ম্যাসেজ বইয়ের লেখক- জনপ্রিয় নন্দিত ইসলামি স্কলার শায়খ “মিজানুর রহমান আজহারী” ৷ মাঠে ময়দানে যিনি তুমুল আলোচিত একজন ব্যক্তিত্ব ও দাঈ ইল্লাল্লাহ্। বিশেষ করে তরুণ-তরুণীদের এবং যুবক-যুবতিদের কাছে তাঁর জনপ্রিয়তা আকাশচুম্বি।খুব অল্প সময়ে এতো অধিক জনপ্রিয়তা অর্জন খুব কম মানুষের ভাগ্যেই মিলে বলা চলে। মহান আল্লাহর অশেষ কৃপায় তিনি যেমন মাঠে-ময়দানে রেকর্ড জনপ্রিয় বাংলা ভাষাভাষী দাঈ ইল্লাল্লাহ্। ঠিক তেমনি সোশ্যাল মিডিয়ায়ও সমান জনপ্রিয়তার প্রমাণ রেখেছেন।
ভক্তদের ভালোবাসা ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের অনুপ্রেরণায় এবার তিনি জনপ্রিয়তার প্রমান রেখেছেন তাঁর রচিত বহুল আলোচিত প্রথম বই ‘ম্যাসেজ: আধুনিক মননে দ্বীনের ছোঁয়া‘ প্রকাশ করে। বইটিতে তিনি পাঠকদের জন্য এমন ১২টি ম্যাসেজ তুলে ধরেছেন যা শুধু প্রত্যেক মুসলিমের জন্য নয় বরং সব ধরনের পাঠকদের জন্য রয়েছে বিশেষ আকর্ষণ ও দিকনির্দেশনা।
তাই আজ শায়খ মিজানুর রহমান আজহারী এর ম্যাসেজ বইয়ের আলোচ্য বিষয়বস্তু আপনাদের মাঝে সংক্ষেপে তুলে ধরার চেষ্টা করছি। উক্ত বইয়ের আলোচ্য “You have 12 unread messages” এর প্রত্যেকটি বিষয়ের সংক্ষিপ্ত একটি রিভিউ আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করবো, ইনশাআল্লাহ। চলুন তবে শুরু করা যাক।
প্রথমেই লেখক মহান আল্লাহ তায়া’লা প্রসংশা এবং রাসূল (সা.) এর প্রতি দরুদ ও সালাম পেশ করেছেন। এরপর লেখক বলেন-
“২০২১ সালের বইমেলায় ‘ম্যাসেজ: আধুনিক মননে দ্বীনের ছোঁয়া’ শিরোনামের বইটি বাংলা ভাষায় আমার প্রথম কাজ…। আমি ক্ষুদ্র মানুষ। জ্ঞান-দুনিয়ায় দুর্বল ছাত্র…নিজের সীমাবদ্ধতা জানা সত্ত্বেও উম্মাহ তরুণদের নিয়ে কেন জানি পেরেশানিতে ভুগি…তাদের লাইফস্টাইল, চিন্তাধারা ও কর্মতৎপরতা বেশ বুঝতে পারি। তাদের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ, কথার টোন, মনস্তাত্ত্বিক অবস্থানকে উপলব্ধি করতে পারি। মূলত আমার ক্ষুদ্র কর্মতৎপরতা এই তরুণদের ঘিরেই…। গত সাত বছরের দাওয়াতি অভিযাত্রায় অনেক শ্রোতা আমার লিখিত বইয়ের আবেদন করেছেন…আর লেখনি মানেই স্থায়ী রেকর্ড- এই ভাবনা থেকেই লেখালিখির আগ্রহটা তৈরি হয়…।
