ইসলামে এমন একটি বিষয়ও খুঁজে পাওয়া যাবে না, যা ব্যক্তি বা জাতির জন্য ক্ষতিকর ও ভয়াবহ৷ কেননা এই পৃথিবী বুকে একমাত্র ইসলাম নিয়ে এসেছে প্রকৃত সভ্যতার সোপান। সুতরাং অশ্লীলতা বা পর্নোগ্রাফি ব্যাপারে কঠোর ভাবে ইসলামে নিষেধ করা হয়েছে এ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু শয়তানের প্ররোচণা ও কুমন্ত্রণায় মানুষ বরাবরই ভুল ও পাপ কাছে লিপ্ত হয়ে পরে। বর্তমানে তেমনি একটি ভয়ংকর পাপ, অশ্লীলতা ও আসক্তির নাম পর্নোগ্রাফি।
তাই এ বিষয়ে আমাদের সকলের সতর্কতা ও সচেতনতা মূলক আলোচনা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি নৈতিক দায়িত্বও বটে। তাই আসুন আজ বিজ্ঞান ও ইসলামি শরিয়তের আলোকে অশ্লীলতা বা পর্নোগ্রাফি এর ভয়াবহতা এবং এ থেকে মুক্তির উপায় নিয়ে সংক্ষিপ্ত কিছু আলোচনা করা যাক। চলুন তবে শুরু করি-
অশ্লীলতা বা পর্নোগ্রাফি ব্যাপারে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি:
আল্লাহ্ তা’আলা অশ্লীলতা সম্পর্কে কুরআনে কারীমে বলেন-
“আপনি বলে দিন,আমার পালনকর্তা হারাম করেছেন সকল প্রকার অশ্লীল বিষয়সমূহ যা প্রকাশ পায় এবং যা গোপন থাকে…।” [আল-আ’রাফঃ ৩৩]
“যারা পছন্দ করে যে, মুমিনদের মধ্যে অশ্লীলতা প্রসার লাভ করুক,তাদের জন্যে দুনিয়া ও পরকালে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি;আর আল্লাহ জানেন,তোমরা জানো না।” [আন-নূর:১৯]
আল্লাহ আরো বলেন,”আর তোমরা যিনার (অবৈধ যৌনকর্মের) কাছেও যেয়ো না, নিশ্চয় এটা অশ্লীল কাজ এবং নিকৃষ্ট পথ।”[বনি ইসরাইলঃ৩২]
“আর যিনা-ব্যভিচারের কাছেও যেও না, তা হচ্ছে” তা’আলা ব্যভিচার ও চতুষ্পর্শ্বের সমস্ত দুষ্কার্য হতে আমাদের চরমভাবে নিষেধ করেছেন।
শরীয়তে ব্যভিচারকে কাবীরা বা কঠিন পাপ বলে গণ্য করা হয়েছে। এটা অত্যন্ত অশ্লীল ও নিকৃষ্ট আচরণ। মুসনাদে আহমাদে রয়েছে-
“একজন যুবক রাসূলুল্লাহর (সা.) কাছে ব্যভিচারের অনুমতি প্রার্থনা করে।
জনগণ প্রতিবাদ করে বলে, “চুপ কর, কি বলছো ?”
রাসূলুল্লাহ (সা.) তাকে কাছে ডেকে নিয়ে বলেন, “বসে যাও।”
সে বসে গেলে তিনি তাকে বলেন, “তুমি এই কাজ কি তোমার মায়ের জন্যে পছন্দ কর ?”
উত্তরে সে বলে, “হে আল্লাহর রাসূল (সা.)! আল্লাহ আমাকে আপনার উপর উৎসর্গ করুন! আল্লাহর কসম! আমি কখনো এটা পছন্দ করি না।”
তখন তিনি তাকে বললেন, “তাহলে অন্য কেউ এটাকে কি করে পছন্দ করতে পারে?”
এরপর তিনি তাকে বললেন, “আচ্ছা, এই কাজটি তুমি তোমার মেয়ের জন্যে পছন্দ কর কি ?”
