বিশ্ববিদ্যালয় এর কথা শুনলেই মনের কোনে আকাঙ্ক্ষা শত সপ্ন আর অফুরান ভালোবাসার জায়গা তৈরী হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ই -তো পৃথিবীর জ্ঞান বিকাশের সবচেয়ে বড় দরজা জ্ঞান সাগরের মেরিয়ানা স্টেন্জ।
পৃথিবী ব্যাপি বিস্তৃত ২৫০০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সেরা বিশ্ববিদ্যালয় গুলো সম্পর্কে আমাদের জানার আগ্রহটা নিতান্তই স্বাভাবিক। তাই পৃথিবীর সেরা দুইটি বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে জানা শোনাই আমাদের আজকের আলোচ্য বিষয়।
এম আই টি (Massachusetts Institutes of Technology) শব্দটি শুনলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে আমেরিকার ক্যামব্রিজে অবস্থিত বিশ্ব সেরা বিশ্ববিদ্যালয়টির কথা।
প্রায় ১৫৯ বছর পূর্বে ১৮৬১ সালে আমেরিকায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির আদলে সামাজিক আধুনিকতা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এম আই টি প্রতিষ্ঠিত হয়। এ বিশ্ববিদ্যালয়টি মূলত বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়।
দীর্ঘ ১.৬ কিলোমিটার ক্যম্পাস এরিয়াটি ক্যালিফোরনিয়ার ম্যাচাচুটস শহর কে ঘিরে চার্লস নদীর অববাহিকায় অবস্থিত।
এম আই টি Qs world university ranking এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় প্রথম স্থান পেয়েছে। অসংখ্য জনপ্রিয় উদ্ভাবনী ও প্রকৌশল শৈল্পির কারিগর এ বিশ্ববিদ্যালয়।
এম আই টি মূলত পাচটি স্কুলের অধীনে ৪৪ টি স্নাতক ডিগ্রি প্রদান করে থাকে।সবচেয়ে জনপ্রিয় অনুষদ হল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদ।
জনপ্রিয় কোর্স হল তড়িৎ ও প্রকৌশল বিজ্ঞান(EEE) ও কম্পিউটার সায়েন্স ও ইন্জিনিয়ারিং (CSE)।
প্রকৌশল অনুষদের পাশাপাশি যুগোপযোগী অনুষদ যেমন এম আইটি লিংকান ল্যাবরোটারি, রেটস সেন্টার, হায়াস্টার পর্যাবেক্ষনাগার ইত্যাদি জনপ্রিয় সব অনুষদের সম্ভার এ বিশ্ববিদ্যালয়।
তাছাড়া এ বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে একাধিক বিখ্যাত প্রতিষ্ঠান গুোর প্রতিষ্ঠানিক অধিভুক্তি। AAU, ALCUM, AITU, APLU,COFHE, URA ইত্যাদি বিখ্যাত প্রতিষ্ঠান গুলো এম আই টির অধিভুক্ত।
বিশ্ব বিখ্যাত এই বিশ্ববিদ্যালয়টির বর্তমান উপাচার্য ক্যাথিয়া বারহার্ট। ২০১৯ সালের তথ্য মতে প্রাতিষ্ঠানিক কর্মকর্তা ১০৭৪ জন। সর্বমোট শিক্ষার্থী ১১৫২০ জন।স্নাতক শ্রেনীতে ৪৫৩০ জন স্নাতকোত্তর শ্রেনীতে ৬৯৯০ জন।
এম আই টি মূলত ৪-১-৪ একাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী শিক্ষা কার্যক্রম সম্পাদিত করে।সেমিস্টার শুরু হয় শ্রমিক দিবসে অর্থাৎ পহেলা মে আর শেষ হয় ডিসেম্বরের মাঝামাঝি।