এই বই বা গ্রন্থে একেবারে ঐতিহাসিক ও এক্সক্লুসিভ কোনো তথ্য হয়তো পাবেন না; এ আমার জ্ঞানের ক্ষুদ্রতা…। বইটিতে কুরআন-সুন্নাহর উদ্ধৃতি, সাহাবিদের বক্তব্য, সালফদের কথা, বিভিন্ন শিক্ষণীয় ঘটনা, ক্লাসিক্যাল ও আধুনিক স্কলারদের রেফারেন্সের পাশাপাশি আমার নিজস্ব একান্ত কিছু চিন্তা-ভাবনা উপস্থাপিত হয়েছে…। বাংলাভাষী পাঠকদের নিকট ইসলামের সৌন্দর্য, মূল তাৎপর্য, স্পিরিট ও মধ্যমপন্থার, শিক্ষা তুলে ধরতে…’ম্যাসেজ’ বইটিতে কিছু বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আধুনিক মননে দ্বীনের ছোঁয়া লাগাতে বইটিকে মহান আল্লাহ কবুল করুন। আমিন।”
বইটি নিয়ে পাঠকদের মন্তব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় খুবই মনোমুগ্ধকর ছিল৷ পাঠকের আগ্রহ দেখে প্রকাশ ও লেখক সবাই বিমোহিত হয়েছেন। এখন বইটি নিয়ে প্রকাশের অভিব্যক্তি তাঁর নিজের ভাষায় সংক্ষেপে তুলে ধরছি৷
প্রকাশক বলেন- আমার দৃঢ় বিশ্বাস বিশ্বাস, গ্রন্থটি লাখো পাঠকের হাতে পৌঁছাবে, ইনশাআল্লাহ…বইটিতে এমন কোনো এক্সক্লুসিভ বিষয় নেই- যা অতীতে কখনো আলোচিত হয়নি…মুসলিম মননে খুব পরিচিত কিছু কথামালা এখানে নতুন করে তুলে ধরা হয়েছে। গ্রন্থটির বিশেষত্ব হলো-সহজ কথা সহজ করে বলার নান্দনিকতা। প্রয়োজনীয় কথামালার প্রাঞ্জল ও অনুপম উপস্থাপনার বিশেষ গুণ সবার থাকে না। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তরুন আলিম, চিন্তক ও গবেষক মিজানুর রহমান আজহারী সাহেবকে এই গুণে গুণান্বিত করেছেন, আলহামদুলিল্লাহ…।
গ্রন্থটির নাম- ‘ম্যাসেজ : আধুনিক মননে দ্বীনের ছোঁয়া‘ এখানে ১২টি ম্যাসেজ জাতির সামনে তুলে ধরা হয়োছে- যা এই সময়ে, এই প্রজন্মের জন্য জরুরি। গ্রন্থটির ভাষা ও বিন্যাস এমনভাবে সাজানো হয়েছে, যেন সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ পড়তে স্বস্তি অনুভব করে। ভাষার কাঠিন্য সতেচনভাবেই পরিহার করা হয়েছে। আরবি টেক্সট কমিয়ে আয়াত ও হাদিসের বাংলা অর্থ বেশি ব্যবহার করা হয়েছে….।”
কুরআনের মা নামক শিরোনামে বইটিতে শায়খ মিজানুর রহমান আজহারী খুবই গুরুত্বপূর্ণ কিছু বার্তা এবং সূরার তাফসির তুলে ধরেছেন। সূরা ফাতিহা যে মূলত কুরআনের সারসংক্ষেপ, আল্লাহর শেখানো একটি মহা প্রতিষেধক প্রার্থনা ও ঔষধ এ সম্পর্কে তিনি খুবই চমৎকার কিছু আলোচনা রেখেছেন।
সূরা ফাতিহার গুরুত্ব ও তাৎপর্য, সূরা ফাতিহার বিশেষণ, সূরাটির গঠনবিন্যাস ও বিষয়বস্তু সম্পর্কে পবিত্র কুরআন, ছহিহ হাদিস এবং সালফে সালেহীনদের আলোকে এক মহিমান্বিত তাফসির ব্যাখ্যা করেছেন। সুবহানআল্লাহ্। নিসন্দেহে প্রত্যেক মুসলমানদের জন্য সূরা ফাতিহা সম্পর্কে স্পষ্ট ভাবে অবহিত হওয়া জরুরী, যা আপনি ম্যাসেজ বইয়ে কিছুটা হলেও পেয়ে যাবেন, ইনশাআল্লাহ।
