জলপ্রপাত ভ্রমন: কর্মব্যাস্ত দৈনন্দিন যান্ত্রিক জীবনে যন্ত্রের মতো প্রতিদিন একই কাজ করতে করতে অতিষ্ঠ হয়ে যাওয়া প্রতিটি মানুষের আকাঙ্ক্ষা একটুখানি অবসর। আর অবসর পেলেই ইচ্ছে করে পরিবার অথবা বন্ধুদের সাথে একটুখানি বেড়িয়ে আসি। বেড়িয়ে আসা বলতে কিন্তু বাড়ির পাশের চায়ের দোকান থেকে ঢু মেরে আসা নয়। ইচ্ছে করে শহরের কোলাহল ছাড়িয়ে একটুখানি প্রকৃতির মধ্যে বিলীন হওয়া। অনেকেই দেশের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানগুলোতে ভ্রমণে যায়। কেউবা আবার দেশের সীমানা ছাড়িয়ে বিদেশ ভ্রমণে ও যায়।
আবার অনেকের শখই হলো বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করে বেড়ানো। মধ্যা কথা হলো ভ্রমণের সুযোগ আর সময় পেলে সবাই বেড়িয়ে পরে ঘুরতে। তবে এক একজনের ভ্রমণের রুচি এক এক রকম, কারো পাহাড় ভালো লাগে, কারো সমুদ্র আবার কারো ভালো লাগে জলপ্রপাত বা ঝর্ণা।
আমাদের বাংলাদেশেও অনেকগুলো মনোরম জলপ্রপাত আছে। প্রতি বছরই অসংখ্য পর্যটক এই জলপ্রপাত গুলো দেখতে ভিড় জমায়।আপনি যদি জলপ্রপাত বা ঝর্ণা প্রেমি হন তাহলে সুযোগ হলে আপনিও ঘুরে আসতে পারেন এই জলপ্রপাত গুলো থেকে। তবে জলপ্রপাত ভ্রমণে যাবার আগে অবশ্যই সেই জায়গা ও তার আশপাশের প্রকৃতি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে যাবেন।
আপনাদের সুবিধার্থে বাংলাদেশের অন্যতম চারটি জলপ্রপাত বা ঝর্ণা সম্পর্কে জানাবার ছোট্ট প্রয়াসে আজকের এই আলোচনা। জলপ্রপাতে ভ্রমণের পূর্বে এটা জেনে নেওয়া প্রয়োজন যে জলপ্রপাত কি?
আর্টিকেলে যা থাকছেঃ
ভূপৃষ্ঠের উপর দিয়ে প্রবাহিত জলধারা প্রাকৃতিকভাবে যখন লম্ব বা খাড়াভাবে প্রবলবেগে নিচেরদিকে নিপতিত হয় তখন তাকে জলপ্রপাত বলে।
বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ জলপ্রপাত হিসেবে মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত সর্বাধিক পরিচিত। এই জলপ্রপাতটি সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা উপজেলায় অবস্থিত।
প্রায় ১৬২ -১৭০ (আরোও বেশি হতে পারে ) ফুট উঁচু পাহাড়ের উপর থেকে জলধারা এর গা বেয়ে অবিরাম ধারায় স্বশব্দে নিচে গড়িয়ে পড়ে। এই যে পাহাড়টির গা বেয়ে জলধারা গড়িয়ে পড়ছে এ পাহাড়টি সম্পূর্ণ পাথরের তৈরি।
