তরাজ্যের হিস্টোরি চ্যানেলে।
বর্তমানে বিশ্বজুড়ে বিয়ার গ্রিলসের যে এত ব্যাপক পরিচিত তা কিন্তু তার টিভি শো “ম্যান ভার্সেস ওয়াইল্ড” এর জন্য। এই শো এর মাধ্যমেই বিয়ার এতটা জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন।মূলত বিয়ার “বর্ন সারভাইভর: বিয়ার গ্রিলস” নামে একটি শো করতেন যেটি যুক্তরাজ্যের “চ্যানেল ফোর” -এ প্রচারিত হয়। এই “বর্ন সারভাইভর: বিয়ার গ্রিলস” অনুষ্ঠানটিই “ম্যান ভার্সেস ওয়াইল্ড” নামে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, নিউজিল্যান্ড, ভারত এবং অস্ট্রেলিয়ায় প্রচারিত হয়। অন্যদিকে ইউরোপ, এশিয়া এবং আফ্রিকার অনেক দেশে এই শো টি প্রচারিত হয় “আল্টিমেট সারভাইভাল” নামে।
২০০৬ সালে প্রথম “ম্যান ভার্সেস ওয়াইল্ড” শুরু হয়।এবং বিশ্বের প্রায় ১.২ বিলিয়ন মানুষ এই অনুষ্ঠান দেখে থাকে। শো টি যখন প্রথম টেলিকাস্ট হয় সেসময় এটি পরিণত হয় যুক্তরাষ্ট্রের সর্বাধিক জনপ্রিয় টেলিভিশন প্রোগ্রামে।
এই প্রোগ্রামে বিয়ার গ্রিলস দেখায় কীভাবে প্রতিকূল পরিবেশে টিকে থাকা যায়। এই ম্যান ভার্সেস ওয়াইল্ড অনুষ্ঠানে দেখা যায় যে, বিয়ার গ্রিলস বেঁচে থাকার জন্য কখনো সুউচ্চ পর্বত-শৃঙ্গে আরোহণ করছে, কখনো হেলিকপ্টার থেকে প্যারাশুট ছাড়াই নিচে নামছে।
বরফ আচ্ছাদিত পাহাড়ে উঠছে, প্যারাগ্লাইডিং করছে। কখনো জঙ্গলে দাবানলের আগুনের ভেতর দিয়ে দৌড়াচ্ছে। গহীন জঙ্গলে অথবা মরুভূমিতে খাবার যোগ্য কিছু না পেয়ে কখনো সাপ, ব্যাঙ, পোকা-মাকড়, হরিণের অথবা হাতির বিষ্ঠা খেয়েছে।
আবার কখনো খাবার জন্য পানি না পেয়ে নিজের মুত্র খেয়েছে। মৃত উটের পেটের মধ্যে থাকা পঁচা খাবার নিংড়ে পানি পান করছে। কখনো আবার কয়েক মিটার গর্তখুঁড়ে খাবার পানি বের করেছে। বাচাঁর জন্য কখনো কুমিরের সাথে যুদ্ধ করছে আবার কখনো যুদ্ধ করছে ভাল্লুকের সাথে।
হিমশীতল আবহাওয়া থেকে বাঁচার জন্য কখনো মৃত রেইন ডিয়ার বা কখনো মৃত সীলের চামড়া গায়ে জড়িয়েছে। জলপ্রপাত ও পাহাড়ের ওপর থেকে ঝাপ দিয়েছে। আবার কখনো কুড়িয়ে পাওয়া কাঠ, গাছ বা বাঁশ দিয়ে ভেলা তৈরি করে সাগর পাড়ি দিয়েছে।