একজন মুমিনের জন্য তার শ্রেষ্ঠ হাতিয়ার হলো দুআ। দুআর মাধ্যমে এমন কিছু অসামান্য বিষয়বস্তু জয় করে নেওয়া যায়। যা সাধারণ কোনো হাতিয়ার দিয়ে অর্জন করা সম্ভব হয় না।
লেখক তাঁর ম্যাসেজ নামক গ্রন্থে মুমিনের হাতিয়ার শিরোনামে এ সম্পর্কে অত্যন্ত চমৎকার করে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন৷ দুআর শক্তি, দুয়া মনের চাওয়া পূরণ করে, দুআ কখনো মিস হয় না, দুআ করা নবিদের চরিত্র, বিশ্ব নবী (সা.) এর দুআ, দুআয় কী চাইব, দুআর আদবসমূহ, দুআ কবুলের সময়সমূহ, দুআ কবুলের শর্তাবলি, যাদের দুআ দ্রুত কবুল হয়, ইত্যাদি বিষয়বস্তু নিয়ে মুমিনের হাতিয়ার নামক শিরোনামে লেখক খুবই চমৎকার কিছু কথা উপস্থাপন করেছেন৷
গ্রন্থটিতে লেখকের চমৎকার সহজ সরল শব্দত্ত্ব মুমিনের হাতিয়ার নামক অনুচ্ছেদকে সত্যিই নান্দনিকতা ও পূর্ণতা দান করেছে বলতে হবে। মাশাআল্লাহ।
শিষ্টাচার মানবজীবনে অতিগরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। একজন ব্যক্তির শিষ্টাচার দেখে তার বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জানা যায়৷ আর মানবজীবনের জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ শিষ্টাচার হলো পবিত্র কুরআনের দেওয়া শিক্ষা ও রাসূল (সা.) এর আদর্শ। লেখক তাঁর বইটির এই অংশে একজন মুমিনের আদব-কায়দা কেমন হবে, পারস্পরিক সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্ববোধ কেমন হবে, অন্যের নিন্দা না করা, মন্দ নামে না ডাকা, মন্দ ধারণা পোষন না করা, অন্যের গোপন বিষয়ের পেছনে না লাগা, গিবত করা থেকে বিরত থাকা, ইমান অর্জনের ওপর থাকা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে এই অনুচ্ছেদে খুবই সুন্দর আলোচনা করেছেন ।
পবিত্র কুরআনের আলোকে একজন মুমিন জীবনের প্রকৃত শিষ্টাচারের উপস্থাপনা এই অনুচ্ছেদের শিরোনামকে সার্থক করেছে। সুবহানাল্লাহ।
শায়েখ মিজানুর রহমান আজহারী তাঁর বইটিতে হযরত উমর (রা.) এর আদর্শ তুলে ধরেছেন। যা প্রত্যেক মুমিনের জীবন শ্রেষ্ঠ আদর্শের অনুপ্রেরণা ও সাহসীকতা প্রমান। হযরত উমর (রা.) এর ইসলাম গ্রহন, তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব, তাঁর তাকওয়া ও খোদাভীতি, দিব্যদৃষ্টি, ব্যক্তিত্ব, তাঁর অভিমতের সমর্থনে কুরআনের আয়াত,সংস্কারকর্ম ইত্যাদি সম্পর্কে অত্যন্ত চমৎকার করে আলোচনা করা হয়েছে।