এই পাহাড়টির উপর দিয়ে বয়ে চলেছে গঙ্গামারা ছড়া। আর এই গঙ্গামারা ছড়া মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত হিসেবে নিচে পরে হয়েছে মাধবছড়া। সাধারণত একটি মূল ধারা দিয়ে জলরাশি নিচে পরতে থাকে তবে বর্ষাকালে মূল ধারার পাশ দিয়ে আরেকটি ছােট ধারা তৈরি হয় এবং ভারী বর্ষায় দুটো ধারা একসাথে মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। অবিরাম পতনের ফলে নিচে কুণ্ডের সৃষ্টি হয়েছে। এই কুন্ডের মাঝখানে অনেক গভীর।এই মাধবছড়ার পানি প্রবাহিত হতে হতে গিয়ে মিশেছে হাকালুকি হাওড়ে।
মাধবকুন্ড জলপ্রপাতটির চারদিকে রয়েছে বিশাল বনভূমি। রয়েছে দিগন্তজোড়া চায়ের বাগান। এছাড়াও কমলা, লেবু, পান ও সুপারির বাগান। এই জলপ্রপাতের কাছাকাছিই খাসিয়া নৃগোষ্ঠীর বসবাস। পাহাড়ের গায়ে তাদের জুম চাষের দৃশ্যও চোখে পরে।
এই জলপ্রপাতটির, মাধবকুণ্ড নামকরণ সম্পর্কে বেশ কিছু মতামত আছে। কথিত আছে যে, রাজা গােবর্ধন এই পাহাড়ে একটি বিশ্রামাগার নির্মান করতে চেয়েছিলেন। বিশ্রামাগার তৈরির কাজ শুরু করলে সেখানে, ধ্যানমগ্ন অবস্থায় মাটির নিচে একজন ঋষিকে দেখতে পান।
তখন তিনি ওই ঋষির সেবা ও পদবন্দনা করলে ঋষি তাকে নানা উপদেশ দেন এবং বলেন মধুকৃষ্ণা ত্রয়ােদশ তিথিতে যেন তাকে এ কুণ্ডে বিসর্জন দেন। ঋষির আদেশ মতো রাজা তাকে এই কুন্ডে বিসর্জন দেন।
ঋষি বিসর্জিত হওয়া মাত্র তিনবার মাধব, মাধব মাধব নামে দৈববাণী শোনা যায়। সম্ভবত এ থেকেই এই জলপ্রপাতটির নামকরণ মাধবকুণ্ড হয়। আবার কারও কারও মতে, মহাদেব বা শিবের পূর্বনাম মাধব এবং তার, নামানুসারে এই জলপ্রপাতের নাম মাধবকুণ্ড রাখা হয়। এ কুণ্ডের পাশেই স্থাপন করা হয়েছে একটি শিবমন্দির।
এটির অবস্থান ২৪° ৩৮’২১”উত্তর ও ৯২° ১৩’১৬ পূর্ব এবং আনুমানিক ১৬২-১৭০ (আরোও বেশি হতে পারে) ফুট উঁচু। রাজধানী শহর ঢাকা থেকে প্রায় ৩৫০কিমি দূরে।
যদি বাসে চড়ে যেতে চান তাহলে সবচেয়ে সহজ পথ হল বিয়ানীবাজার গামী যেকোনো পরিবহনে করে সরাসরি কাঠালতলী বাজার চলে আসা। সেখান থেকে রিজার্ভ সিএনজি (১৫০-১৮০) টাকা বা জনপ্রতি ২০-২৫ টাকা ভাড়া দিয়ে সরাসরি মাধবকুন্ড।
আর যদি ঢাকা থেকে ট্রেনে যেতে চান তাহলে সিলেটগামী আন্তঃনগর ট্রেনে চড়ে মৌলভীবাজার এর কুলাউড়া স্টেশনে নামতে হবে আপনার। শ্রেণিভেদে ভাড়া ২০০ – ৮০০ টাকা পর্যন্ত এবং সময় লাগবে ৬-৭ ঘন্টা।
কুলাউড়া স্টেশন থেকে কাঠালতলী বাজার সেখান থেকে সিএনজিতে করে মধবকুন্ড যেতে হবে। এইক্ষেত্রে আপনি সিএনজি রিজার্ভ করে (৪০০-৬০০ টাকা) বা লোকাল ভাড়ায় পৌছে যেতে পারেন মাধবকুন্ড।
মাধবকুন্ডে আগত পর্যটকদের থাকার জন্য রয়েছে জেলা পরিষদের ২টি বাংলো ও ২টি আবাসিক হোটেল। থাকার ঝামেলা এড়াতে অগ্রিম বুকিং দিয়ে রাখতে পারবেন সেখানে।