জানুয়ারিতে ৪ সপ্তাহের স্বতন্ত্র ক্রিয়াকালাপ বিদ্যমান থাকে। পরবর্তী সেমিস্টার শুরু হয় ফেব্রুয়ারি বা বসন্তের শুরুতে শুরু হয় এবং মে মাসের শেষের দিকে শেষে হয়।
এম আই টিতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী রা তাদের কোর্স গুলোকে বোঝানোর জন্য একটা মাএ শব্দ বা সংখ্যা ব্যবহার করে যেমন কম্পিউটার সায়েন্স এবং ইন্জিনিয়ারিং (CSE) [কোর্স -০১]।
মোট শিক্ষার্থীদের ৬৩% স্কুল অফ ইন্জিনিয়ারিং, স্কুল অফ বিজ্ঞানে (২৯%), মানবিক, সংস্কৃতি, সামাজিক বিজ্ঞানে ৩.৭% বৃহতম ডিগ্রি প্রোগ্রামগুলোর মধ্যে চালু রয়েছে তড়িৎ ও প্রকৌশল বিজ্ঞান, কম্পিউটার সায়েন্স এবং ইন্জিনিয়ারিং, মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ফিজিক্স, ম্যাথ ইত্যাদি।
এম আাই টি তে স্নাতক শ্রেনীর সকল শিক্ষার্থীদের জেনারেল রিকুয়ারমেন্ট অফ ইনস্টিটিউট (GRI) নামে একটি মূল পাঠ্যক্রম সম্পন্ন করতে হয়। বিজ্ঞান ও প্রকৌশল মেজরের কোর্স গুলোর পূর্বশর্ত অনুযায়ী দুইটি ফিজিক্স, একটি কেমেস্ট্রি, একটি বাইলোজি সেমিস্টার সম্পন্ন করতে হয়।
মানবিক ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষার্থীদের ৮ টি কোর্স সম্পন্ন করতে হয়।তাছাড়া একটি স্বতন্ত্র সাতার পরীক্ষা ও দিতে হয়।
উপর সব থেকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকে। এম আই টির স্নাতক শ্রেনীর শিক্ষার্থীরা (UROP) এর মাধ্যমে ৮৫% এর অধিক শিক্ষার্থীরা গবেষণার সুযোগ পায়।পাঁচটি স্কুল ও একটি কলেজ জুড়ে ৩০ টি বিভাগে গবেষণা কার্যক্রম চালু থাকে।
তাছাড়া এম আই টি লিংকন ল্যাব,হোল ওশানোগ্রাফিক ইনস্টিটিউট প্রভৃতি গবেষণাগার গুলো উচ্চ মানের গবেষণায় ব্যাপক ভূমিকা রাখে।
অনকোজিন- রবার্ট ওয়েইনসবার্গ মানব ক্যান্সারের জিনগত ভিত্তি আবিষ্কার করেন।
বিপরীত প্রতিলিপি -আর এন এ টিউমার ভাইরাস।
তাপীয় মূ্তুর সময় -মেডিকেল ডিভাইস, ফার্মাসিউটিক্যালস প্রসাধনী গুলোর দরকার।
আকামাই টেকনোলজিস -দ্রুততর সামগ্রী বিতরণ নেটওয়ার্ক এটি বিশ্বের বৃহত্তম কম্পিউটার প্লাটফর্ম গুলোর মধ্যে একটি।
কিপ্টোগ্রাফি – প্রথম ব্যবহারিক পাবলিক কি সিস্টেম গুলোর মধ্যে একটি।
ডিজিটাল সার্কিট- এম আই টির স্নাতকোত্তর শ্রেনীর ছাত্র ক্লাউন শ্যানন তিনি যা আধুনিক কম্পিউটার গুলোর পথ প্রস্তথ করেছে।
ইমাস (টেক্রট এডিটর) -এম আই টি ল্যাবে ১৯৭০ এর দশকে বিকাশ শুরু হয়।
ফ্লাইট রেকর্ডার -চার্লস স্টার্ক এম আই টির ইনস্ট্রুমেন্টেশন ল্যাবরেটারিতে ব্লাক বক্র টি তৈরী করেন।এই ল্যাবটি পরে অ্যাপোলো মুন আবর্তন গাইডেন্স কম্পিউটার হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
জি এন ইউ প্রকল্প -রিচার্ড স্টলম্যান এম আই টিতে জি এন ইউ প্রকল্প চালু করে।১৯৮৩ সালে আনুষ্ঠানিক ভাবে সফটওয়্যার আন্দোলন তৈরী করে।
