“এইচ এস সি পরীক্ষা-২০২০” আদৌ ২০২০ সালে হবে কিনা তা অনিশ্চিত। বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে যেন থমকে গেছে পুরো পৃথিবী বিশেষ করে শিক্ষা ব্যাবস্থা। তবে এই পরিস্থিতিতে এইচ.এস.সি পরীক্ষার্থীদের ভোগান্তির শেষ নেই। পরীক্ষা কবে হবে তা নিয়েও দ্বিধাদ্বন্দের কমতি নাই। এ নিয়ে অনেকেই মানসিক চাপের সম্মুখীন হচ্ছে। “করোনা পরিস্থিতিতে এইচ.এস.সি পরীক্ষার্থীদের করণীয়” শিরোনামে এইচ.এস.সি পরীক্ষাথীদের উদ্দেশ্যেই আমার আজকের এই লেখা-
আর্টিকেলে যা থাকছেঃ
এইচ এস সি পরীক্ষা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি পরীক্ষা। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিও এই পরীক্ষার সাথে সংশ্লিষ্ট। তাই এই পরীক্ষা বাতিলের সম্ভাবনা নাই বললেই চলে। শিক্ষামন্ত্রী ড.দীপু মনি এর বক্তব্য অনুযায়ী করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলেই পরীক্ষা নেওয়া হবে। পরীক্ষার কমপক্ষে ১৫ দিন আগে তা জানিয়ে দেওয়া হবে। তাই সবসময় নিজেকে প্রস্তুত রাখতে হবে। এক্ষেত্রে প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে নিজেকে বলতে হবে যে আর ১৫ দিন পর পরীক্ষা এবং সে অনুযায়ী প্রস্তুতি নিতে হবে। হুট করে পরীক্ষার সংবাদ শোনার চেয়ে প্রতি মূহুর্তে নিজেকে প্রস্তুত রাখাটাই ভালো।
দুশ্চিন্তা কোনো সমস্যার সমাধান না।তাই দুশ্চিন্তা করা থেকে নিজেকে বিরত রাখতে হবে। আগের অনুচ্ছেদে যেমনটা বলেছিলাম আজ থেকে ১৫ দিন পর পরীক্ষা ধরে নিতে হবে,আর যদি এভাবে একদিন পার করার পরও পরীক্ষার তথ্য না পাওয়া যায় তখন সেই দিনটাকে বোনাস হিসেবে ধরে নিতে হবে। এতে কিছুটা হলেও চাপমুক্ত থাকা যাবে।তাই শুধু শুধু দুশ্চিন্তা না করে অনেকগুলো দিন বোনাস হিসেবে পাওয়া গেল ভেবে আরও ভালো করে পড়তে হবে। সবাই এমন সুযোগ পায়না তাই নিজেকে ভাগ্যবান/ভাগ্যবত্যি ভাবলেও দোষ নেই।
একনাগারে না পড়ে পড়াটাকে গুছিয়ে পড়লে অনেকটাই সহজ হয়ে যায়। প্রতিদিনের পড়াটাকে একটা চার্ট আকারে সাজিয়ে নিলে পড়ার প্রতি অন্যরকম আগ্রহ তৈরি হয়।তাই নিজের সুবিধা অনুযায়ী চার্ট তৈরি করে পড়তে হবে। প্রতিদিন কয়টা সাবজেক্ট পড়তে হবে আগে তা নির্ধারণ করতে হবে।তারপর সেই সাবজেক্ট এর অধ্যায় অনুযায়ী একটা ডেডলাইন নির্ধারণ করে সে অনুযায়ী অধ্যায় ভাগ করে নিতে হবে।বিষয়টা আরেকটু সহজভাবে বলা যাক।ধরি,একটা সাবজেক্টে ১২টা অধ্যায় আছে,আমার টার্গেট ৬ দিনে শেষ করা। তাহলে একদিনে ২টা অধ্যায় পড়তে হবে। এভাবে প্রতিটা সাবজেক্টের অধ্যায় ভাগ করে নিয়ে একটা চার্ট করে পড়লে অনেকটা সুফল পাওয়া যাবে।
