বাংলাদেশ একটি কৃষি প্রধান দেশ। বাংলাদেশর কৃষির অগ্রগতি হচ্ছে খুবই তাড়াতাড়ি। কৃষিকাজ আগে সনাতন পদ্ধতিতে চললেও এখন সেটা প্রযুক্তির কারনে আরও সহজ হয়ে উঠছে। দেশেই তৈরি করা হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের বিদেশি ফল ও শাক সবজি। তার মধ্য অল্প কয়েকদিনের মধ্যে খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে ড্রাগন ফল ।
ড্রাগন ফলের উৎপাদন বেশি হয় চিনে। আমাদের দেশের অনেক মানুষ এই ফল চাষ করতে আগ্রহী হয়ে উঠছে। চলুন প্রথমে জেনে নি এই ড্রাগন ফলের উপকারিতা ।
আর্টিকেলে যা থাকছেঃ
১) বয়সের ছাপ সারাতে কাজ করে। অনেকক্ষেত্রে দেখা যায় বয়স কম কিন্তু তার চেহারার কিছু এমন পরিবর্তন হয় তাকে অনেক বয়সের দেখা যায়। এক্ষেত্রে ড্রাগন ফল খাওয়া খুবই উপকারী।
২) ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে পারে এই ড্রাগন ফল।
৩) হজম শক্তি বাড়াতে কাজ করে এটি।এই ফলে থাকে প্রচুর ফাইবার এবং ভিটামিন “সি”।যা আমাদের দ্রুত হজমে সাহাজ্য করে।
৪) রক্তশূন্যতা হলে এটি খেলে খুবই উপকার হয়। ড্রাগন ফল হিমগ্লোবিন বৃদ্ধিতে অনেক সাহাজ্য করে। এ ছাড়া অনেক উপকার করে যেমন বহুমূত্র, হৃদপিন্ড সবল ও কোষ্টকাঠিন্যর মতো অনেক রোগ সারাতে পারে।
এবার জেনে নি ড্রাগন ফলের কিছু প্রকার ভেদ সম্পর্কে। ড্রাগন ফলের ও কিছু প্রকার ভেদ আছে। এই প্রকারভেদ করা হয় ফলের ভেতর ও বাইরের কালারের ওপর। তিনটা কালার সচারচর দেখা যায়।
১) লাল
২) হলুদ
৩) সাদা
এই গুলার মধ্য সবচেয়ে মিস্টি বেশি হলো লাল রঙের ড্রাগন ফল। তবে বাংলাদেশে লাল ও সাদা রঙের পাওয়া গেলেও হলুদ রঙের টা খুবই কম দেখা যায়। এখন প্রশ্ন থেকেই যায় তাহলে কিভাবে চিনবো কোনটা কোন প্রকারের।
যেকোনো প্রকারের ড্রাগন ফল সাধারনত গাছ দেখে বোঝা যায় না করন সব প্রকারের গাছ একই রকম দেখতে। এক্ষেত্রে আমরা যেখান থেকে চারা নিবো তাদের কাছ থেকে ভালো করে বুঝে শুনে নিতে হবে কোনটা কেন প্রকারের গাছ।
আমরা গাছ লাগানোর ক্ষেত্রে প্রথমে গুরুত্ব দিবো কোন গাছ থেকে চারা নিবো। অর্থাৎ সবচেয়ে সবল এবং কোনো রোগে আক্রান্ত না এমন গাছ বাছাই করতে হবে প্রথমে। সুস্থ সবল গাছ বাছাই করার পর সেই গাছ থেকে ডাল কেটে নিবো।
ডাল কেটে নেওয়ার পর সেই ডাল গুলা পরিস্কার পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। তারপর ওই ডাল গুলাতে শিকড় বের করার জন্য মাটি ও বালি মিশ্রিত পাত্রে হালকা করে পুতে দিতে হবে।
