বর্তমান যুগে মোবাইল ফোন ছাড়া একটি স্বাভাবিক দিন কল্পনা করা কষ্টসাধ্য। প্রথম জেনারেশনের পর এক এক করে বহু জেনারেশন পাড় হয়ে বাংলাদেশে এখন চতুর্থ জেনারেশনের মোবাইল প্রচলিত রয়েছে। নিকট ভবিষ্যতেই দেশে পঞ্চম জেনারেশনের অর্থ্যাৎ ৫জি মোবাইল আসতে চলেছে। চলুন জেনে নেওয়া যাক বর্তমান সময়ে মোবাইল ফোন কেনার আগে অবশ্যই লক্ষণীয় বিষয়সমূহ এবং বিবিধ।
এখন বেশ কয়েকটি অপারেটিং সিস্টেমের মোবাইল ফোন বাজারে পাওয়া যায়। এর মধ্যে জনপ্রিয় কিছু হলো এন্ড্রয়েড, উইন্ডোজ, ব্লাকবেরি এবং আইওএস। প্রথমেই নিশ্চিত হতে হবে আপনি কোন ধরণের অপারেটিং সিস্টেমের মোবাইল খুঁজছেন। যদি আপনি ল্যাং বিহীন অপ্টিমাইজ একটা অপারেটিং সিস্টেমের খোঁজ করেন, তাহলে অ্যাপলের আইওএস আপনার জন্য বেস্ট চয়েজ হতে পারে।
আপনি যদি অনেক বেশি কাস্টমাইজ সুবিধা সম্বলিত এবং সাশ্রয়ী দামের একটি ওএস খুঁজেন, তাহলে এন্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম আপনার জন্য সেরা পছন্দ। তুলনামূলক বাংলাদেশের বেশিরভাগ স্মার্টফোন ইউজাররা এন্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম বেশি ব্যবহার করে থাকে।
যেকোনো মোবাইল ফোন কেনার আগে কয়েকটি বিষয়ের দিকে বিশেষভাবে নজর রাখা উচিত-
১. ডিস্প্লে ও স্ক্রিন সাইজ
২. ব্যাটারি ক্যাপাসিটি
৩. রম
৪. র্যাম
৫. বিল্ড কোয়ালিটি ও ডিজাইন
৬. ক্যামেরা
৭. প্রসেসর
৮. সিকিউরিটি সিস্টেম
৯. অন্যান্য বিষয়াবলী
১০. ব্রান্ড ভ্যালু
মোটামোটি এই ১০ টি বিষয় দেখে মোবাইল ফোন বাজেট অনুসারে বাছাই করে তারপর কেনাই উত্তম। একেকজনের কাছে একেকটি বিষয় প্রায়োরিটি থাকে। প্রায়োরিটি অনুসারে বাছাই করে মোবাইল ফোন কেনা উচিত। চলুন, প্রত্যেকটি সেগমেন্ট সম্পর্কে একটু বিস্তারিত আলোচনা করা যাক।
আর্টিকেলে যা থাকছেঃ
স্মার্টফোনে যারা গেমিং করেন, মুভি দেখেন এবং ইউটিউব সহ অন্যান্য স্ট্রিমিং সাইটে লম্বা সময় স্ট্রিমিং করেন, তাদের অবশ্যই ভালো ডিস্প্লে প্রথম প্রায়োরিটি হওয়া উচিত। প্রচলিত মতানুসারে,বর্তমান সময়ে অ্যামোলেড প্যানেলের চেয়ে ভালো কিছু কন্টেন্ট ওয়াচিং এর জন্য হয়না। এছাড়া রয়েছে স্যামসাং এর সুপার অ্যামোলেড প্যানেল। তবে, অ্যাপলের নিজস্ব রেটিনা ডিস্প্লেটাও বেশ কালারফুল কন্টেন্ট ওয়াচিং এ প্রশান্তি দিবে।
এছাড়া মিড রেঞ্জ বাজেটের মোবাইলে HD, ফুল HD ডিস্প্লে অহরহ ব্যবহৃত হয়। স্ক্রিন রেজুলেশন ৭২০*১২৫০ পিক্সেল বা তার চেয়ে বেশি হলে হাই কোয়ালিটি ডিস্প্লের মজা নেওয়া সম্ভব। পিক্সেল ডেনসিটি ২৭০ পিপিআই বা তদুর্ধ্ব হলে সাধারণত ভালো মানের ডিস্প্লে বলা যায়।
ডিস্প্লেতে যে নচ থাকে, সেটাও অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়। সাধারণত ওয়াটারড্রপ নচ বা পাঞ্চ হোল হলে ডিস্প্লের সৌন্দর্যও বহুলাংশে বৃদ্ধি পায়।