এছাড়াও সিলেট , শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার ও মাধবকুণ্ডের আসেপাশে থাকার জন্য রয়েছে বেশকিছু অনাবাসিক হোটেল বা কটেজ আছে চাইলে এখানেও থাকতে পারেন। এসকল জায়গায় রাত্রি যাপন করার একটা বড় সুবিধা হলো পরদিন যেকোন জায়গায় আপনার যাত্রা সহজ হবে।
মাধবকুণ্ডে মাঝারি মানের অনেক রেস্টুরেন্ট ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে কিন্তু সেখানে খাবারের দাম একটু বেশী। তাই বাইরে থেকে খাবার কিনে নিয়ে যেতে পারেন কিংবা সিলেট ফিরে জিন্দাবাজার এলাকায় পানসী, পালকি কিংবা পাঁচ ভাই রেস্টুরেন্টের প্রায় ৩০ রকম ভর্তার স্বাদ চেখে দেখতে পারেন। এছাড়াও মৌলভীবাজার বা শ্রীমঙ্গল শহরেও অনেক ভালো মানের খাবার হোটেল আছে।
যদি হাতে পরিমিত সময় আর পরিকল্পনা নিয়ে মাধবকুন্ড জলপ্রপাত ভ্রমণে বের হন তাহলে মাধবকুন্ড জলপ্রপাত সহ মৌলভীবাজারের আরও কিছু দর্শনীয় স্থানে ভ্রমণ করতে পারেন।
মধবকুন্ড জলপ্রপাত ভ্রমণের জন্যে উপযুক্ত সময় হলো শীতকাল। যদিও শীতকালে ঝর্ণাতে তেমন পানি থাকে না। তবে যদি বর্ষাকাল বা তার আশেপাশের সময়ে মাধবকুন্ড জলপ্রপাত ভ্রমণ করেন তখন ঝর্ণায় অনেক পানি থাকবে।
এছাড়াও সারা বছরই দেশ ও দেশের বাইরে থেকে অসংখ্য পর্যটক এসে ভিড় জমায় এই মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত দেখতে। এখানে আগত পর্যটকদের জন্য রয়েছে অনেক রকম সুযোগ-সুবিধা।
তবে পর্যটকদের থাকা ও খাওয়ার আরও কিছু সুবিধা বৃদ্ধি করা গেলে পর্যটকের আগমন আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও সরকার এর দৃষ্টিপাত একান্ত কাম্য।
মনোরম এই জলপ্রপাতটি সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার রাজকান্দি সংরক্ষিত বনাঞ্চলের কুরমা বনবিট এলাকায় অবস্থিত। ২০১০ সালে পর্যটন গাইড শ্যামল দেববর্মা এবং একদল পর্যটক এই হাম হাম জলপ্রপাতটি আবিষ্কার করেন।যদিও স্থানীয় লোকদের বক্তব্য তারা আগে থেকেই এই জলপ্রপাতের অস্তিত্বের কথা জানতেন।
দুর্গম জঙ্গল বেষ্টিত এই হামহাম জলপ্রপাতটির উচ্চতার সঠিক পরিমাপ এখনো জানা যায়নি। তবে ধারণা করা হয় যে, এর উচ্চতা ১৪০-১৬০ ফুটের মধ্যে।উচ্চতার দিক থেকে মাধবকুণ্ড জলপ্রপাতের পরে হামহাম জলপ্রপাতের অবস্থান হলেও এর ব্যাপ্তি মাধবকুণ্ড জলপ্রপাতের দ্বিগুন এরও বেশি।
এই হাম হামের জলপ্রপাতটির রয়েছে দুইটি ধাপ, উপরের ধাপটি থেকে পানি গড়িয়ে পড়ছে মাঝখানের ধাপে, এবং সেখান থেকে আবার পানি পড়ছে নিচের অগভীর খাদে। বর্ষাকাল হলো ঝর্ণা বা জলপ্রপাত দেখতে যাবার উপযুক্ত সময়।