কোন প্রকার যন্ত্র ছাড়াই ফাদ পেতে মাছসহ অন্যান্য জলজ প্রাণী শিকার করে খেয়েছে। কাঠ দিয়ে বর্শা তৈরি করে সাগরের তলদেশ থেকে চিংড়ি ও অন্যান্য মাছ ধরে খাচ্ছে।দিয়াশলাই ছাড়াই কখনো চকমকি পাথর ঘষে কখনো বা শুকনো ডালের সাথে ডাল ঘষে আগুন জ্বালিয়েছে। সেই আগুনেই আবার সংগৃহীত মাছ বা মাংস পুড়িয়ে খেয়েছে।
কখনো পাহাড়ের গুহায় রাত কাটিয়েছে। কখনো গাছে কখনো আবার হাতের কাছে যা পেয়েছে তাই দিয়েই থাকার জন্য আশ্রয় বানিয়েছে।
মোটকথা দুর্গম পরিবেশে আটকে পড়লে সেখানে কিভাবে বেঁচে থাকতে পারেন এবং সেখান থেকে ফিরে আসতে পারেন তার সব ধরনের কৌশল দেখিয়েছে বিয়ার গ্রিলস। এরই মধ্যে ২০০৯ সালের জুনে মাত্র ৩৫ বছর বয়সে সর্বকনিষ্ঠ স্কাউট প্রধান হিসেবে নিযুক্ত হন “বিয়ার গ্রিলস“।
২০১২ সালে ডিসকভারি চ্যানেল ও বিয়ার গ্রিলসের সাথে চুক্তি সংক্রান্ত ইসু নিয়ে ঝামেলা হয়।ফলে ডিসকভারি চ্যানেল ম্যান ভার্সেস ওয়াইল্ড অনুষ্ঠানটির নির্মান বন্ধ করে দেয়। পরবর্তীতে বিয়ার আবার ডিসকাভারির সাথে “ম্যান ভার্সেস ওয়াইল্ড”এর কাজ শুরু করেন এবং এখন পর্যন্ত চলছে।
অনেক দর্শকেরই একটি প্রশ্ন থাকে যে অনুষ্ঠানে দেখানো এই কাজগুলো কি বিয়ার গ্রিলস সত্যিই করে বা বিয়ার কি সত্যিই এই অখাদ্য গুলো খায়? অনেক সমালোচকের বক্তব্য যে বিয়ার নিজে এই কাজ গুলো করে না। তবে সত্য এই যে অনুষ্ঠানে দেখানো কাজগুলো সত্যই বিয়ার নিজে করে। তবে কখনো কখনো দলের সঙ্গীরা সাহায্য করে বিয়ার গ্রিলসকে।
অন্যদিকে অনুষ্ঠানে দেখানো অভিযানগুলোর কোনো কোনোটি শুটিং করতে সাত থেকে আট দিন সময় লেগে যায়। কিন্তু অনুষ্ঠানে দেখানো হয় মাত্র দুই একদিনে অভিযান শেষ হয়ে যায়। এসময় কখনো কখনো বিয়ার গ্রিলস ও তার দল হোটেলে চলে যায় বা তাদের খাবার দেওয়া হয়। তবে বেঁচে থাকার কৌশল শেখাতে বিয়ার ঐ অখাদ্য গুলোও খেয়ে দেখিয়েছে।
জনপ্রিয় এই শো ম্যান ভার্সেস ওয়াইল্ডের ক্রেজ আরো কিছুটা বাড়িয়ে দিতে মাঝে মধ্যেই কিছু বিখ্যাত ব্যক্তি এবং জনপ্রিয় তারকাদের আগমন ঘটেছে। তারা বিয়ার গ্রিলসের সাথে তার অভিযানের সাথী হয়েছে। বিয়ার গ্রিলসের সাথে ঘুরে বেড়িয়েছে দূর্গম স্থানে। এমনই কিছু ব্যক্তির নাম নিচে দেয় হলো-
বনে জঙ্গলে ঘুরে বেড়ানো বিয়ার গ্রিলস সমাজসেবা মুলক অনেক কাজ করেছেন। এভারেস্ট জয়ের পর পরই তাকে নিয়ে
পুরো বিশ্বে সারা পরে যায় বিশেষ করে গ্রেট ব্রিটেনে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে…..