যুগের সাথে তাল মিলিয়ে ব্যাটারিতে যথেষ্ট উন্নয়ন সাধন হয়েছে। ব্যাটারির ধারণক্ষমতা mAh এককে হিসাব করা হয়। এর মান যত বেশি হবে, ব্যাটারির ধারণক্ষমতা তত বেশি হবে এবং তত বেশি ব্যাক আপ পাবেন।
মোবাইল কোম্পানিগুলো বর্তমান সময়ে সাধারণত মিড রেঞ্জ সেগমেন্টে ৪০০০ এমএএইচ বা এর আশে পাশের ধারণক্ষমতার ব্যাটারি ব্যবহার করে থাকে। এসব ব্যাটারির মাধ্যমে গড়ে ৬-৮ ঘন্টা স্ক্রিন অন টাইম পাওয়া যায়। দিনে একবার চার্জ দিয়ে নরমাল ইউজ এবং দুইবার চার্জ দিয়ে হেভি ইউজ করতে পারবেন।
ব্যাটারি ক্যাপাসিটি কম হলেও ভালো ব্যাক আপ পাওয়া যায় যদি ইউজার লাইভ ওয়ালপেপার ব্যবহার না করে, ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপ্লিকেশন সময়মত বন্ধ করে, ক্যাশে ডাটা ক্লিন রাখে এবং নিয়মিত ফুল চার্জ করে এরপর চার্জার প্লাগ আউট করে।
রম হলো স্মার্টফোনের ইন্টার্নাল স্টোরেজ। বর্তমান সময়ে এত বেশি রমের মোবাইল বাজারে পাওয়া যায় যে অতিরিক্ত মেমোরি কার্ড ব্যবহারের কোনো প্রয়োজনই হয় না।
সাধারণত ৬৪ জিবি এবং ১২৮ জিবি রম বর্তমান সময়ের মিড রেঞ্জ সেগমেন্টের বহুল প্রচলিত স্টোরেজ। একজন সাধারণ ইউজার এর ক্ষেত্রে এতটুকু স্পেস যথেষ্ট হলেও হেভি ইউজারদের জন্য যথেষ্ট নয়। তাদের জন্য অতিরিক্ত স্টোরেজ যোগ করার সুবিধা তো থাকছেই।
ইন্টার্নাল স্টোরেজ বা রমের সুবিধা এবং অসুবিধা মূলত একই সূত্রে গাঁথা। আপনি আপনার মোবাইলটাকেই যেমন একটা স্টোরেজ ডিভাইস হিসেবে সরাসরি ব্যবহার করতে পারবেন হাই রমের কারণে, ঠিক একই কারণে আপনি আপনার স্মার্টফোন হারিয়ে ফেললে বা নষ্ট হয়ে গেলে ব্যাক আপ না থাকলে ডাটাগুলো হারানোর মারাত্মক ঝুঁকিতে থাকবেন।
র্যাম হলো কোনো ইলেকট্রনিক্স ডিভাইসের অস্থায়ী মেমোরি। কোনো তথ্য অস্থায়ী জমা রাখার স্থানই হলো র্যাম। স্মার্টফোন হ্যাং-ল্যাং থেকে মুক্তি এবং ফ্লুয়েন্ট ইউজার এক্সপেরিয়েন্সের জন্য হাই র্যামের জুড়ি নেই।
বর্তমান সময়ে ৪ গিগাবাইট র্যাম এর নিচে মোবাইল কেনা খুবই পীড়াদায়ক ব্যপার হবে। কারণ, দিন যত যাচ্ছে, এন্ড্রয়েড তথা সব অপারেটিং সিস্টেমেই অ্যপ্লিকেশনগুলোর সাইজ বড় হচ্ছে। আপনি লক্ষ্য করলে দেখবেন প্লেস্টোরে একটা অ্যাপের যে সাইজ থাকে,পরবর্তী আপডেট আসার পর সাইজ বেশ খানিকটা বেড়ে যায়। বড় সাইজের অনেকগুলো অ্যাপ্লিকেশন স্মার্টফোনে শান্তিতে চালানোর জন্য ৪/৬/৮ জিবি র্যাম অত্যাবশ্যক নতুবা হ্যাং এবং ল্যাং নিত্যদিনের যন্ত্রণার কারণ হবে।
অনেকের কাছে ডিজাইন ব্যপারটা মুখ্য না হলেও জনসমক্ষে চলাচলের জন্য স্মার্টফোনের ডিজাইন চিত্তাকর্ষক হওয়া উচিত।
