বর্তমান সময়ে চাকরী নামক সোনার হরিনের পেছনে আমরা কে না দৌড়াই! কিন্ত এ দৌড়ে আপনি কতটুকু এগিয়ে থাকবেন তা নির্ভর করে আপনার প্রস্ততির ওপর। চাকরীর বাজার -এ এগিয়ে থাকার কিছু বিশেষ উপায় নিয়ে আমাদের আজকের আয়োজন। চাকরীর বাজার -এ সফল হতে অনুসরণ করতে পারেন এই ১৪টি টিপস।
আর্টিকেলে যা থাকছেঃ
আপনার জীবনের লক্ষ্য নির্ধারণ করুন। কারন লক্ষ্যহীন কোন গন্তব্য হতে পারেনা। কাজেই নিজের লক্ষ্যে পৌছাতে আপনি নিজেকে গোছানোর চেষ্টা করুন। আজ থেকেই কাজ শুরু করে দিন। যদি লক্ষ্য রাখেন আকাশ সমান তবে আপনি পাহাড়কে জয় করতে পারবেন। নিজের উপর আস্থাশীল হন।লক্ষ্য অনুযায়ী পরিশ্রমই আপনাকে চুড়ান্ত সাফল্য এনে দিতে পারে।
আপনার ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিন। অদম্য ইচ্ছাশক্তিই আপনাকে সাফল্যের শিখরে নিয়ে যাবে। আত্মশক্তির দ্বারা আপনি যেকোনো বাধাই পেরোতে পারবেন।
আজকেই একটি বিষয়ভিত্তিক রুটিন তৈরি করে নিন। রুটিন অনুযায়ী পড়ালেখা শুরু করুন। রুটিন তৈরি করার ক্ষেত্রে সচেতন হোন। নিজের সাধ্যানুযায়ী আপনি যে সময় দিতে পারবেন সে অনুযায়ী রুটিন তৈরি করুন। এক্ষেত্রে পছন্দের বিষয়সমূহকে অগ্রাধিকার দিন। যে বিষয়গুলোতে আপনি দূর্বল কিংবা যে বিষয়গুলো আপনার কাছে একঘেয়ে মনে হয় সেগুলোর জন্য আলাদা সময় নির্ধারণ করুন। মনযোগ ধরে রাখতে আপনি পড়ার মাঝে কিছুসময় গ্যাপ দিন। এতে আপনি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অনেক বেশি পড়তে পারবেন। রুটিনের ব্যত্যয় ঘটলে হতাশ হবেন না।সেখান থেকে পুনরায় শুরু করুন।
বর্তমানে ইংরেজি আন্তর্জাতিক ভাষায় পরিনত হয়েছে। সরকারি, বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান, আন্তর্জাতিক যোগাযোগ রক্ষার ক্ষেত্রে ইংরেজির গুরুত্ব অপরিসীম। কাজেই ইংরেজি শিক্ষার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিন।এক্ষেত্রে আপনি স্পোকেন ও রাইটিং এ ভালো করার জন্য দু একটি কোর্স সম্পন্ন করুন। সচরাচর ইংলিশে কথা বলার চেস্টা করুন। Grammatical ভুল হলে থেমে যাবেন না,চালিয়ে যান। মনে রাখবেন spoken English এ ভালো হলে যেকোন চাকরীর ভাইভায় অনেকক্ষানি এগিয়ে থাকবেন।যা আপনাকে চাকরি নিশ্চিত করতে সহায়তা করবে।
আমরা সবাইই কমবেশি গনিতকে ভয় পাই।এই ভয় পাওয়ার মানসিকতা আমাদেরকে গনিত থেকে দূরে রাখে। যেকারনে অধিকাংশ মানুষ চাকরীর পরীক্ষায় গনিতের উত্তর করেন না কিংবা গনিতে অকৃতকার্য হন। গনিতভীতি দূর করতে প্রতিদিন অন্তত ১০ টি করে অংক সমাধান করার চেস্টা করুন। একসাথে বেশি অংক করতে যাবেন না, এতে একঘেয়েমি চলে আসতে পারে।প্রথমেই শর্টকাট মেথড না শিখে ,প্রথমে বিস্তারিত শিখুন। তাহলে শর্টকাট মেথড অধিকসময় মনে রাখতে পারবেব।
বাজারে অহরহ বইয়ের ভীড়ে আমরা অনেক সময় বই নির্বাচনে ভুল করি। এক্ষেত্রে আপনি কোনো অভিজ্ঞ ব্যাক্তির পরামর্শ গ্রহন করুন।আপনি চাইলে মাধ্যমিক লেভেলের বইগুলো সমাধান করতে পারেন।এছাড়া ভালো বই নির্বাচনের ক্ষেত্রে কাস্টমার চয়েসকে গুরুত্ব দিতে পারেন।