রয়েল লাইফ বোট ইনস্টিটিউটের তহবিল গঠনের জন্য ব্রিটিশ আইলের পাড়ি দিয়েছেন।
দূর্ঘটনায় পা হারানো বন্ধুর চিকিৎসার জন্য নগ্ন হয়ে নেমে গেছেন হিমশীতল টেমস নদীতে।
ইংল্যান্ডের একটি দাতব্য সংস্থার অর্থ তহবিলের জন্য অক্সিজেন মাস্ক খুলে বেলুনে চড়ে ২৫,০০০ পঁচিশ হাজার ফুট উচ্চতায় ডিনার করেছেন।
২০০৪ সালে, মানব সেবায় অবদান রাখার জন্য সম্মানসূচক পদ লেফটেন্যান্ট কমান্ডারে পদোন্নতি দেয়া হয় গ্রিলসকে।
চলুন এবার আপনাদেরকে আরো একটু অবাক করে দেই। আপনারা কি জানেন ? লেখক হিসেবেও বিয়ার গ্রিলস বেশ বিখ্যাত। বিয়ার তার অভিযানের অভিজ্ঞতা বর্ননা করে অনেকগুলো বই লিখেছেন।
বিয়ারের লেখা প্রথম বইয়ের নাম “ফেসিং আপ”। “ফেসিং আপ” বইটি যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে বেশি বিক্রিত বইয়ের তালিকায় স্থান করে নেয়। যুক্তরাষ্ট্রে এই বই টি প্রকাশিত হয় “দ্য কিড হু ক্লাইম্বড এভারেস্ট” নামে।
বিয়ারের লেখা দ্বিতীয় বইটিও এভারেস্টে তার অভিযান এবং অভিজ্ঞতা নিয়ে রচিত। বইটির নাম “ফেসিং দ্য ফ্রোজেন অশেন“।
এই বইটি উইলিয়াম হিল স্পোর্টস বুক অফ দ্য ইয়ার পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয় ২০০৪ সালে।
️বিয়ার গ্রিলসের লেখা তৃতীয় বই হলো “বর্ন সারভাইভর: বিয়ার গ্রিলস“। এই বইটিতে বিয়ার পৃথিবীর বেশ কিছু প্রতিকূল পরিবেশে তার টিকে থাকার অভিজ্ঞতা বর্ননা করেছেন।
“বর্ন সারভাইভর: বিয়ার গ্রিলস” বইটি বেস্ট সেলার বই হিসেবে সানডে টাইমসে টপ টেন এ স্থান পায়।
২০১১ সালে বিয়ার গ্রিলস “মাড, সোয়েট অ্যান্ড টিয়ারস: দ্য অটোবায়োগ্রাফি” নামে তার আত্মজীবনী প্রকাশ করেন।
শিশু-কিশোরদের জন্য তিনি বেশ কয়েকটি বই লিখেছেন।এই বইগুলোতে তিনি দুর্গম স্থানে টিকে থাকার কৌশল বর্ননা করেছেন।
বিয়ার গ্রিলস সম্পর্কে আরো কিছু তথ্য –
বিয়ার গ্রিলসের
জাতীয়তা – ইংল্যান্ড
নাগরিকত্ব- যুক্তরাষ্ট্র
ধর্ম- খ্রিষ্টিয়।
উচ্চতা -৬ ফুট
বার্ষিক সম্পত্তি -$ ১০ মিলিয়ন
পেশা- টেলিভিশন উপস্থাপক, অভিযাত্রি ও লেখক।
যদি কখনো কেনো দুর্গম পরিবেশে আটকে যান তাহলে ম্যান ভার্সেস ওয়াইল্ড খ্যাত বিয়ার গ্রিলসের শেখানো কৌশলগুলো মনে রাখবেন কিন্তু। দুর্গম ও প্রতিকূল পরিবেশে আটকে গেলে সেখান থেকে যেনো বেঁচে ফিরে আসতে পারেন এর জন্যই বিয়ার গ্রিলস এমন ঝুঁকি নিয়ে কৌশল গুলো শেখায়।
তথ্যসূত্রঃ উইকিপিডিয়া, ইউটিউব এবং wirally.com
ছবিঃ সংগৃহীত
মন্তব্য লিখুন