একজন তৃষ্ণার্ত ব্যাক্তির কাছে একগ্লাস সুপেয় পানি অবশ্যই মরুভূমির তপ্ত বালির গায়ে প্রথম ফোঁটা বৃষ্টির মত । যেখানে পানির অপর নাম জীবন সেখানে এসব উপমা আর তেমন কি ? পানির গুরুত্ব সেভাবে না অনুভব করলেও পানি ছাড়া একদিনও অতিক্রম করা সম্ভব নয় । তবে কেবল তৃষ্ণা মেটাতে নয় , দেহকে ফিট রাখতেও পানি ঔষুধির মত কাজ করতে পারে । পানিকে পান করা যায় ভিন্ন ভিন্ন ভাবে । পানির সাথে আলাদা কিছু উপকরন মিলিয়ে পানিকে পানের উপযোগী করা হলে তাকে বলা হয় ডিটক্স ওয়াটার ।
পানিকে ভিন্ন ভাবে পরিবেশন করাই হল মূলত ডিটক্স । পানির সাথে বিভিন্ন ঔষুধি বা মশলা বা ফল জাতীয় উপাদান যেমন লেবু, আপেল, মৌরি, আদা, শশা, পুদিনা পাতা, কমলা, দারুচিনি, তেজপাতা, জিরা ইত্যাদি মিশিয়ে তৈরি করা হয় ডিটক্স ওয়াটার। ডিটক্স ওয়াটার মূলত দেহের টক্সিন বা বিষাক্ত পদার্থকে দেহ থেকে বের দ্রুত বের করে দেয় ।
১। আদা ও লেবু:
এই ডিটক্স তৈরি করতে ১ লিটার পানিতে ২ ইঞ্চি পরিমান আদা ও অর্ধেক লেবুর রস একত্রে কিছুক্ষন ফুটিয়ে নিতে হবে । তারপর ঠান্ডা করে সারাদিন ধরে এই পানি খাওয়া যায় তবে সকালে খালি পেটে খাওয়াই শ্রেয় ।
২। মৌরি ও জিরা:
পরিমান মত পানিতে ১ চা চামচ মৌরি এবং ১ চা চামচ জিরা সারারাত ভিজিতে রেখে এই ডিটক্স ওয়াটার তৈরি করা হয় । চাইলে এর সাথে লেবু বা আদাও যোগ করা যেতে পারে । এটিও সকালে পান করা বেশি উপকারী।
৩। শশা ও পুদিনা:
জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছে এই সুস্বাদু ডিটক্সটি। পুদিনা পাতার ফ্লেভারটি বেশ আলাদা এক ধরনের সতেজতা দেয় । পরিমান মত পানিতে কয়েকটি পুদিনা পাতা ও পাতলা করে কেটে নেয়া শশার স্লাইস কয়েক ঘন্টা ভিজিয়ে রেখে এ ডিটক্স ওয়াটার তৈরি করা হয় । দিনের যে কোন সময়েই এটি পান কয়া যায় ।
৪। আপেল ও দারুচিনি:
একটি পাত্রে কিছু পানি নিয়ে তাতে কয়েক টুকরো দারচিনি বা দারুচিনি গুড়া ও একটি স্লাইস করা আপেল একত্রে মিশিয়ে কিছুক্ষন রেখে এই ডিটক্স বানানো যায় । তাছাড়া এতে যে কোন ফল মেশানো যেতে পারে ।
যারা একটু স্বাস্থ্য সচেতন কিংবা যারা নিজেকে স্লিম ও ফিট রাখতে চান তারা নিশ্চই ডিটক্স নামের সাথে পরিচিত । এর দারুন সব উপকারী দিক রয়েছে, সেগুলো হলো-
১। অতিরক্ত পানি হিসেবে পান করার ফলে এই ডিটক্স শরীরের বিষাক্ত পদার্থকে শরীর থেকে বের করে দেয় ।
২। এটি অতিরিক্ত তেল চর্বিযুক্ত বা বেশি মিষ্টি বা লবনাক্ত খাদ্যের দিকের ঝোঁক কমায় ।
৩। দেহের মেটাবলিসম বাড়ায় ।
৪। দেহের ফ্যাট সেলগুলো নিষ্কাশন করে ফলে চর্বি দ্রুতই ঝরে যায় ।
৫। ভারী বা একটানা কাজ এবং ব্যায়ামের ফলে যে অবসাদ তৈরি হয় তা দূর করতে সাহায্য করে ।
৬। এছাড়া এটি ত্বকের সৌন্দর্য ও ধরে রাখে ।
আমাদের দেশের মানুষ যদিও ডিটক্স নামের সা্থে ততটা পরিচিত নয় তবুও প্রত্যেকের উচিত এ সম্পর্কে যথেষ্ট ধারনা নেয়া এবং রোজ অন্তত একগ্লাস করে ডিটক্স ওয়াটার পান করা ।
ছবিঃ সংগৃহীত
মন্তব্য লিখুন