এছাড়া উমর দারাজ দিল নামক অনুচ্ছেদে বা শিরোনামে উমর (রা.) এর আত্মীয়করণ ও স্বজনপ্রীতি, ন্যায়পরায়ণতার চিত্র এবং তাঁর শাহাদাতবরণ ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে অনুপ্রেরণা মূলক বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে।
ম্যাসেজ বইটির এই অনুচ্ছেদে লেখক মুনাফিকের চরিত্র সম্পর্কে আলোচনা করেছেন৷ লেখক তাঁর গ্রন্থে ইতিহাসের আয়নায় মুনাফিকদের আত্মপ্রকাশ, মুনাফিকদের প্রকারভেদ, মুনাফিকদের সরদার, মুনাফিকের আলামত, কাফিরদের সাথে মুনাফিকের অন্তরঙ্গতা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে চমৎকার আলোচনা করেছেন।
মূলত মুসলিম উম্মাহর সবচেয়ে বড় ফাটল এই মুনাফিকদের জন্যই হয়েছে। তারা সর্বদাই সমাজে, রাষ্ট্রে, ব্যক্তি জীবনে অশান্তি ও ফিতনা ফাসাদের কারিগর বলা চলে৷ আমাদের সকলকে মুনাফিকের এই সকল বিষয় সম্পর্কে তাই জেনে নেওয়াও খুবই জরুরি। লেখক তাদের ডাবল স্টান্ডার্ড বলে অবহিত করেছেন।
জীবন এক বিচিত্র রূপ, নানা বর্ণ ও গন্ধে পূর্ণতা পায় এই জীবনের। আছে সুখ ও শান্তি। কিন্তু সুখ বা শান্তি শুরু বিলাসবহুলতায় নয়। বরং প্রকৃত শান্তি যে কষ্টের মাঝেও রয়েছে এবং এখান থেকেই সফলতার যাত্রা শুরু হয় লেখক তাঁর গ্রন্থে এ কথাই বুঝানোর চেষ্টা করেছেন৷।
জীবনে কখনো হতাশ না হওয়া, জীবনের লক্ষ্য, মুসলিম চোখে বিপদাপদ, আল্লাহর উপর অবিচল বিশ্বাস রাখা, আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল করা, যা আছে তা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকা, শয়তানের ধোকা থেকে আত্মারক্ষা করা, কষ্টের মাঝে শান্তি রয়েছে ইত্যাদি বিষয়ের উপর লেখক তাঁর বইয়ের উক্ত অনুচ্ছেদে অত্যন্ত চমৎকার করে আলোচনা করেছেন৷ সুবহানাল্লাহ।
রাগকে মানুষের জীবনের তাত্ত্বিক বিশেষণের অংশ বিশেষ বলা যেতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে রাগের যেমন রয়েছে কিছু ভালোদিক, ঠিক তেমনি এর মন্দ দিকও বেশ জোরালো। রাগের মধ্য দিয়েই অনেক বড় বড় অন্যায় কাজের সূচনা হয়ে থাকে, যার পরিনতি হয়ে থাকে অত্যন্ত ভয়াবহ।
তাই আলোচ্য অনুচ্ছেদে লেখক রাগের ক্ষতিকর দিক, রাগের নিয়ন্ত্রণ করার উপায় সম্পর্কে পবিত্র কুরআন ও সহিহ হাদিসের আলোকে চমৎকার করে উপস্থাপন করেছেন।