লিস্প (প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ) -ডন ম্যাকার্থি এম আই টির শিক্ষার্থী আবিষ্কার করেন।যা সিম্বোলিক এক্রপ্রেশন গুলির পুনরাবৃত্তি ফাংশন এবং মেশিন প্লাটফর্ম।
পেরড্রিক মাইক্রো ড্রোন- স্বায়ত্তশাসিত ড্রোন যা জঙ্গলে কৃএিম বুদ্ধিমাত্তা হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
প্রজেক্ট ম্যাক – অপারেটিং সিস্টেম, কৃত্রিম বুদ্ধিমাত্তা, গননা তত্বের গ্রাউন্ড ব্রেকিং গবেষণা। যা DARPA অর্থায়িত প্রকল্প।
রাডার -দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের সময় এম আই টির রেডিয়েশন ল্যাবে আবিষ্কৃত হয়।
স্কেচ প্যাড – আইভার সুদার ল্যান্ড আবিষ্কার করেন যা মানব কল্যান ইন্টারঅ্যাকশনে ভূমিকা রাখে এবং কম্পিউটার গ্রাফ্রিজে বিকাশে অবদান রাখে।
ভিসিক্যালক-ব্যক্তিগত কম্পিউটার গুলির জন্য প্রথম স্প্রেডশিট কম্পিউটার প্রোগ্রাম।
এম আই টির লাইব্রেরি ১৮৬২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এম আই টির লাইব্রেরিতে মুদ্রণ ও মাল্টিমিডিয়া উপাদান গুলোতে ৩ মিলিয়নের বেশি প্রিন্ট উপাদান, ১৭০০০ এর বেশি জার্নাল এবং অন্যান্য সিরিয়াল সাবস্ক্রাইবশন, ৪৮৭ টি অনলাইন ডাটাবেজ, ৫৫০০০ এর বেশি ইলেকট্রনিক্যাল জার্নাল।
২.৮ মিলিয়নের বেশি আইটেমের মাইক্রোফর্ম, মানচিত্র, চিত্র, বাদ্যযন্ত, সাউন্ড রেকর্ডিং ইত্যাদি কন্টেন্ট রয়েছে। সব মিলিয়ে ৬ মিলিয়নের অধিক শিক্ষামূলক কন্টেন্ট এর বিশাল সম্ভারে পরিপূর্ণ এ বিশ্ববিদ্যালয়।
এম আইটি কে বিশ্ব বিখ্যাত বিজ্ঞানী তৈরীর কারিগর ও নোবেল সম্মাননা পুরুষ্কারের কারিগর বলা চলে। আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে পুরুষ্কার ও সন্মাননায় এম আই টির অবস্থান নিন্মরূপঃ
১১৫ টি দেশের শিক্ষার্থীরা এ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত রয়েছে। যাদের মধ্যে বাংলাদেশের কৃতি শিক্ষার্থীরাও রয়েছে।
প্রতি বছর প্রায় ৩০০০ হাজার শিক্ষার্থী সারা বিশ্ব থেকে উপযুক্ত শর্ত মেনে এম আই টি তে ভর্তির জন্য আবেদন করে।যার মধ্যে মাএ ১৫০ জন ভর্তির সুযোগ পায়।
এম আই টি কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের অর্থনৈতিক ও শিক্ষাগত যোগ্যতা বিবেচনায় স্কলারশিপ প্রদান করে থাকে।
এম আই টিতে স্নাতক শ্রেনীতে ভর্তির জন্য মূলত স্যাট-০১, স্যাট-০২ ও টোফেল সম্পন্ন করার পাশাপাশি যে বিষয়ে ভর্তি হতে চায় সে বিষয়ে একটি রচনা লিখে সাবমিট করতে হয়।
পরবর্তীতে কতৃপক্ষের বিবেচনায় ভর্তির সুযোগ মেলে এ সপ্নের বিশ্ববিদ্যালয়ে।
স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় যা QS WORLD RANKING অনুযায়ী বিশ্বের সেরা দ্বিতীয় বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে বিবেচিত।
এটি মূলত যুক্তরাষ্টের ক্যালির্ফোনিয়ার স্ট্যানফোর্ডে অবস্থিতি একটি ব্যক্তিগত গবেষণা বিশ্ববিদ্যালয়। স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ১৮৯১ সালে ১২৯ বছর পূর্বে লিলেন্ড জেইন স্ট্যানফোড প্রতিষ্ঠা করেন।