লোকটি চরমভাবে এটাও অস্বীকার করলো। তিনি বললেন, “ঠিক এরূপই অন্য কেউই এটা তার মেয়ের জন্যে পছন্দ করে না। ”
তারপর তিনি বললেন, “তুমি তোমার বোনের জন্যে এটা পছন্দ করবে কি?”
অনুরূপভাবে সে এটাকেও অস্বীকার করলো।
রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, “এইরূপ অন্যেরাও তাদের বোনদের জন্যে এটাকে অপছন্দ করবে।”
অতঃপর তিনি বললেন, “কেউ তোমার ফুফুর সাথে এই কাজ করুক এটা তুমি পছন্দ কর কি?”
সে এটাকেও কঠিনভাবে অস্বীকার করলো।
তিনি বললেন, “অনুরূপ ভাবে অন্যেরাও এটা পছন্দ করবে না।”
এরপর তিনি বলেন, “তোমার খালার জন্যে এ কাজ তুমি পছন্দ কর কি?”
উত্তরে সে বলে, “কখনই নয়।”
তিনি বললেন, “এইরূপ সবাই এটা অপছন্দ করে।”
অতঃপর রাসূল (সা.) স্বীয় হস্ত মুবারক তার মস্তকের উপর স্থাপন করে দুআ করলেন, “হে আল্লাহ! আপনি এর পাপ মার্জনা করুন! এর অন্তর পবিত্র করে দিন এবং একে অপবিত্রতা হতে বাঁচিয়ে নিন! ”
অতঃপর তার অবস্থা এমন হলো যে, সে কোন মহিলার দিকে দৃষ্টিপাতও করতো না। ইবনু আবিদ দুনিয়া (রা.) বর্ণনা করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন- “শিরকের পরে ব্যভিচার হতে বড় পাপ আর কিছুই নেই যে, মানুষ তার শুক্র এমন গর্ভাশয়ে নিক্ষেপ করবে যা তার জন্যে বৈধ নয়।” [তাফসীরে ইবনে কাসীর]
পবিত্র কোরআনে আরও বলা হয়েছে-
“হে মুমিনগণ, শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না, আর যে শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করবে, তখন সে (শয়তান) নির্লজ্জতার ও মন্দ কাজের আদেশ করবে।” [সূরা আন-নূরঃ২১]
“মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন। ঈমানদার নারীদেরকে বলুন,তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে।” [সূরা আন-নূর: ৩০-৩১]
“দৃষ্টি সংযত করার হুকুম দেয়া হয়নি বরং কোন কোন দৃষ্টি সংযত করতে বলা হয়েছে৷ অন্য কথায় বলা যায়, আল্লাহর উদ্দেশ্য এ নয় যে, কোন জিনিসই পূর্ণ দৃষ্টিতে দেখা উচিত নয় বরং তিনি কেবল মাত্র একটি বিশেষ গন্ডীর মধ্যে দৃষ্টির ওপর এ বিধি-নিষেধ যে জিনিসের ওপর আরোপ করা হয়েছে সেটি হচ্ছে, পুরুষদের মহিলাদরকে দেখা অথবা অন্যদের লজ্জাস্থানে দৃষ্টি দেয়া কিংবা অশ্লীল দৃশ্যের দিকে তাকিয়ে থাকা।” [তাফহীমুল কুরআন]
আল্লাহর কিতাবের এ হুকুমটির যে ব্যাখ্যা হাদীস করেছে তার বিস্তারিত বিবরণ নিচে দেয়া হলঃ
“নিজের স্ত্রী বা মুহাররাম নারীদের ছাড়া কাউকে নজর ভরে দেখা মানুষের জন্য জায়েয নয় ৷ একবার হঠাৎ নজর পড়ে গেলে ক্ষমাযোগ্য৷ কিন্তু প্রথম দৃষ্টিতে আকর্ষণীয় মনে হলে সেখানে আবার দৃষ্টিপাত করা ক্ষমারযোগ্য নয়৷