বর্ষাকাল হলো ঝরণার যৌবন। এ সময় বিশাল ব্যাপ্তিতে জলরাশি গড়িয়ে পড়ে। কিন্তু শীতে তা সংকির্ন হয়ে মাত্র একটি ঝরণাধারায় এসে পৌছায়।
পাহাড় থেকে গড়িয়ে পড়া এই পানি দূর্গম জঙ্গলের ভিতরে ছড়া তৈরি করে এঁকেবেঁকে বয়ে চলেছে। জলপ্রপাতের কাছে পৌঁছাতে হলে এরকম ছোট-বড় বিভিন্ন আকারের ছড়া এবং জঙ্গলের উঁচু নিচু পথ পেরিয়ে পৌঁছতে হবে।
হামহাম জলপ্রপাতটি আবিস্কৃত হয়েছে খুব বেশি দিন হয়নি তবে এর এরূপ নামকরণের উৎপত্তি সম্পর্কে এখনো পরিষ্কার ভাবে কিছু জানা যায়নি। কেউ কেউ বলেন,‘হাম্মাম’ শব্দটি থেকে এর উৎপত্তি।
‘হাম্মাম’ শব্দের অর্থ গোসলখানা। আবার কারো মতে সিলেটের আঞ্চলিক শব্দ ‘আ-ম আ-ম’ থেকে এর উৎপত্তি। সিলেটের আঞ্চলিক ভাষায় ‘আ-ম আ-ম’ দ্বারা পানির তীব্র শব্দকে বোঝায়।অনেকের ধারণা ‘আ-ম আ-ম’ শব্দটিই লোকমুখে পরিবর্তিত হয়ে হামহাম হয়েছে।
স্থানীয় লোকেরা এই জলপ্রপাতটিকে চিতা ঝর্ণা বা চিতা জলপ্রপাত বলে ডাকে। একসময় নাকি এই জঙ্গলে প্রচুর পরিমানে চিতা বাঘ পাওয়া যেত তাই এই জলপ্রপাতটির এমন নামকরণ হয়েছে।
জলপ্রপাতটি আবিষ্কারের এতদিন পরেও এখানে যাতায়াতের জন্য সরকারিভাবে তেমন কোন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। তাছাড়া ঝরণাকে ঘিরে কোনো সরকারি অবকাঠামো তৈরি করা হয়নি।
জলপ্রপাতির কাছ অবধি পৌঁছাতে হলে স্থানীয় অধিবাসীদের কাউকে গাইড বা পথপ্রদর্শক হিসেবে নির্ধারণ করতেই হবে। নাহলে এই গহীন জঙ্গলে পথ হারানো অস্বাভাবিক কিছু নয়।
তাছাড়া এই জঙ্গলের মধ্য দিয়ে বয়ে চলা ছড়া গুলো কোথাও কোথাও চোরাবালু তৈরি করেছে। হামহাম জলপ্রপাতে যাবার পথে ছোট-বড় অনেক টিলা চোখ পরবে।বর্ষাকালে হামহম এর পথে আরেকটি অনুচ্চ ছোট ঝরণার দেখা পাওয়া যায়।
চলতি পথে চোখে পরবে ত্রিপুরা আদিবাসীদের গ্রাম এবং চম্পারায় চা বাগান।মনোরম এই চা বাগান থেকে হামহামের দূরত্ব প্রায় ৭ কিলোমিটার। চা বাগান আর সারি সারি গাছের সবুজের মেলা আপনার মন ভালো করে দেবে আর ক্লান্তিও কমিয়ে দেবে।
হামহম জলপ্রপাত ভ্রমণের মূল যাত্রা শুরু হবে কলাবনপাড়া থেকে। কারণ এই পর্যন্তই গাড়ি নিয়ে যাওয়া যাবে। এর পর থেকে শুরু হবে পদযাত্রা অর্থাৎ পায়ে হাঁটা পথ।গহীন এ জঙ্গলের বিভিন্ন জায়গায় রয়েছে ছোট-বড় কিছু চোরাবালি মাঠ, কাদামাটি, ছড়া আর বেশ কয়েকবার পাহাড়ে উঠানামা করতে হয় কিন্তু এর অধিকাংশ জায়গাতেই নেই কোনো সরকারি নির্দেশীকা।
তাছাড়া সাপ,ব্যাঙ,জোঁক,বানর,মশা তো আছেই।এমন জঙ্গলে পথ হারাতে না চাইলে একজন গাইড নিয়ে যাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।স্থানীয় অনেকই গাইড হিসেবে কাজ করে তাদের কাউকে সাথে নিয়ে নিতে পারেন।খরচ ৪০০-১০০০টাকা হতে পারে।