মানুষকে আল্লাহ তায়ালা শুধু সৃষ্টি করে দুনিয়াতে ছেড়ে দেননি। বরং সঠিক ভাবে জীবনযাপনের এবং হেদায়েতের জন্য দিয়েছেন শাশ্বত জীবনবিধান আল-কুরআন। দিয়েছেন আদর্শ মহামানব নবী ও রাসূলগণ। দুনিয়াতে যত মানুষ এসেছে তাদের সবার জন্যই আল্লাহ তায়ালা জীবনবিধান দিয়েছেন।
কিন্তু সর্বশ্রেষ্ঠ জীবনবিধান দেওয়া হয়েছে পবিত্র কুরআনের মাধ্যমে। তাইতো আমরা মুহাম্মদ (সা.) এর উম্মত হয়ে সম্মানিত ও ধন্য হয়েছি। আলোচ্য অনুচ্ছেদে লেখক ইসলামই যে একমাত্র গ্রহনযোগ্য ধর্ম তা ব্যাখ্যা করেছেন।
এছাড়াও ইসলামের দাওয়াত, আমরা কেন দাওয়াতি কাজ করবো এ সম্পর্কে বিস্তারিত চমৎকার আলোচনা করেছেন। লেখক তাঁর বইয়ে শাশ্বত জীবনবিধান অনুচ্ছেদে ইসলাম যে সর্বশ্রেষ্ঠ জীবনবিধান তা তিনি আরো একবার প্রমান করেছেন।
ইসলামের সৌন্দর্য প্রতিটা পদক্ষেপে খুবই স্পষ্ট মহিমান্বিত ও উজ্জ্বল। একজন পিতামাতার জন্য সন্তান প্রতিপালনে ইসলামি দিকনির্দেশনাও তাই খুবই স্পষ্ট।
সন্তানের জন্য ভালো মায়ের ব্যবস্থা করা, সন্তানের জন্য ভালো পিতা হওয়া, নেক সন্তানের জন্য দুআ করা, সন্তানের সুন্দর নাম রাখা, ইসলামি সংস্কৃতি শেখানো জবাবদিহিতা শেখান, বাচ্চাদের মতামতে গুরুত্ব দেওয়া, বদদুআ দেওয়া থেকে বিরত থাকা ইবাদতের শিক্ষা দেওয়া, বাচ্চাদের উপহার দেওয়া, ভালো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা দেওয়া, সময় মত বিয়ে দেওয়া ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে উপস্থাপন করা হয়েছে। তরুণ প্রজন্মের জন্য লেখকের এই অনুচ্ছেদ অত্যন্ত চমৎকার অনুপ্রেরণা মূলক এক উপস্থাপনা।
মুসলিম জাতির ঐক্যের সূতিকাগার হলো মসজিদ। এখানে সকল প্রকার ধনী-গরীবের মাঝে কোনো ভেদাভেদের স্থান নেই। সকলেই সকলের সাথে কাধে কাধ মিলিয়ে, পায়ে পা মিলিয়ে আল্লাহর ইবাদত করে থাকে।
লেখক তাঁর বইয়ের আলোচ্য অনুচ্ছেদে সমাজে মসজিদের ভুমিকা, মসজিদের সাথে সম্পর্ক রাখা,মসজিদে আবাদ করার মাধ্যম, মসজিদের আদব সম্পর্কে বিস্তারিত চমৎকার আলোচনা করেছেন। এছাড়াও মুসলিম উম্মাহর শ্রেষ্ঠ তিন মসজিদ, মসজিদুল হারাম, মসজিদে নববি, মসজিদুল আকসা সম্পর্কে আলোচনা করেছেন।
তাছাড়াও মসজিদমুখী প্রজন্ম গড়ে তুলতে করণীয়, আলোকিত সমাজ বিনির্মানে মসজিদ যেমন হওয়া উচিত, বৃহৎ পরিসরে মসজিদের কাঠামো নির্মাণ, যোগ্য ইমাম নিয়োগ, মসজিদে পাঠাগার, চিকিৎসা ও দাওয়া সেন্টার প্রতিষ্ঠা এবং মসজিদকেন্দিক নানামুখী কার্যক্রম সম্পর্কে অতন্ত্য চমৎকার স্বাক্ষরতার প্রমান রেখেছেন। সুবহানআল্লাহ।