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ ধরনের দেখাকে চোখের যিনা বলেছেন ৷
তিনি বলেছেন-
“মানুষ তার সমগ্র ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে যিনা করে৷ দেখা হচ্ছে চোখের যিনা, ফুসলানো কন্ঠের যিনা, তৃপ্তির সাথে কথা শোনা কানের যিনা, হাত লাগানো ও অবৈধ উদ্দেশ্য নিয়া চলা হাত ও পায়ের যিনা ৷ ব্যভিচারের এ যাবতীয় ভূমিকা যখন পুরোপুরি পালিত হয় তখন লজ্জাস্থানগুলো তাকে পূর্ণতা দান করে অথবা পূর্ণতা দান থেকে বিরত থাকে।”[বুখারী, মুসলিম ও আবু দাউদ]
হযরত বুরাইদাহ বর্ণনা করেছেন-
“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত আলীকে (রা) বলেন, …’হে আলী! এক নজরের পর দ্বিতীয় নজর দিয়ো না ৷ প্রথম নজর তো ক্ষমাপ্রাপ্ত কিন্তু দ্বিতীয় নজরের ক্ষমা নেই ৷” [আহমাদ,তিরমিযী, আবু দাউদ]
হযরত জারীর ইবনে আবদুল্লাহ বাজালী (রা.) বলেন-
“আমি নবী (সা.) কে জিজ্ঞেস করলাম, হঠাৎ চোখ পড়ে গেলে কি করবো? বললেন, চোখ ফিরিয়ে নাও অথবা নামিয়ে নাও৷”[মুসলিম, আহমাদ, তিরমিযী, আবু দাউদ ]
আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) রেওয়ায়াত করেছেন, নবী (সা.) আল্লাহর উক্তি বর্ণনা করেছেন-
“দৃষ্টি হচ্ছে ইবলীসের বিষাক্ত তীরগুলোর মধ্য থেকে একটি তীর, যে ব্যক্তি আমাকে ভয় করে তা ত্যাগ করবে আমি তার বদলে তাকে এমন ঈমান দান করবো যার মিষ্টি সে নিজের হৃদয়ে অনুভব করবে।” [তাবারানী]
আবু উমামাহ (রা.) রেওয়ায়াত করেছেন, নবী (সা) বলেন-
“যে মুসলমানের দৃষ্টি কোন মেয়ের সৌন্দর্যের ওপর পড়ে এবং এ দৃষ্টি সরিয়ে নেয়, এ অবস্থায় আল্লাহ তার ইবাদাতে বিশেষ স্বাদ সৃষ্টি করে দেন।” [মুসনাদে আহমাদ]
ইমাম জা’ফর সাদেক তাঁর পিতা ইমাম মুহাম্মাদ বাকের থেকে এবং তিনি হযরত জাবের ইবনে আবদুল্লাহ আনসারীর থেকে রেওয়ায়াত করেছেন-
“বিদায় হজ্জের সময় নবী (সা.) এর চাচাত ভাই ফযল ইবনে আব্বাস (তিনি সে সময় ছিলেন একজন উঠতি তরুণ) মাশ্আরে হারাম থেকে ফেরার পথে নবী করীমের (সা.) সাথে তাঁর উটের পিঠে বসেছিলেন৷ পথে মেয়েরা যাচ্ছিল৷ ফযল তাদেরকে দেখতে লাগলেন৷ নবী (সা.) তার মুখের ওপর হাত রাখলেন এবং তাকে অন্যদিকে ফিরিয়ে দিলেন৷” [আবু দাউদ]
এ বিদায় হজ্জেরই আর একটি ঘটনা-
“খাস’আম গোত্রের একজন মহিলা পথে রসূলুল্লাহক (সা.) থামিয়ে দিয়ে হজ্জ সম্পর্কে একটি বিধান জিজ্ঞেস করছিলেন৷ ফযল ইবনে আব্বাস তার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলেন৷ রাসূল (সা.) তার মুখ ধরে অন্য দিকে ফিরিয়ে দিলেন৷”[বুখারী, তিরমিযী, আবু দাউদ]