বর্ষা মৌসুমে জোঁকের উপদ্রব অনেক বেশি থাকে তাই সাথে লবন আর সরিষার তেল রাখা ভালো, আর সাথে করে খাবার ও পানি নিতে ভুলবেন না কিন্তু কারণ আশেপাশে খাবারের দোকান নেই বললেই চলে।
দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকেই হামহাম জলপ্রপাত দেখতে যেতে চান না কেন আপনাকে প্রথমে যেতে হবে শ্রীমঙ্গলে।
যদি ঢাকা থেকে বাসে করে হামহাম যেতে চান তাহলে শ্যামলী, হানিফ ও এনা বা শ্রীমঙ্গলগামী যেকোনো বাসে সরাসরি শ্রীমঙ্গলযেতে পারেন। ভাড়া পড়বে আনুমানিক ৪০০ -৭০০ টাকা।সময় লাগতে পারে প্রায় চার থেকে পাঁচ ঘন্টা।
যদি ঢাকা থেকে ট্রেনে করে যেতে চান তাহলে কমলাপুর বা বিমান বন্দর রেলওয়ে স্টেশান হতে পারাবত, জয়ন্তিকা বা উপবন এক্সপ্রেস বা আন্তঃনগর ট্রেনে করে শ্রীমঙ্গল আসা যায়। শ্রেনীভেদে ভাড়া আনুমানিক ৩০০-১০০০ টাকা। ট্রেনে শ্রীমঙ্গলযেতে সময় লাগে প্রায় সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা।
এরপর শ্রীমঙ্গল থেকে গাড়ী অথবা সিএনজি ভাড়া করে সরাসরি কলাবনপাড়া চলে যেতে হবে ।শ্রীমঙ্গল থেকে সিএনজি তে কলাবনপাড়া আপ ডাউন ভাড়া ১২০০ – ১৮০০ টাকার মতো। আপ ডাউন ভাড়া বলছি কারণ শ্রীমঙ্গল থেকে কলাবনপাড়া যাবার জন্য গাড়ি পেলেও ফেরার সময় গাড়ি পাওয়া বেশ মুসকিল তাই যেই গাড়িতে করে যাবেন সেটাতে করেই ফেরার জন্য ঠিক করবেন।
শ্রীমঙ্গল থেকে কলাবনপাড়া যেতে সময় লাগবে দেড় থেকে দুই ঘন্টা রাস্তা খারাপ হলে কিছু সময় বেশি ও লাগতে পারে। এবং কলাবনপাড়া থেকে হামহামে যেতে- দুই -তিন ঘন্টা সময় লাগে। তবে পাহাড়ি রাস্তায় চলার অভ্যাস না থাকলে আরো বশি সময় লাগতে পারে। তাই শ্রীমঙ্গল থেকে ভোর বেলায় রওয়ানা হওয়াই ভালো।
কলাবনপাড়া থেকে হামহাম যাওয়া যায় দুই পথে। ঝিরি পথ ও পাহাড়ি পথ। ঝিরি পথে একটু সময় বেশি লাগে।তবে এই পথে গেলে পাহাড়ি পথের সৌন্দর্য উপভোগ করা যায় এবং পাহাড়ি পথের চেয়ে কষ্ট কম হয়।
হাম হাম ঝর্নার আশেপাশে থাকার মতো কোন সরকারি ব্যবস্থাই নেই তাই খুব সকালে রওনা দিয়ে সন্ধ্যার আগে ফিরে আসাই ভালো। তবে যদি কোনো আদিবাসী পরিবারকে রাজি করাতে পারেন তাহলে কলাবনপাড়াতে থাকতে পারবেন।
শ্রীমঙ্গল শহরের ভেতরে মাঝারি থেকে উচ্চ মানের হোটেল বা গেস্ট হাউস সহজেই পেয়ে যাবেন।এখানের নমকরা কয়েকটি হোটেল হলো ‘গ্রান্ড সুলতান টি রিসোর্ট এন্ড গলফ’(পাঁচ তারকা), নভেম রিসোর্ট, নিসর্গ ইকো কটেজ, টি মিউজিয়াম রিসোর্ট, লেমন গার্ডেন রিসোর্ট, টি টাউন রেস্ট হাউস, হোটেল প্লাজা ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