সমসাময়িক বিষয়ে জ্ঞানার্জনের জন্য দৈনিক পত্রিকা পড়ার অভ্যাস গড়ুন।সবাদপত্র পাঠের মাধ্যমে আপনি সাম্প্রতিক বিষয়ে নিজেকে আপটুডেট রাখতে পারবেন যা চাকরীর পরীক্ষায় সাধারণ জ্ঞান অংশে কাজে দেবে।একইসাথে আপনি ভাইভাতেও ভালো করতে পারবেন।
আরও পড়ুনঃ Google সার্টিফিকেট অর্জন করুন ঘরে বসে- Coursera
পাবলিক কমিউনিকেশন বৃদ্ধি করুন। এক্ষেত্রে আপনি বিভিন্ন সভা,সমাবেশ, সেমিনার কিংবা কনভেনশন এ যোগদান করতে পারেন।যা আপনার কথা বলার দক্ষতা ও আপনার ব্যাক্তিত্ব বিকাশে ভূমিকা রাখবে।বিভিন্ন স্তরের মানুষের সাথে যোগাযোগের মাধ্যমে আপনি তাদের চিন্তাচেতনা,আচার আচরণ, ব্যাক্তিত্ব সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করতে পারবেন। যা চাকরীজীবনের বিভিন্ন ধাপে ডিসিশন নিতে আপনাকে সহায়তা করবে।
আপনার প্রস্ততি অনুযায়ী নিজেকে যাচাই করুন।নিজে নিজে পরীক্ষা দিন, এতে আপনি নিজের ভুলগুলো শুধরে নিতে পারবেন। এবং এতে আপনার নিজের প্রতি আস্থা বৃদ্ধি পাবে। এছাড়া আপনি অনলাইন এক্সামের মাধ্যমেও নিজেকে যাচাই করতে পারেন।
পরীক্ষার আগে সবকিছু রিভিশন দেয়ার চেস্টা করুন। বারবার পড়ার অভ্যাস গড়ুন। যা আপনার স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখবে। পরীক্ষার আগের রাতে নতুন কোন পড়া শুরু করবেন না। পরীক্ষার আগের দিন বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে পারেন। এতে আপনার মস্তিস্কে কম চাও অনুভূত হবে। যা পরীক্ষার হলে আপনার মানসিক চাপ ধরে রাখতে সহায়তা করবে।
সময়ানুবর্তী হোন। সময়ের কাজ সময়ে শেষ করুন। “কাল থেকে শুরু করবো” এমন মানসিকতা পরিহার করে “আজ এবং এখনই” করার মানসিকতা তৈরি করুন। তাহলেই আপনি অতিশীঘ্র আপনার চুড়ান্ত বিজয় অর্জন করতে পারবেন।
কথায় আছে “সঙ্গদোষে লোহা ভাসে”।কাজেই বন্ধু নির্বাচনের ক্ষেত্রে সচেতন হোন। যারা আপনাকে হতাশাগ্রস্ত করে তাদের সঙ্গ পরিত্যাগ করুন। বন্ধুদের সাথে যথাসম্ভব কম আড্ডা দেয়ার চেস্টা করুন। যে সকল কর্মকাণ্ড আপনার সময়কে নস্ট করবে সসকল ক্ষেত্রে “না” বলার অভ্যাস গড়ুন।চাকরীর প্রস্ততি নিতে আগ্রহী এমন মানুষের সাথে বন্ধুত্ব করুন।
ইন্টারনেটে অতিমাত্রায় আসক্ত থাকলে আজই তা ত্যাগ করুন।প্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া ফেসবুক, মেসেঞ্জার অফ রাখুন।অতিমাত্রায় ইন্টারনেট আসক্তি আপনার স্মৃতিশক্তিকে হ্রাস করে।কাজেই জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ইন্টারনেট ব্যাবহার করবেন না।
নিজ নিজ ধর্মের প্রতি যত্নবান হোন। নিয়মিত প্রার্থনা করুন। সৃস্টিকর্তার প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করুন। নিজ নিজ ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলুন। এগুলো আপনার মনকে সতেজ রাখতে এবং আপনাকে নমনীয় হতে সাহায্য করবে।
“যে ১৪ টি বিষয় আপনাকে চাকরীর বাজার -এ এগিয়ে রাখবে”
সমাপ্ত
মন্তব্য লিখুন