স্ট্যানফোর্ড ছিলেন তৎকালীন ইউ এস সিনেটের এবং ক্যালির্ফোনিয়ার গভর্নর। লিলেন্ড স্ট্যানফোড জুনিয়র লিলেন্ড স্ট্যানফোডের পুত্র যিনি ১৫ বছর বয়সে টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
তার স্মৃতি স্বরনেই স্ট্যানফোর্ড মূলত স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৯১ সালের ১ অক্টোবর প্রথম ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয় এ বিশ্ববিদ্যালয়ে।
১৯০৬ সালে সান ফ্রান্সিসকো ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং আমেরিকার সরকার পরবর্তীতে এ বিশ্ববিদ্যালয়কে পূর্ণ প্রতিষ্ঠিত করে।
বিশ্ববিদ্যালয়টি দেশের শীর্ষ স্থানীয় তহবিল সংগ্রহকারী প্রতিষ্ঠান গুলোর মধ্যে একটি যা বছরে এক বিলিয়নের বেশি তহবিল সংগ্রহ করে।
সুবিশাল ও জ্ঞান মহিমার প্রবেশদ্বার এ বিশ্ববিদ্যালয়ে চালু রয়েছে ৭ টি স্কুল যার তিনটি স্কুলের অধীনে ৪০ টি ডিপার্টমেন্ট রয়েছে।
২০১৯ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী সর্বমোট ১৭২৪৯ জন শিক্ষার্থী যাদের মধ্যে স্নাতক শ্রেনীর ছাত্র সংখ্যা ৬৯৯৬ জন ও স্নাতকোত্তর শ্রেনীর ছাত্র সংখ্যা ১০২৫৩ জন। একাডেমিক স্টাফ রয়েছে ২২৪০ জন প্রশাসনিক কর্মকর্তা আছে ১২৫০৮ জন।
তিনটি স্কুল স্নাতক স্তরের 40 টি একাডেমিক বিভাগের পাশাপাশি চারটি পেশাদার স্কুল যা আইন, চিকিৎসা, শিক্ষা এবং ব্যবসায় স্নাতক প্রোগ্রামগুলিকে কেন্দ্র করে। সমস্ত স্কুল একই ক্যাম্পাসে রয়েছে।
শিক্ষার্থীরা টি ভার্সিটি স্পোর্টসে প্রতিযোগিতা করে এবং ডিভিশন আই এফবিএস প্যাক -১২ সম্মেলনের দুটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একটি হ’ল এ বিশ্ববিদ্যালয় ।
এ বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রেসিডেন্ট মার্স টেইসার লোভিগনি। স্ট্যানফোর্ড শরতের ত্রৈমাসিক কার্যক্রমটি শুরু করে সেপ্টেম্বর এর শেষ দিকে এবং বসন্তের ত্রৈমাসিকটি জুনের শেষের দিকে শুরু করে।
স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় তাদের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনায় কোয়াটার সিস্টেম অনুসরণ করেচার বছরের স্নাতক প্রোগ্রামটিতে একটি চারুকলা ও বিজ্ঞান ভিত্তিক কোর্স রয়েছে যা উচ্চ স্নাতক শিক্ষার্থীর সহাবস্থানকে কেন্দ্র করে পরিচালিত হয়।
স্ট্যানফোর্ডের স্কুল ও কলেজ গুলো স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাসোসিয়েশন দ্বারা অনুমোদিত। স্ট্যানফোডের ভর্তি প্রক্রিয়া মার্কিন নাগরিক এবং স্থায়ী বাসিন্দাদের জন্য প্রায় বলতে গেলে অন্ধ।
আরও পড়ুনঃ খান একাডেমি –অনলাইন শিক্ষা ব্যবস্থায় একটি উল্লেখযোগ্য মাধ্যম