আরও বিস্তারিত দেখুন- তাফসীরে তাফহীমুল কুরআনে।
অশ্লীলতা বা পর্নোগ্রাফি দেখলে যেসব ক্ষতি হয়ঃ
১. অতিরিক্ত পর্ন নেশা ড্রাগের চেয়েও মারাত্মক। পর্ন ড্রাগ, মদ বা সিগারেটের মতোই আসক্তি তৈরি করে। পর্ন দেখলে মস্তিষ্কে একটা ‘ফিল গুড’ রাসায়নিক তৈরি হয়। এর নাম ডোপামিন। একটানা পর্ন দেখলে মস্তিষ্কে ডোপামিনের পরিমাণ বেড়ে যায়। তখন সামান্য ডোপামিনের ক্ষরণে উত্তেজনা তৈরি হয় না। আরও বেশি ডোপামিনের জন্য মস্তিষ্ক আরও বেশি পর্নের রসদ খোঁজে এবং আসক্তি বাড়িয়ে তোলে।
২. অতিরিক্ত পর্নের আসক্তি সম্পর্কের ক্ষতি করে। যত বেশি পর্ন দেখবেন, ততই আপনি একটা অলীক ফ্যান্টাসির জগতে চলে যাবেন। এর ফলে বাস্তবের সম্পর্কগুলো আর আপনাকে সুখ দিতে পারবে না, যা সম্পর্কের অবনতির অন্যতম প্রধান কারণ হয়ে ওঠে।
৩. অতিরিক্ত পর্ন মানসিক রোগের জন্ম দেয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে পর্ন দেখা হয় একা, সমাজের চোখ এড়িয়ে। এর ফলে ধীরে ধীরে একটা অপরাধ বোধ জন্ম নেয়। যা থেকে ভবিষ্যতে মানসিক রোগ হতে পারে।
আরও পড়ুনঃ ধর্ষণ বিস্তারে দিশেহারা জাতিঃ সমাধান কি? মিজানুর রহমান আজহারি
৪. অতিরিক্ত পর্ন আপনার মনে ভাবনার সাম্যতা নষ্ট করে দেয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে পর্ন তারকারা মেক আপ, ফটোশপ এবং কসমেটিক সার্জারির সাহায্য নেন। বেশি পর্ন দেখলে আপনি মানসিকভাবে বাইরের মানুষদের মধ্যে সেই রকম সব খুঁজে পেতে চেষ্টা করে।
৫. অতিরিক্ত পর্ন আপনার স্বাভাবিক যৌনজীবন ক্ষতিগ্রস্ত করে তোলে। অতিরিক্ত পর্ন আপনার সঙ্গীর প্রতি আসক্তি কমিয়ে দেয়। ফলে নষ্ট হয় স্বাভাবিক যৌনজীবন।
৬. পর্ন দেখা লোকজনের ইরেক্টাইল ডিসফাংশান হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। অতিরিক্ত পর্ন মস্তিষ্কে রাসায়নিক ভারসাম্য নষ্ট করে এই রোগের সৃষ্টি করে। ফলে আপনার মস্তিষ্কের উর্বরতা মারাত্মক ভাবে হ্রাস পায়।
৭. পর্ন নারী পাচারের প্রবণতা বাড়ায়। পর্ন ইন্ডাস্ট্রিতে যারা যুক্ত, তাদের অনেকে স্বেচ্ছায় এই পেশা বেছে নিলেও নতুন মুখের চাহিদা এখানে প্রবল। চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে যোগান বাড়াতে গিয়ে বাড়ে নারী পাচারের সংখ্যা।
৮. পর্ন মানুষকে বদমেজাজি ও খিটখিটে করে তোলে। দেখা গেছে, একেবারে সাদামাটা পর্নও অতিরিক্ত দেখলে তা দর্শকের মানসিকতায় প্রভাব ফেলে। এছাড়াও মানুষকে অতি আক্রমণাত্মক, বদমেজাজি ও খিটখিটে করে তোলে।
পর্নোগ্রাফি আসক্তি থেকে মুক্তির উপায়ঃ