আলোচ্য অনুচ্ছেদে লেখক জান্নাত লাভের জন্য খাদ্য বা রিজিকের বরকত এবং হলাল হারামের গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। পাশাপাশি রিজিক কি, হালাল-হারামের মূলনীতি, হালাল অসীম আর হারাম সসীম, যে তিন কারনে কোন বস্তু হারাম করা হয়, জরুরি প্রয়োজনে কখন হারাম কে হালাল করা যায় ইত্যাদি বিষয় নিয়ে একটি চমৎকার তথ্যবহুল অনুচ্ছেদ রচনা করেছেন।
শায়েখ মিজানুর রহমান আজহারী তাঁর বহুল আলোচিত বইটির তিনি ইতি টেনেছেন এক মহাসত্যের অধ্যায় দিয়ে। হোক মুসলিম, হোক অমুসলিম সবাই বিশ্বাস করে একদিন এই পৃথিবী থেকে তাকে বিদায় নিতে হবে।
কিন্তু শেষ বিদায়ের পর আমাদের জন্য যে এক অনন্ত কালের জীবন রয়েছে, সেখানে আমাদের কৃতকর্মের হিসেবে নেওয়া হবে, ভালো কাজের জন্য জান্নাত ও পাপের জন্য জাহান্নাম নির্ধারিত রয়েছে। এ সম্পর্কে মানুষ বড্ড গাফেলতির পরিচয় দিয়ে থাকে। মানুষ এমন ভাব নিয়ে চলে যেন সে কখনই মৃত্যু বরণ করবে না। মনে হয় দুনিয়াই তার আসল স্থান।
কিন্তু পবিত্র কুরআনের মহান আল্লাহর তায়া’লা প্রতি পৃষ্ঠার ক্ষনে ক্ষনে এই মহাসত্য সম্পর্কে আমাদের সতর্ক করেছেন। তবুও খামখেয়ালি মানবসমাজ তা বুঝতে চায় না, আমোদ-প্রমোদ ভাবেই দুনিয়াতে বিরাজ করতে থাকে।
লেখক আলোচ্য অনুচ্ছেদে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসীদের বিদায়, অবিশ্বাসীদের বিদায়, বারজাখের প্রথম স্টেশন, পরকালের প্রথম সাওয়াল, শেষ বিদায় সম্পর্কে পবিত্র কুরআন ও হাদিসের আলোকে চমৎকার কিছু বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন। যা মানবজাতির জন্য জানা অতিজরুরি। সর্বশেষ লেখক একটি মোটিভেশান শিক্ষনীয় বিদায়ী গল্পের মাধ্যমে সাবইকে বিশেষ এক ম্যাসেজ দিয়ে গ্রন্থের ইতি টেনেছে। সুবহানাল্লাহ।
শায়েখ মিজানুর রহমান আজহারী রচিত ‘ম্যাসেজ: আধুনিক মননে দ্বীনের ছোঁয়া’ গ্রন্থটি আমাকে অভিভূত করছে। মহান আল্লাহর তায়া’লা লেখকের ভাষার মাধুর্যতায় ও নান্দনিকতায় তাকে ধন্য করেছেন, এটা আমি বিশ্বাস করি। ফলে ম্যাসেজ বইয়ের প্রতিটি অনুচ্ছেদ পাঠকদের চিন্তাজগতে অনুপ্রেরণা, সচেতনতা ও পরিবর্তশীলতার সাক্ষী হিসেবে চিরপ্রতীয়মান হবে, ইনশাআল্লাহ। ইতোমধ্যে আপনি বইটি পড়ে থাকলে আলহামদুলিল্লাহ, না পড়লে খুব দ্রুত সংগ্রহ করে পড়ে নিন। ধন্যবাদ!
খুব গুছিয়ে লিখেছেন। এগিয়ে যান।
আলহামদুলিল্লাহ,ইনশাআল্লাহ,ধন্যবাদ ভাই।