যদিও এটি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য বন্ধ নয়। স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় গড় নির্বাচনী হার ৪.৩%। বিভিন্ন দেশের সর্বোচ্চ মেধাবী শিক্ষার্থীদের অবস্থান হয় এ বিশ্ববিদ্যালয়ে।
স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে গড় ৩১৪১১ ডলার প্যাকেজ সহ ৬৪% প্রয়োজন ভিত্তিক সহায়তা কার্যক্রম চালু রয়েছে। অবস্থা বিবেচনায় প্রায় ৮০% শিক্ষার্থী এ সহায়তার আওতাভুক্ত হয়ে থাকে।
স্নাতক শ্রেনীতে যাদের পারিবারিক আয় ৬৫০০০ ডলারের নিচে তাদের টিউশন, রুম ও বোর্ড ফি মওকুফ করা হয়।যাদের পারিবারিক আয় ১২৫০০০ ডলারের বেশি তারা উক্ত সুযোগ সুবিধা গুলো পায় নাহ।
স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় কে (আর-১) ডক্টরাল বিশ্ববিদ্যালয় বা খুব উচ্চতর গবেষণা কার্যক্রম সম্পন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
২০১৮ অর্থ বছরে বিশ্ববিদ্যালয় টির গবেষণা খাতে ব্যয় ছিল ১. ১ মিলিয়ন ডলার। ২০১৬ সাল পর্যন্ত ভাইস প্রভোস্ট এবং ডিন অফ রিসার্চ আঠারোটি সতন্ত পরীক্ষাগার পর্যবেক্ষন করেন।স্ট্যানফোড অনুমোদিত সংস্থা গুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য এস এল এসি ন্যাশনাল ল্যাবরেটরি (মূলত স্ট্যানফোড লিনিয়ার এক্রিলোটর সেন্টার) ।
স্ট্যানফোর্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট যা একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান যা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে এ তৈরি হয়। যুদ্ধ, বিপ্লব ও শান্তির উপর হুভার ইনস্টিটিউট (পাবলিক পলিসি মেকার) কাজ করে।
হাসো প্লাটনার ইনস্টিটিউট যা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠিত একটি স্কুল যা পন্য নকশা, প্রকৌশল এবং ব্যবসায় পরিচালনা শিক্ষাকে সংহত করে।
স্ট্যানফোর্ড মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র রিসার্চ সেন্টার যা পেশাদার সাংবাদিকদের জন্য জন এস নাইট ফেলোশিপ এবং মহাসাগর সমাধান কেন্দ্রের কেন্দ্র ও পরিচালনা করে।
যা সমুদ্রের মুখোমুখি চ্যালেন্জ মোকাবেলায় সামুদ্রিক বিজ্ঞান এবং নীতিকে একএিত করে।
তাছাড়া ফেইসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ এবং শিশু বিশেষজ্ঞ প্রিসিলা চ্যানের ৬০০ মিলিয়ন ডলারের প্রতিশুতিতে ২০১৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় মেডিকেল সায়েন্স রিসার্চ সেন্টার যা উচ্চ মানের স্বাহ্য সংক্রান্ত গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
২০১৪ সালের হিসাব অনুযায়ী স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরি গুলোতে ৯.৩ মিলিয়ন ভলিউম, প্রায় ৩ লক্ষ বিরল বা বিশেষ বই রয়েছে।তাছাড়া রয়েছে ১.৫ মিলিয়ন ই-বুকস,২.৫ মিলিয়ন অডিও ভিজুয়াল উপকরণ।