বিল্ড কোয়ালিটিতে সাধারণ তিন ধরণের মোবাইল ফোন বহুল প্রচলিত। এগুলো হলো প্লাস্টিক বিল্ড, গ্লাস বিল্ড এবং মেটাল বিল্ড। প্লাস্টিক বিল্ডের মোবাইল বেশ হালকা এবং টেকসই হয়। কিন্তু, প্লাস্টিক বিল্ডের ব্যাক পার্টে প্রচুর স্ক্র্যাচ পড়ে যা মোবাইলের লুকে ব্যপক কুপ্রভাব ফেলে। তবে,গর্জিয়াস লুক এবং স্টাইলিশ বিবেচনায় গ্লাস বডির মোবাইলই বর্তমানে চাহিদার তুঙ্গে। হাত থেকে পড়ে সহজে যাতে ভাঙতে না পারে সে জন্য মোবাইলের ফ্রন্ট এবং ব্যাক উভয় প্যানেলে গরিলা গ্লাসের প্রটেকশন ব্যবহৃত হয়।
মোবাইলের ডিজাইন সম্পূর্ণ ব্যক্তি নির্ভর একটি বিষয়। অনেকে সলিড কালারের মোবাইল পছন্দ করেন। অনেকে লম্বাটে মোবাইল পছন্দ করেন। অনেকে সাইডে ক্যামেরা বাম্পযুক্ত মোবাইল পছন্দ করেন। ডিজাইন যে যেটাই কিনুক, কোম্পানিগুলো ডিজাইনে কখনো কার্পণ্য করেনা গ্রাহক সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য।
বর্তমান সময়ে অনেকের কাছে ক্যামেরা বিষয়টি প্রথম প্রায়োরিটি থাকে মোবাইল কিনতে গেলে। যারা টুকটাক মোবাইল ফটোগ্রাফি করেন, চাকুরিজীবী এবং গৃহিণী, তারা মোবাইল কিনতে গেলে আগে ভালো ক্যামেরার একটি ডিভাইসের খোঁজ করেন।
বর্তমান সময়ে হাই মেগাপিক্সেলের ক্যামেরা ব্যবহৃত হলেও পুরোটাই আসলে মার্কেট স্ট্র্যাটেজি ছাড়া কিছুই না আর। ক্যামেরার মেগাপিক্সেলের উপর নির্ভর করেই অনেকে মোবাইল ফোন কিনে থাকেন যা সম্পূর্ণ ভুল একটি কাজ। আপনার ক্যামেরা সেন্সরের সাথে যদি আপনার প্রসেসরের ভালো অপ্টিমাইজেশন না হয়, তাহলে অনেক বেশি মেগাপিক্সেলের ক্যামেরা থেকেও আপনি মানসম্মত ছবি পাবেন না।
অনেক সময় দেখা যায় অ্যাপলের আইফোনের ১৬ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরায় যে ছবি উঠে, এন্ড্রয়েডের ৪৮ মেগাপিক্সেলে তার চেয়ে খারাপ মানের ছবি উঠে। এটা মূলত হয় প্রসেসর এর সাথে ক্যামেরা সেন্সরের সঠিক অপ্টিমাইজেশনের অভাবে। অ্যাপল তাদের ডিভাইসে নিজস্ব বায়োনিক প্রসেসর ইউজ করে যেটা বেশ শক্তিশালী এবং ভালো পিক্সেল সমৃদ্ধ ছবি উপহার দিতে পারে।
বাজারে যে ৪৮, ৬৪, ১০৮ মেগাপিক্সেলের চমকদার বিজ্ঞাপন পাওয়া যায়, তা সম্পূর্ণ সত্যি নয়। আসলে, এই কোম্পানির মোবাইলগুলো পিকচার বাইন্ডিং টেকনোলজি ব্যবহার করে হাই রেজুলেশনের ছবি প্রসেসিং করে থাকে। মূল ছবি ১৬ মেগাপিক্সেল বা তার আশে পাশেই হয়ে থাকে।
১. যাদের ভিডিও কল সহ নানাবিধ প্রয়োজন রয়েছে, তাদের জন্য ভালো ফ্রন্ট ক্যামেরা যুক্ত ডিভাইস কেনা উচিত। ফ্রন্ট ক্যামেরায় এইচডিআর মুড থাকলে ছবি আরো কালারফুল এবং চিত্তাকর্ষক হয়ে উঠে।
২. যাদের অবজেক্টের ক্লোজ শট নেওয়ার মাধ্যমে ফটোগ্রাফির ইচ্ছা রয়েছে, ম্যাক্রো লেন্সযুক্ত ডিভাইস তাদের অন্যতম পছন্দ হতে পারে।
