ভারতীয় চলচ্চিত্র অভিনেত্রী কীর্তি সুরেশ (Keerthy Suresh) ১৭ অক্টোবর ১৯৯২ সালে চেন্নাই তামিলনাড়ু ভারতে জন্মগ্রহন করেন। তিনি মূলত তেলেগু, তামিল ও মালয়ালম চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। তিনি ২০১৮ সালে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী ক্যাটাগরিতে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান অভিনেত্রী সাবিত্রীর জীবনী নিয়ে তৈরি মহানতি-তে অভিনয়ের জন্য।
কীর্তি সুরেশ ভারতীয় চলচ্চিত্র প্রযোজক সুরেশ কুমার এবং অভিনেত্রী মেনকার কন্যা। তিনি ফ্যাশন ডিজাইনের পড়াশুনা করেছেন। তার শিশু অভিনেত্রী হিসেবে ২০০০ সারল পাইলটস ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্রে অভিনয়ের হাতেখড়ি হয়। ফ্যাশন ডিজাইনের উপর পড়াশুনা শেষে ২০১৩ সালে পুনরায় অভিনয় জীবেন ফিরে আসেন মালয়ালম চলচ্চিত্র গীতঞ্জলিতে অভিনয়ের মাধ্যমে। তার উল্লেখযোগ্য ব্যবসায় সফল ছবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- রিং মাস্টার (২০১৪), ইধু এন্না মায়াম (২০১৫), রজনী মুরুগান (২০১৬), রেমো (২০১৬), নেনু সাইলাজা (২০১৬), বৈরভা (২০১৭), নেনু লোকাল, (২০১৭) থানা সর্ন্ধা কুট্টম (২০১৮), মহানতি (২০১৮), সান্দাকোজি ২ (২০১৮) এবং সরকার (২০১৮) ইত্যাদি।
তামিল অভিনেত্রী মেনকা এবং মালয়ালম চলচ্চিত্র প্রযোজক ও পরিচালক সুরেশ কুমার এর পরিবারে জন্মগ্রহন করেন কীর্তি। তার একজন বড় বোন আছে, যার নাম রেবতী সুরেশ। প্রাথমিক পর্যায়ের পড়াশুনা তিনি তামিলনাড়ু চেন্নাইয়ে করেন। তিনি ফ্যাশন ডিজাইন এর উপর স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন পার্ল একাডেমী থেকে। চেন্নাই এ ফিরে আসার আগে, তিনি তিরুবনন্তপুরমের পাত্তমে কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ে পড়াশুনা করেন। লন্ডতে ফ্যাশন ডিজাইনের উপর দুই মাসের ইন্টার্নশীপ শেষ করার স্কটল্যান্ডে চার মাসের একটি মিনিময় কর্মসূচিতে অংশগ্রহন করেন। ফ্যাশন ডিজাইনকে একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্যারিয়ার হিসাবে দেখেন কীর্তি সুরেশ।
কীর্তি তার পিতা সুরেশ কুমারের প্রযোজিত চলচ্চিত্র পাইলটস (২০০০), আচানিয়ানেনিক্কিষ্টম (২০০১), কুবেরান (২০০২) এবং কয়েকটি টেলিভিশন ধারাবাহিকে শিশু অভিনেত্রী হিসাবে অভিনয় করেছিলেন। পরবর্তীতে এগার বছর পর ২০১৩ সালে গীতঞ্জলি চলচ্চিত্রে মূখ্য অভিনেত্রী হিসাবে অভিনয়ে আত্মপ্রকাশ করেন। তবে চলচ্চিত্রটি ব্যবসায়িক দিক থেকে তেমন সফলতা অর্জন করতে সক্ষম হয় নাই। পরবর্তীতে তিনি ২০১৪ সালে অভিনয় করেন রাফি পরিচালিত রিং মাস্টার ছবিতে, যেখানে তিনি দিলীপের বিপরীতে অভিনয় করেন। ছবিটিতে অন্ধ মেয়েল ভূমিকায় অভিনয় করেন এবং বানিজ্যিক ভাবে সফল হয়।
আরও পড়ুনঃ নিধি আগারওয়াল একজন ইন্ডিয়ান চলচ্চিত্র অভিনেত্রী