আপনি আপনার সুবিধা মতো যেকোনো জায়গায় থাকতে পারেন। শ্রীমঙ্গল শহরের কিছু দর্শথেনীয় স্থান হলো, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, মাধবপুর লেক, নীলকন্ঠ কেবিন যেখানে সাত রঙের চা পাওয়া যায়, চাবাংলাদেশ চা গবেষণা ইন্সটিটিউট।হাতে সময় থাকলে সহজেই ঘুরে আসতে পারবেন।
শ্রীমঙ্গল শহরে খাবার জন্য আপনাকে কোনো চিন্তাই করতে হবে না।ছোট খাট খাবার হোটেল খুব সহজেই পেয়ে যাবেন আর বড় বড় হোটেল তো আছেই। কিন্তু কলাবনপাড়ায় যাবার আগে অবশ্যই খাবার নিয়ে যাবোন আর শুকনা খাবার অবশ্যই সাথে রাখবেন।
শীত আর বর্ষাকালে এখানে লোকের আনাগোনা লেগেই থাকে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তারা হাম হাম জলপ্রপাত দেখতে আসে। কিন্তু সে-তুলনায় এখানে সুবিধা খুবই কম।সরকার যদি যথাযথ ব্যাবস্থা গ্রহণ করে তাহলে মাধবকুণ্ড জলপ্রপাতের মতো হামহাম জলপ্রপাতটিও একটি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠতে পারে।
অপার্থিব সুন্দর এই নাফাখুম জলপ্রপাতটির অবস্থান বান্দরবান জেলার থানচি উপজেলার রেমাক্রি ইউনিয়নে। পানির প্রবাহের পরিমানের দিক থেকে নাফাখুম বাংলাদেশের সবচেয়ে বৃহৎ জলপ্রপাত।অনেকেই আবার নাফাখুম জলপ্রপাতকে বাংলার নায়াগ্রা বলে অভিহিত করেন।
️নাফাখুম ভ্রমণে যেতে চাইলে আপনাকে উত্তাল সাঙ্গু নদী পাড়ি দিয়ে রেমাক্রি পৌঁছাতে হবে।রেমাক্রি হলো মারমা আদিবাসী গ্রাম। মারমাদের ভাষায় খুম শব্দের মানে হলো ঝর্না বা জলপ্রপাত।
সবুজপাহাড়ী জঙ্গলে ঘেরা পাথুরেপথে বয়ে চলা রেমাক্রি খালের পানি থেকেই নাফাখুমের প্রবাহ।উঁচু নিচু সাঙ্গু নদী পার হতে গিয়ে ভয়ে যে কারো বুক শুকিয়ে আসবে কারণ নদী ক্ষানিকটা পর পর ১-২ ফুট এমন কি কোথাও কোথাও ৪/৫ ফুট পর্যন্ত ঢালু হয়ে নিচে নেমেছে।
রেমাক্রী খালের পানি এমন উঁচু নিচু পথে চলতে চলতে নাফাখুমে এসে বাক খেয়ে প্রায় ২৫-৩০ ফুট নিচের দিকে নেমে গিয়ে সৃটিকরেছে এই মনোরম নাফাখুম জলপ্রপাতটি।
এখানকার প্রাকৃতিক পরিবেশ এই জলপ্রপাতটির সৌন্দর্য আরো অনেক গুন বাড়িয়ে দিয়েছে। সাঙ্গু নদীর দুপাশ জুড়ে রয়েছে অনেক উচু উচু পাহাড়।
ঘন সবুজে আবৃত এই পাহাড়গুলোর কোনো কোনোটি এত উচু যে তার চূড়া মেঘের আস্তরে ঢেকে আছে। নাফাখুম জলপ্রপাতের একটি বিশেষ প্রাকৃতিক আকর্ষণ হলো এর রংধনু। এখানে প্রায় সারাদিন রংধনুর খেলা চলে। দ্রুত গতিতে পাথুরেপথে গড়িয়ে আসা পানির জলীয় বাষ্প আর সূর্য্যের আলো মিলে প্রতিনিয়ত এখানে রংধনু তৈরি করে।