৩. এছাড়া যারা ফটোগ্রাফি করেন, ওয়াইড অ্যাঙ্গেল ক্যামেরা তাদের অন্যতম পছন্দ হতে পারে।
৪. যারা নিখুঁত পিক্সেলের এবং জুম করার পর ফাঁটবে না সহজে এরকম ক্যামেরার ছবি পছন্দ করেন, তাদের সনির আইএমএক্স সেন্সরের মোবাইল কেনা উচিত। সনির আইএমএক্স সেন্সর সাধারণত অন্যান্য কোম্পানির ক্যামেরা সেন্সর থেকে ভালো ছবি প্রসেসিং এ সাহায্য করতে পারে।
মোবাইলের পার্ফরমেন্স সহ যাবতীয় বিষয় নির্ভর করে প্রসেসর এর উপর। বর্তমান সময়ে মিডিয়াটেক এবং স্ন্যাপড্রাগন প্রসেসর গণহারে স্মার্টফোনগুলোতে ব্যবহার করা হয়। এছাড়া কোরিয়ান টেক জায়ান্ট স্যামসাং তাদের নিজেদের মোবাইলগুলোতে সাধারণত Exynos সিরিজের প্রসেসর ব্যবহার করে থাকে।
অ্যাপল কোম্পানি তাদের আইফোনে তাদের নিজস্ব Bionic প্রসেসর ইউজ করে থাকে। এছাড়া চীনা টেক জায়ান্ট হুয়ায়ে তাদের কিছু ডিভাইসে শক্তিশালী kirin প্রসেসর ব্যবহার করে থাকে।
প্রসেসর এর পার্ফরমেন্স যে সিস্টেমের মাধ্যমে বিবেচনা করা হয় সেটাকে বলা হয় “বেঞ্চমার্ক স্কোর”। তবে, টেক রিভিউয়াররা বলে থাকেন বেঞ্চমার্ক স্কোর ই আসলে একটা প্রসেসর এর সবকিছু না। বাস্তব জীবনে দেখা যায় কিছু মিডিয়াটেক প্রসেসর বেঞ্চমার্ক স্কোর এ এগিয়ে থাকলেও দীর্ঘ সময় ব্যবহারের পর স্ন্যাপড্রাগন প্রসেসর থেকেই ভালো পার্ফরমেন্স পাওয়া যায় এবং মিডিয়াটেক প্রসেসর স্লো কাজ করে। এটা অবশ্য ইউজার কতটা হেভি ইউজ করছে এবং নিয়ম মেনে মোবাইল চালাচ্ছে তার উপরেও নির্ভরশীল।
যাই হোক, যেই প্রসেসর এর মোবাইলই কিনেন না কেনো, এর লেটেস্ট ভার্সন দেখে কিনবেন এবং ঐ বাজেট রেঞ্জে এর চেয়ে ভালো প্রসেসর আছে কিনা ইন্টারনেট থেকে দেখে কিনবেন।
বর্তমান সময়ে আর কেউ প্যাটার্ন লক কিংবা পাসওয়ার্ডের মত সিকিউরিটি সিস্টেমে নির্ভরশীল নেই। মিড রেঞ্জের মোবাইলেই এখন ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর, ফেস আনলকিং সেন্সর পেয়ে যাবেন। একই সাথে বেশি দামের মোবাইলে পাবেন রেটিনা স্ক্যানিং সিস্টেম।
ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর আবার বিভিন্ন রকমের আছে। এর ভিতর ফিজিক্যাল ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর রয়েছে বহুল প্রচলিত যেটা মোবাইল ফোনের পিছনের দিকে মিডল পজিশনে থাকে। এছাড়া রয়েছে ইন ডিস্প্লে ফিঙ্গারপ্রিন্ট যেটা অ্যামোলোড প্যানেলের মোবাইলগুলোতে খুব বেশি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। পাশাপাশি নতুন এক ধরণের ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর বের হয়েছে যেটা মোবাইলের পাওয়ার বাটনের সাথে যুক্ত থাকে যাকে বলা হয় সাইড মাউন্টেড ফিঙ্গারপ্রিন্ট। আনলকিং স্পিড কোনটার বেশি সেটা দেখেই মূলত ডিভাইস সিলেক্ট করা উচিত।