কীর্তি ২০১৪ সালে একসাথে বেশ কয়েকটি তামিল চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য চুক্তিবদ্ধ হন। ইধু এন্না মায়াম (২০১৫) হলো তামিলে তার অভিনীত প্রথম ছবি যা কিনা বক্স অফিসে সাফল্য অর্জন করতে ব্যর্থ হয়। ২০১৫ সালের অধিকাংশ সময় ব্যবস্তা ও বড় প্রকল্পগুলির জন্য অনেক ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হয়ে কাজ শুরু করেও বেরিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছেন। ২০১৬ সালে নেনু সাইলাজা ছবির মাধ্যমে তার তেলেগু চলচ্চিত্রের অভিষেক হয়, যেখানে তিনি রাম পথিনেনির বিপরীতে অভিনয় করেন।
২০১৭ সালে তিনি যে ৩টি ছবিতে অভিনয় করেন, তাহলো ভৈরভা, পাম্ভু ও নেনু লোকাল। কীর্তি ২০১৮ সালের চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে- অগ্নিয়াথবাসী, থানা সর্ন্ধা কুট্টম, মহানতি. সিক্যুয়েল স্যামি স্কয়ার, সান্দাকোজি ২ এবং সরকার। ২০১৯ সালে মালয়ালম চলচ্চিত্র মারাক্কর, আরবিকাদালিন্তে সিংহাম,মনমধুদু ২-এ তার একটি বিশেষ উপস্থিতি রয়েছে। ২০২০ সালে পেঙ্গুইন ও নির্মানাধীন চলচ্চিত্রগুলো হলো- মিস ইন্ডিয়া, গুড লাক সখি,রঙ দে ও আন্নাত্থে।
কীর্তি এখন পর্যন্ত মোট ১৭ টি পুরুষ্কারের মনোনয়ন পেয়েছে এবং ১০ টিতে বিজয়ী হয়েছেন। ২০১৮ গীতাঞ্জলি চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ নারী অভিষেক -মালয়ালম ক্যাটাগরিতে তৃতীয় দক্ষিণ ভারতীয় আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র পুরস্কার ও বর্ষসেরা মুখ ক্যাটাগরিতে ১৬তম এশিয়ানেট চলচ্চিত্র পুরস্কার বিজয়ী হন। ইধু এন্না মায়াম চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য বর্ষসেরা উদীয়মান নারী তারকা ক্যাটাগরিতে এডিসন পুরস্কার ও শ্রেষ্ঠ নারী অভিষেক – তামিল ক্যাটাগরিতে ৫ম দক্ষিণ ভারতীয় আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র পুরস্কার বিজয়ী হন। নেনু সাইলাজা চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী ও বর্ষসেরা মনোরঞ্জক ক্যাটাগরিতে জি তেলুগু সুবর্ণ পুরস্কার বিজয়ী হন। নাদিগইয়ার থিলগম চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য বিশেষ জুরি বিভাগে নরওয়ে তামিল চলচ্চিত্র উৎসব পুরস্কার পান।
মহানতি ছবির জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, জি সিনে পুরস্কার – তেলুগু, ৮ম দক্ষিণ ভারতীয় আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র পুরস্কার, টিএসআর – টিভি৯ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ও ৬৬তম ফিল্মফেয়ার পুরস্কার পান। কীর্তি সুরেশ অভিনয়ের পাশাপাশি চলচ্চিত্রে গানও গেয়ে থাকেন। তিনি ২০১৮ সালের স্যামি স্কয়ার চলচ্চিত্রে বিক্রমের সাথে দ্বৈতসঙ্গীত ”পুধু মেট্রো রেল” গানটি গেয়েছেন।
তথ্যসূত্রঃ উইকিপিডিয়া ও ছবিঃ সংগৃহীত
মন্তব্য লিখুন