আসলে পারলে সবই সহজ আর না পারলে সবই কঠিন।তাই যেটা কঠিন মনে হয় সেটা বারবার পড়তে হবে।অনেকে আছে শুরুতেই কঠিন ভেবে পড়েও দেখেনা।কিন্তু কয়েকবার পড়লে কিছুটা হলেও সেটার প্রতি দুর্বলতা দূর হবে। সেই সাথে সহজ বিষয়গুলো অনুশীলনে রাখতে হবে। এতে সহজ আর কঠিন দুটোই আয়ত্তে থাকবে।
পাঠ্যবইয়ের কোনো বিকল্প নাই। পরীক্ষায় পাঠ্যবই সংশ্লিষ্ট প্রশ্নই আসবে।তাই পাঠ্য বই খুব ভালো করে পড়তে হবে।পাঠ্যবই থেকে ধারণা নিয়ে তারপর কোনো শিট,গাইড পড়া যেতে পারে।
পড়াশুনাটা নিজের কাছে।নিজে না পড়লে অন্যের হাজারটা উপদেশেও কোনো কাজ হবেনা। তাই নিজেকে সময় দিতে হবে। নিজের থেকে পড়তে হবে।
শুধু পড়লেই হবেনা।নিজের পড়াটাকে নিজেই যাচাই করতে হবে। প্রতিদিন পড়া শেষে সে পাড়াগুলোর ওপর একটা ছোটোখাটো পরীক্ষা নিলে পড়াটা ভালোভাবে ঝালাই হয়ে যাবে।
কিভাবে প্রশ্ন করা হবে? কোন অধ্যায় থেকে কেমন প্রশ্ন আসবে?-এগুলো জানা খুবই প্রয়োজনীয়।প্রশ্নের মানবন্টন থেকে এর ধারণা পাওয়া যায়। তাই প্রশ্নের মানবন্টন অনুযায়ী পড়লে পরীক্ষায় ভালো করা যাবে।
বুঝে পড়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।না বুঝে পড়লে সেই পড়ার কোনো গ্যারান্টি নাই। আর শুধু পড়লেই হবেনা পড়ার পাশাপাশি লেখাও চালিয়ে যেতে হবে। পড়ার পাশাপাশি লিখলে সে পড়াটা মস্তিষ্কে ভালোভাবে গেঁথে যায়। তাই যতটা সম্ভব পড়ার পাশাপাশি লেখার অভ্যাসটা গড়ে তুলতে হবে।
আরও পড়ুনঃ আসছে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার সময়সূচী
সব বিষয় সমান গুরুত্ব সহকারে পড়তে হবে। সারাদিন একটা সাবজেক্ট নিয়ে পড়ে থাকলে হবেনা।একটা সময় নির্ধারণ করে নিতে হবে এবং সে সময়ের মধ্যে পড়া শেষ করতে হবে। যদি শেষ নাও হয় তাও যে পর্যন্ত পড়া হইছে সেখানেই থেমে যেয়ে অন্য বিষয় পড়া শুরু করতে হবে।
মার্ক করে পড়াটা খুবই জরুরি। গুরুত্বপূর্ণ টপিকগুলো মার্ক করে রাখলে পরবর্তীতে পড়তে কম সময় লাগবে।তাছাড়া পরীক্ষার আগের রাতে সবকিছু পড়া সম্ভব না। তাই পরীক্ষায় আগের রাতে কি কি পড়তে হবে সেগুলো আগে থেকেই মার্ক করে রাখলে পড়তে সুবিধা হবে।
এভাবে অনুশীলন চালিয়ে গেলে সবাই ভালো করবে আশা করি।শেষ করছি একজন বিশ্বখ্যাত লেখক ও মোটিভেটর এর উক্তি দিয়ে –
“যার মাঝে সীমাহীন উৎসাহ, বুদ্ধি ও একটানা কাজ করার গুণ থাকে, তবে তার সফল হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি”
– ডেল কার্নেগী
মন্তব্য লিখুন