আসুন ইসলামের আলোকে জানা যাক কিভাবে আমরা এই ভয়ংকর অশ্লীলতা বা পর্নোগ্রাফি আসক্তি থেকে মুক্তি পেতে পারি৷
মহান আল্লাহ তায়া’লা আরো বলেন-
“আর যে বিষয়ে তোমার জ্ঞান নেই তার অনুসরণ করো না। নিশ্চয়ই কান, চোখ, হৃদয়- এদের প্রত্যেকটি সম্পর্কে কৈফিয়ত তলব করা হবে।” [আল-ইসরা: ৩৬]
সুতরাং আল্লাহ আমাদের হিসাব নিবেন। আমরা আমাদের কিশোর ও যৌবন কাল কোন কাজে ব্যয় করেছি সব কিছুর হিসাব দিতে হবে একদিন৷ মহান আল্লাহ সব কিছু দেখেন, শুনেন ও জানেন।
তাই চার দেয়ালের মধ্যে একা রুমে আপনি আর কেউ নেই। কেউ দেখছে না আপনাকে। ব্যস, অমনি চান্স পেয়ে আপনি চলে গেলেন পর্নসাইটে। ডেপ ডেপ করে গিলছেন সেই অসভ্য কুরুচিপূর্ণ দৃশ্য। কিন্তু আপনার এই ভাবনাটা ভুল। আপনাকে দুনিয়ার আর কেউ না দেখুক, কিন্তু আল্লাহ্ আপনাকে ঠিকই দেখছেন। আর আপনি কি না বেমালুম তার কথা ভুলে গেলেন। কত অকৃতজ্ঞ বান্দা আপনি, একবার কি ভেবেছেন? ঠিক সেই সময় যদি আপনার মৃত্যু চলে আসে আর স্ক্রীন চলতে থাকে, আর আপনার আপনজন যদি এসে আবিস্কার করে যে, আপনি কি না এমন যাকে সবাই ভদ্র ও সভ্য মনে করতো! সেই ভদ্র ও সভ্যের মুখোশের আড়ালে আপনি ছিলেন নিরেট ভণ্ড। আর আপনি এও ভুলে গেলেন যে কান, চোখ, ও অন্তর সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে, অর্থাৎ হিসাব নেওয়া হবে। পারবেন কি সেই হিসাব দিতে?
তবুও হতাশ হবেন না প্রিয় ভাই। মহান আল্লাহ তায়া’লা দয়া, মায়া ও ক্ষমা করায় সর্বশ্রেষ্ঠ ৷ তাই তো তিনি আপনাকে বারবার সুযোগ দিচ্ছেন তওবা করার৷ তওবা করুন প্রিয় ভাই, আল্লাহ্ মহা ক্ষমাশীল। বিশ্বাস করুন, আপনি আমি যদি আল্লাহর ভয়ে তওবা করে এই সব কুরুচিপূর্নতা ছেড়ে দেই। তবে আমরা মহান আল্লাহর সবচেয়ে প্রিয় বান্দা হতে পারব। আল্লাহ পবিত্র কোরআনে তওবায়ে নসুয়া কারী বান্দাকে সবচেয়ে প্রিয় বান্দা বলে নিজে ঘোষণা দিয়েছেন ।
মহান আল্লাহ তায়া’লা বলেন-
“হে মুমিনগণ ! তোমরা আল্লাহর কাছে তাওবা কর—বিশুদ্ধ তাওবা, সম্ভবত তোমাদের রব তোমাদের পাপসমূহ মোচন করে দেবেন এবং তোমাদেরকে প্রবেশ করবেন জান্নাতে, যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত। সেদিন আল্লাহ লাঞ্ছিত করবেন না নবীকে এবং তার সাথে যারা ঈমান এনেছে তাদেরকে। তাদের নূর তাদের সামনে ও ডানে ধাবিত হবে। তারা বলবে, ‘হে আমাদের রব! আমাদের জন্য আমাদের নূরকে পূর্ণতা দান করুন এবং আমাদেরকে ক্ষমা করুন, নিশ্চয় আপনি সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান।” [সূরা তাহরীমঃ০৮]
আর পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করুন প্রিয় ভাই। নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়া’লা আপনাকে হেফাজত করবেন।