ফেস আনলক তুলনামূলক দুর্বল সিকিউরিটি হওয়ায় ব্যবহার না করাই ভালো। তবে, ভালো ডিভাইসের ফেস আনলকিং স্পিড যেমন ফাস্ট হয়, তেমনি নিখুঁত ও হয়। তাই,মোবাইল কেনার সময় খোঁজ খবর নিয়ে এটার আনলকিং স্পিডটা পরিস্কার হয়ে নিতে হবে।
এতক্ষণ তো মূল বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করলাম। অন্যান্য ক্যাটাগরির ভিতর রয়েছে ইউজার ইন্টারফেস (ইউআই), চার্জিং পোর্ট টাইপ, চার্জার, ওটিজি সাপোর্ট, আইপিএস রেটিং ইত্যাদি বিষয়।
অন্যান্য ক্যাটাগরির এই বিষয়গুলোর ভিতরে ইউজার ইন্টারফেসটা অনেক জরুরী একটি বিষয় বলে আমি মনে করি। ইউআই ফ্রেন্ডলি না হলে মোবাইল চালানোর সময় নানাবিধ সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়।
শাওমি তাদের নিজস্ব ইউআই MiUi ব্যবহার করে। স্যামসাং এতদিন OneUi ব্যবহার করলেও সম্প্রতী তারা স্যামসাং ইউআই আনার ব্যপারে ইঙ্গিত দিয়েছে। ওয়ানপ্লাস ব্যবহার করে শক্তিশালী কাস্টমাইজ সুবিধাযুক্ত Oxygen OS. এসব ইউআই ছাড়াও জনপ্রিয় আরো অনেক ইউআই রয়েছে যারা খুবই ইউজার ফ্রেন্ডলি এবং মোবাইরের পার্ফরমেন্সের জন্য ভালো।
প্রত্যেকটি কোম্পানি ন্যূনতম এক বছর বা তারও বেশি সময় বিভিন্ন সময়ে ইউআই আপডেট পাঠায়। ইন্টারনেট সংযোগের মাধ্যমে এসব আপডেট দিয়ে গ্রাহকরা পূর্বের আপডেটে থাকা সমস্যাগুলো সমাধান করতে পারেন।
চার্জিং পোর্ট টাইপ সি বর্তমানে বহুল প্রচলিত একটি টাইপ। সি টাইপ পোর্টেই সামনের দিনের ডিভাইসগুলো লঞ্চ হবে বিধায় সি টাইপ পোর্টের মোবাইল কেনাই শ্রেয়। এছাড়া ওটিজি কেবল সাপোর্ট কিনা, স্প্ল্যাশপ্রুফ(ধুলাবালি মুক্ত) কিনা, পানিতে কতক্ষণ ডুবে থাকতে পারবে কত ফুট গভীরতায় এই বিষয়গুলোও বিবেচনায় আনা উচিত।
চার্জারের আবার হরেক রকমভেদ রয়েছে। ইদানিং বেশি ওয়াটের ফাস্ট চার্জার বাজারে পাওয়া যায়। ওয়াট বেশি হলে চার্জ দ্রুত হওয়া সম্ভব। কোয়ালকমের ফাস্ট চার্জিং টেকনোলজির মাধ্যমে ২৭ ওয়াটের একটি ফাস্ট চার্জার দিয়ে ১ ঘন্টা ১৫ মিনিটেই একটি মোবাইল ফুল চার্জ করা সম্ভব।
সবশেষে একটা বিষয় নিয়ে কথা বলা যাক সেটা হলো ব্রান্ড ভ্যালু। দিনশেষে আমরা সবাই ব্রান্ডের পাগল। ব্রান্ড ভ্যালুর পাল্লায় পড়ে অনেকে বেশি দামে নিম্নমানের কনফিগারেশনের মোবাইল ফোন কেনেন যেটা একদমই বুদ্ধিমানের কাজ না। তবে হ্যাঁ, যদি আপনার বিশেষ কোনো ব্রান্ডের প্রতি ভালোবাসা থাকে, অবশ্যই সেই ব্রান্ডের গ্রাহক হতেই পারেন আপনি তবে ব্রান্ড ভ্যালুর পাশাপাশি ডিভাইসটি কতটুকু “ভ্যালু ফর মানি” অর্থ্যাৎ ঐ দামে কতটুকু সার্ভিস দিচ্ছে এই বিষয়টি বিবেচনা করে মোবাইল ফোন কেনার সুপরামর্শ থাকলো।
আরও পড়ুনঃ ছাত্রজীবন থেকেই শুরু হোক ফ্রিল্যান্সিং
মন্তব্য লিখুন