বর্তমানে শরীরের মেদ বা ভুঁড়ি একটি কমন সমস্যা। আর এই সমস্যার ফলে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অনেক সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। আজ আমরা জানবো এই সমস্যা থেকে কীভাবে আমরা খুব সহজে মাত্র ৬ টি উপায় মেনে চলে মুক্তি পেতে পারি। আর মেদ থেকে মুক্তি মানেই যে সিক্স প্যাক হতে হবে এমন না। আবার একেবারে চিকনা হতে হবে তাও না। মোটামোটি সব ধরনের পোশাক পরলে যেন ভাল দেখায় এমন । প্রথমত আমাদের যে ৬টি রুলস ফলো করতে হবে সেগুলো সম্পর্কে জানতে হবে।
আর্টিকেলে যা থাকছেঃ
গ্রহন করা ক্যালরি ব্যায় করা ক্যালরির সমান হতে হবে, তা না হলে কিন্তু আপনার দেহের মেদ হুহু করে বাড়তে থকবে। আমারা প্রতিনিয়ত যা খাচ্ছি তা থেকে ক্যালরি অর্জিত হচ্ছে আর তা দিয়েই আমরা আমাদের যাবতীয় কাজকর্ম করছি।
আর আমাদের খাওয়া অতিরিক্ত ক্যালরি শরীরে ফ্যাট হিসেবে জমা হয়। যা আমাদের শরীরের মেদ সমস্যার প্রধান কারন। এখন কথা হচ্ছে এই অতিরিক্ত ক্যালরি খরচ করবো কীভাবে? এই ক্যালরি খরচ করার চেয়ে আমরা যদি কম ক্যালরি গ্রহন করি তাহলে আমাদের খরচ করতে কম কষ্ট হবে।
আপনি যদি হাজার ক্যালরির একটি চকলেট খেয়ে সারাদিন বাসায় শুয়ে থাকেন তাহলে তো মেদ আর কথা শুনবে না। আপনাকে যতটুকু ক্যালরি গ্রহন করবেন ঠিক ততটুকু খরচ করে ফেলতে হবে। সেটা কাজকর্ম ব্যায়াম যেভাবেই হোক।
একটি গবেষনায় দেখা গেছে আস্তে আস্তে খেলে খাওয়ার পরিমান অনেকটাই কমে যায়। আর খাওয়ার পরিমান কমলে ক্যালরির পরিমান ও কমবে। আমাদের পেট ভরার সংকেত মস্তিকে পৌঁছাতে প্রায় ২০ মিনিট সময় লাগে।
কিন্তু তার আগেই আমরা দ্রুত খেয়ে পেট অতিরিক্ত ভরে ফেলি। একদল মহিলার উপর একটি জরিপ চালিয়ে দেখা গেছে সময় বাড়ানোর ফলে তাদের খাওয়ার পরিমান প্রায় আগের তুলনায় ২৫ % কমে গেছে।
আর তাছাড়া দ্রুত খাওয়ার ফলে আমাদের মুখের ভিতরে ডাইজেশন টা ভাল ভাবে হয় না। যার ফলে পেটে বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি হয়। তাই আমাদের আস্তে খাওয়া অভ্যাস করতে হবে।
আমরা একবারে খাওয়ার সময় যে পরিমান খাবার নেই না কেন সেটা আমাদের মস্তিস্ক খাওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে যায়। সেটা অনেক বেশি হোক বা কম। তাই খাওয়ার পাত্র ছোট হলে আমরা খাবার ও কম নেব আর খাওয়াও কম হবে।
তবে এটা যে খাবার সার্ভ করে তার উপর ও কিছুটা নির্ভর করে। সে যদি আপনার মা হন তাহলে কম খাওয়া বেশ কঠিন হয়ে পড়বে। তবে এটা প্রমানিত যে খাওয়ার পাত্র ছোট হলে খাওয়ার পরিমান ও কমে যায়।
আমরা অনেকেই খাওয়ার ভিতরে ঢুক ঢুক করে পানি খেয়েই চলি। এটা কিন্তু একটা মারাত্মক বদভ্যাস। তবে গলায় খাবার বাধলে অন্য কথা। খাওয়ার ভিতরে পানি খেলে ডাইজেশনের জন্য ক্ষরিত পাচক রসের ঘনত্ব কমে যায়। ফলে হজম এ সমস্যা হয়।
আরও পড়ুনঃ আমরা স্বপ্ন কেন দেখি এবং বোবায় ধরা আসলে কি?
আর পানি খেলে আমাদের খাওয়ার প্রবনতাও বেড়ে যায়। খাওয়ার আগে এবং পরে কমপক্ষে আধাঘন্টা সময় নিয়ে পানি খাওয়া উচিত। আর অতিরিক্ত মশলা জাতীয় খাবার খাওয়া খাওয়ার ভিতর পানি খাওয়ার বড় কারন। এগুলো বর্জন করতে হবে।
কার্ডিও এক্সারসাইজ আমাদের শরীরের জন্য বিশেষ দরকারী। কার্ডিও এক্সারসাইজ মূলত হূদপিন্ডের ব্যায়াম। এর ফলে কম সময়ে আমরা অনেক ক্যালরি খরচ করতে পারি। যেটা মেদ নির্মূলে কার্যকরী।
বিশেষ করে খালি পেটে এই এক্সারসাইজ করলে শরীরের অতিরিক্ত মেদ ভেঙে ক্যালরি রিলিজ হয়। তাই প্রতিনিয়ত কার্ডিও এক্সারসাইজ করা একান্ত জরুরি।
সবসময় ক্ষুধার্থ থাকা আমাদের একটি সাধারন ব্যাপার। তবে সবসময় ক্ষুধা অনুভব করলে আমরা একবারে অনেকটা খাবার খেয়ে ফেলি। তাই আমাদের পেটে সবসময় কিছু থাকে তাহলে আমরা খাওয়ার পরিমান নিয়ন্ত্রণ করতে পারব। তাই প্রতি তিন ঘন্টা অন্তর আমাদের হাল্কা কিছু খাওয়া উচিত।
এগুলোর পাশাপাশি আমাদের শর্করা জাতীয় খাবার কম খেতে হবে। প্রোটিন বেশি নিতে হবে। তা না হলে শরীর খারাপ হয়ে যাবে। এর জন্য আমাদের সকালের নাস্তা একটু হ্যাভি হতে হবে।
দুপুরের খাবার একটু কম আর রাতের খাবার একদম কম খেতে হবে। মোটামোটি এইসব দিকগুলো বিবেচনা করে চললে মেদ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। আর সব শেষ কথা নিজের স্বাস্থ্য নিজের কাছে। আপনি ভাল ভাবে চললে শরীর ও ভাল থাকবে। আজ এ পর্যন্তই, সবাই ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।
মন্তব্য লিখুন