দেশের যে প্রান্ত থেকেই নাফাখুম ভ্রমণে যেতে চান না কেন আপনাকে প্রথম বান্দরবান জেলা আসতে হবে।
যদি ঢাকা থেকে বাসে চড়ে আসতে চান তাহলে বান্দরবানগামী যেকোনো বাসে করে চলে আসুন বান্দরবান। আনুমানিক মাথাপিছু ভাড়া ৬০০-৬৫০ টাকা(নন এসি) ও ৯৫০-১৫০০ টাকা(এসি)।
আর যদি ঢাকা থেকে ট্রেনে করে আসতে চান তাহলে ঢাকা থেকে ট্রেনে চট্টগ্রাম গিয়ে সেখান থেকে বান্দরবান পৌঁছাতে হবে। চট্টগ্রামের বদ্দারহাট বাস স্টেশন থেকে বান্দরবানগামী বাসে করে সোজা বান্দরবান পৌঁছানো যায় বাসে জনপ্রতি ২২০ টাকা ভাড়া লাগে যেতে পারবেন। পূবালী ও পূর্বানী নামের দুটি বাদ বান্দারবানের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। এ দুটি বাসে মাথাপিছু ২২০ টাকা ভাড়া লাগে। বান্দরবান থেকে লোকাল পরিবহনে করে চলে আসতে হবে থানচি উপজেলা সদরে।
বান্দরবান থেকে থানচির দূরত্ব প্রায় ৭৯কি.মি।বান্দবান থেকে থানচি পৌঁছাতে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে যায়। থানচি পৌঁছে আপনার সবচেয়ে প্রথম কাজ হলো থানচি চেক পোস্ট এ নাম-ঠিকানা রেজিস্ট্রি করারাতে থানচিতে থেকে খুব ভোরে রেমাক্রীর উদ্দেশ্য রওয়ান দেওয়া।শুরুতেই প্রথম কাজ হলো স্থানীয় কাউকে গাইড হিসেবে নিযুক্ত করা।
সাধারণত ৫০০-৬০০টাকার বিনিময়ে গাইড পেয়ে যাবেন। তারপর সেখান থেকে সোজা থানচি বাজার। বাজারের পাশ ঘেঁষে বয়ে চলেছে সাঙ্গু নদী। সেখান একটা নৌকা ভাড়া করে সাঙ্গু নদী পথে চলে যেতে হবে রেমাক্রি।হয়তো সেখানে গিয়ে আবার নতুন গাইড নিতে হবে ।কারন একই গাইড যেতে চায়না।
রেমাক্রি বাজার থেকে দুই পথে নাফাখুম যাওয়া যায়, এক উঁচু নিচু পাহাড়ি পথে অথবা দ্বিতীয় পথ হলো রেমাক্রি খালের পাশ ধরে। পাহাড়ি পথে যাওয়াটা একটু কষ্টের তবু এই পথে গেলে ভ্রমণের থ্রিল এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দুইই উপভোগ করতে পারবেন।তবে কষ্টের কথা হলো রেমাক্রি থেকে নাফাখুম প্রায় তিন ঘন্টার পথ আর এই পারি দিতে হবে পায়ে হেঁটে।
যদি খুব ভালো জায়গায় থাকতে চান তাহলে বিজিবি নিয়ন্ত্রিত “সীমান্ত অবকাশ কেন্দ্রে” থাকতে পারবেন। রুম ভাড়া পরবে প্রায় ১৫০০-৩০০০ টাকা। এছাড়াও থানচি বাজার ও আশেপাশে থাকার জন্য কিছু কটেজ ও রেস্টহাউজ ধরণের হোটেলে আছে। মান অনুযায়ী দিন প্রতি ২০০-১০০০ টাকা ভাড়া।
রেমাক্রি বাজারে আদিবাসীদের সাথেও থাকতে পারেন ওদের প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই ভাড়া করে থাকার জন্য রুমের ব্যবস্থা আছে।এছাড়াও জনপ্রতি ১৫০-২০০ টাকা ভাড়া দিয়ে সাঙ্গু নদীর পাশে আদিবাসীদের রেস্ট হাউজে কয়েকজন মিলে থাকতে পারেন।