আর শিকড় না আসা পর্যন্ত নিয়মিত পানি দিতে হবে। এবার ওই ডাল গুলাতে শিকড় চলে আসলে স্থায়ীভাবে লাগানোর ব্যবস্থা করতে হবে।
সেক্ষত্রে আমাদের তিন ফিট বাই দুই ফিট গর্ত করতে হবে। সেই গড়র্তের মধ্য ২০-২৫ কেজি পচা গবর আর মাটি দিতে হবে। তবে এই গর্তের মধ্য আগেই ৮ ফিট লম্বা পিলার পুতে দিতে হবে।
যাতে ড্রাগন গাছ গুলা বড় হলে শক্ত অবলম্বন পায়। এবার প্রতিটা গর্তে ৩-৪ টি করে ওই শেকড় যুক্ত গাছ লাগতে হবে। এর পর ওই পিলারের সাথে আলতো করে বেধে দিতে হবে যাতে ওই গাছগুলা শেকড় দিয়ে আকড়ে ধরে বেড়ে উঠতে পারে।
ড্রাগন গাছ বড় হওয়ার পর যদি মাতৃ গাছ গুলাতে প্রচুর ডাল ছাড়ে তাহলে সতেজ ও স্বস্থ্যবান ডাল রেখে বাকি ডাল কেটে ফেলতে হবে। তাতে গাছ আরও তাড়াতাড়ি বৃদ্ধি পাবে।
এবার মাটিতে ৫০ গ্রাম পটাশ ও টি এস পি সার দিতে হবে। সম্ভাব হলে কোকো ডাস ব্যবহার করা যেতে পারে (নারিকেল এর খোষার পাউডার)।সবসময় একটা জিনিস খেয়াল করতে হবে মাটি যেনো ভিজে বা কাদা না থাকে অর্থাৎ অতিরিক্ত পানি ব্যবহার করা যাবে না।
পরাগায়ন যে কোনো গাছের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।ড্রাগন ফুল দেখতে প্রায় নাইট কুইন এর মতো দেখতে। যেহেতু এই ফুলগুলা রাতে ফোটে তাই পরাগায়নে অনেক অসুবিধা হয় কারন রাতে পোকামাকড় খুবই কম বের হয়।
এই সমস্যার কারনে ফলনে প্রভাব পড়ে। এর থেকে মুক্ত হতে কৃত্তিম ভাবে পরাগায়ন করানো হয়। ড্রাগন ফুলের মধ্যই স্ত্রী ও পুরুষ ফুল হয়।পুরুষ ফুলের মধ্যই ছোটো করে স্ত্রী ফুল থাকে। এই স্ত্রী ফুলটা পুরুষ ফুলটা থেকে একটু উচু থাকে।
যার ফলে বাতাসে পরাগায়ন হয় না। এজন্যই পোকামাকড় দিয়েই পরাগায়ন হয়। যেহেতু রাতে ফুল ফোটে তাই বিকল্প ভাবে পরাগায়ন করাতে হবে। এক্ষেত্রে ক্রস পরাগায়ন করলে ফল বড় হয় এবং ফল রোগ মুক্ত হয়।
ক্রস পরাগায়ন হলো একই গাছ বা ভিন্ন ভিন্ন গাছের ফুলের পরাগরেনু একটা পাত্রে নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন স্ত্রী ফুলে পরাগায়ন ঘটানো । এক্ষেত্রে ভিন্ন গাছের ফুল ধরে একটি পাত্রে তুলির মাধ্যমে সংগ্রহ করে নিয়ে মিশিয়ে নিতে হবে।
ড্রাগনের ফলন আরও বাড়াতে নতুন একটা পদ্ধতি চালু হয়চে সেটা হলো রাতে LED লাইট জ্বালানো। রাতে ৩-৪ ঘন্টা জ্বালিয়ে রাখার কারন হলো দিনের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি করা। এর ফলে স্বাভাবিকের তুলনায় ফুল তারাতাড়ি ও বেশি ফোটে।
চারা কোথায় পাওয়া যাবে