মহান আল্লাহ তায়া’লা বলেন-
“নিশ্চয় সালাত সকল অশ্লীল ও খারাপ কাজ থেকে মানুষকে বিরত রাখে।” [সূরাহ আনকাবুত: ৪]
সুতরাং প্রিয় যুবক ভাইয়েরা আসুন নিজেদের পরিবর্তন করি আদর্শ ও সত্য ন্যায়নিষ্ঠ মানুষ হিসেবে। আর অশ্লীলতা বা পর্নোগ্রাফি কে আমরা চরম ধিক্কার ও ঘৃনা জানাই৷ একমাত্র মহান আল্লাহ তায়া’লাই সর্বশ্রেষ্ঠ হেফাজতকারী।
তথ্য সহায়তাঃ
- fightagainstd.org
- তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন
- তাফসীরে ইবনে কাসীর।
আমি খুব উপকৃত হলাম, আল্লাহ তাআলা যেন আমাকে হেফাজত করেন দুআ করবেন।
আপনি খুব সুন্দর করে এই বিষয় টা উল্লেখ করেছেন আল্লাহ আপনাকে জান্নাত দান করুক।
আলহামদুলিল্লাহ। প্রিয় ভাই আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ। প্রবন্ধটির মাধ্যমে মহান আল্লাহ তায়া’লা যেন আপনাকেও উত্তম প্রতিদান দেয়।
মহান আল্লাহ তায়া’লা কাছে আমরা শয়তানের সকল প্রকার কুমন্ত্রণা থেকে আশ্রয় কামনা করছি। আমিন।
Khubi valo laglo kotha gulo..amar akta jinis janar khubi issa pron dekha kon gunar bitor pore kobira naki..onno kisu
প্রিয় ভাই আমার, এ চোখ মহান আল্লাহর তায়া’লার দেওয়া মহামূল্যবান বিশেষ নিয়ামতের একটি । যে নিয়ামতের প্রশংসা করে কখনো শেষ করা সম্ভব নয়। একজন অন্ধ ব্যক্তি অনুভব করেন চোখের আলো কত বড় নিয়ামত। একটু সময় চক্ষু বন্ধ করে পথ চলার চেষ্টা করলে, তবেই এটা আমরা উপলব্ধি করতে পারব ৷ তাই আল্লাহর এই চোখ আমাদের কাছে মহামূল্যবান এক বিশেষ আমানত ও বটে ৷ মূলত শরীরের প্রত্যেকটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ আল্লাহর দেওয়া এক একটি আমানত ৷ তাই এর যথাযথ ব্যবহার করা আমাদের জন্য ওয়াজিব বা ফরজ । সুতরাং কোন ব্যক্তি যদি এই চোখ দিয়ে অশ্লীল হারাম বিষয় দেখতে থাকে তবে সে আল্লাহর হুকুমের অবাধ্য নেশায় আসক্ত হলো। তাই এটি একটি বড় ধরনের কবিরা গুনাহ ৷ শেষ বিচারের ময়দানে আমাদের প্রত্যেকটি অঙ্গ-প্রতঙ্গের হিসেবে নেওয়া হবে৷ আমরা তওবা করছি, আল্লাহ তায়া’লা আমাদের ক্ষমা করুন৷ আমিন।
আমি এই কাজের মধ্যে্ অত্যন্ত আসক্ত যা থেকে বের হয়ে আসতে পারতেছি না।দোয়া করবেন ভাই এবং বোনেরা আল্লাহ যেন আমাকে তৌফিক দেন এ কাজ থেকে বেরিয়ে আসতে।।
প্রিয় ভাই,গোপন পাপ সবসময় গোপন রাখবেন। আর একনিষ্ঠ চিত্তে আল্লাহর কাছে তওবাহ করবেন। তিনি মহা ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু।
সুবহানাল্লাল।পড়ে খুবই ভালো লাগল।