প্রায় ৬ মিলিয়ন মাইক্রোফর্ম হোল্ডিং সহ হাজারও বইয়ের সম্ভার রয়েছে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরি গুলোতে। স্ট্যানফোড বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরি সিস্টেমের প্রধান লাইব্রেরি টি গ্রীন লাইব্রেরি নামে পরিচিত।
২০২০ সালের মার্চ মাস অবধি স্ট্যানফোড বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে পুরুষ্কার ও অর্জন সমূহ নিন্মরূপঃ
এটি এনসিএএ-এর 126 টিম চ্যাম্পিয়নশিপ অর্জন করেছে, এবং স্ট্যানফোর্ড ১৯৯৪–-১৯৯৫ সাল থেকে শুরু করে একটানা ২৪ বছর ধরে ন্যাকডিএ ডিরেক্টরস কাপ জিতেছে।
স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় উদ্যোগতাদের জন্য বিশেষ ভাবে খ্যাতি যুক্ত এবং স্টার্ট আপ গুলির জন্য তহবিল আকর্ষন করার ক্ষেত্রে অন্যতম সফল বিশ্ববিদ্যালয়।
স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা অসংখ্য সংস্থা তৈরী করেছেন যার উপার্জন ২.৭ ট্রিলিয়ন ডলারের বেশি। এই সংস্থা গুলো প্রায় ৫.৪ মিলিয়ন কর্মসংস্হান তৈরী করেছে যা ২০২০ সালের মধ্যে ৭ তম বৃহওম অর্থনীতির সমতুল্য।
আমেরিকার এক সাবেক রাষ্ট্রপতি হারবার্ট হুভার, একজন নভোচারী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস সদস্যদের অন্যতম উৎপাদক এ বিশ্ববিদ্যালয়।
গুগল, সান মাইক্রো সিস্টেম, ইয়াহু, এইচ পি বিভিন্ন নামীদামি সংস্থার সহ প্রতিষ্ঠাতা ছাড়াও ইউটিউবের প্রতিষ্ঠাতা বাংলাদেশের কৃতিসন্তান জাভেদ করিম স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী।
স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি সংক্রান্ত তথ্য
স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন খরচ কিছুটা ব্যয়বহুল প্রতি বছরে ৬০ হাজার মার্কিন ডলারের বেশি খরচ হয়।তবে প্রায় ৮৫% শিক্ষার্থীরা বৃত্তি ও আর্থিক সহায়তার আওতাভুক্ত হয়।
তাছাড়া স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক শ্রেনীতে ভর্তির জন্য টোফেল পরীক্ষা সম্পন্ন করার পাশাপাশি যে বিষয়ে ভর্তি হবে সে বিষয়ের উপর একটি রচনা লিখে কতৃপক্ষের কাছে আবেদন করতে হয়।
পরীক্ষার ফলাফল ও ভর্তি যোগ্যতা বিবেচনায় ভর্তির সুযোগ মেলে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে।স্নাতকোত্তর শ্রেনীতে ভর্তির জন্য জি আর ই পরীক্ষা সম্পন্ন করত হয়।
বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয় গুলো বিশ্বের প্রতিটি শিক্ষার্থীদের প্রথম স্বপ্ন। তাই বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর সাথে নিজেদের নাম জড়াতে প্রয়োজন অক্লান্ত পরিশ্রম আর সৃজনশীল মেধামনমনের সুষ্ঠু বিকাশ। বাঙ্গালী শিক্ষার্থীদের সেরা বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে অর্জন সমূহ কৃতিত্বের সাথে স্মরনীয়।
ছবিঃ সংগৃহীত
মন্তব্য লিখুন