বান্দরবান জেলায় আরো কিছু দর্শনীয় স্থান আছে। যদি হাতে পর্যাপ্ত সম নিয়ে নাফাখুম জলপ্রপাত ভ্রমণ বের হন তাহলে থানচি, সাঙ্গু নদী,নীলগিরি,চিম্বুক, পদ্মমুখ, তিন্দু, রাজাপাথর, রেমাক্রি ফলস,বগালেক,নীলাচল স্বর্ণমন্দির এবং বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পাহাড় কেওক্রাডং ভ্রমণের মজা ও উপভোগ করতে পারেন।
নাফাখুম জলপ্রপাত ভ্রমনে গিয়ে থাকার ব্যাবস্থা করতে পারলে আপনাকে খাওয়ার বিষয় নিয়ে আর চিন্তাই করতে হবে না। আপনি যে হোটেল বা কটেজে উঠবেন সেখানে নিশ্চয়ই খাবার ব্যাবস্থা আছে।
এছাড়া থানচি বাজারে মোটামুটি মানের বেশকিছু হোটেল আছে খাওয়ার জন্য। ইচ্ছা মতো যেকোনো একটায় খেয়ে নিতে পারবেন। আর যদি স্থানীয় আদিবাসীদের খাবার খেতে চান তাহলে রেমাক্রিতে আদিবাসী বাড়িতেই খাওয়ার ব্যবস্থা আছে।
তাদেরকে আগে থেকে বলে রাখলেই তারা আপনার জন্য রান্না করে রাখবে।এক্ষেত্রে খরচ অনেকটাই কম সাধারণত ৮০ টাকার বিনিময়ে ভাত, ভর্তা, ভাজি ও ডিম খেতে পারেন ডিমের বদলে মুরগি খেতে চাইলে খরচ হবে ১২০ টাকা জনপ্রতি।।
সারা বছরই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অনেক ভ্রমণ পিপাসুদের আগমন ঘটে এই নাফাখুম জলপ্রপাত দেখার জন্য তবে শীতকালে এর সংখ্যা আরো বেড়ে যায়। যদিও বর্ষাকাল হলো জলপ্রপাত যৌবন।
এসময় পানির প্রবাহ বেড়ে যায় কিন্তু শীতে তা কমে যায়। তবে বর্ষাকালে নাফাখুম জলপ্রপাত ভ্রমণে গেলে যাতায়াত ব্যাবস্থায় একটু ধকল পোহাতে হয়।এসয় থানচি থেকে নাফাখুম জলপ্রপাত পর্যন্ত ইঞ্জিনচালিত নৌকাই একমাত্র উপায়। শীতকালে নদীও খালের পানির গভীরতা কমে যায় তখন বৈঠা ওয়ালা নৌকা চলে।
অপূর্ব সুন্দর এই শুভলং জলপ্রপাতটির অবস্থান বাংলাদেশের রাঙামাটি জেলার বরকল উপজেলার বালুখালি ইউনিয়নের শুভলং বাজারের পাশেই।রাঙ্গামাটি সদর হতে মাত্র ২৫ কিলোমিটার দূরে শুভলং ঝর্ণা বা জলপ্রপাতের অবস্থান।
দেশের অন্যান্য সব ঝর্ণার মত শুভলং ঝর্ণাতেও শুকনো মৌসুমে পানির প্রবাহ খুব কম থাকে,কিন্তু বর্ষা মৌসুমে প্রায় ১৪০ ফুট উঁচু পাহাড় থেকে বিপুল জলধারা গড়িয়ে পড়ে। পাহাড়ের গা বেয়ে গড়িয়ে পড়া এই জলধারা গিয়ে মেশে কাপ্তাই লেকে।
উঁচু পাহাড়ের উপর থেকে পাথুরে মাটিতে গড়িয়ে পরা জলধারার মায়বী শব্দ এখানে আগত পর্যটকদেরকে বিমোহিত করে তোলে আর শুভলং যাওয়ার পথের সৌন্দর্য দৃষ্টি কাড়ে সবার।শুভলং জলপ্রপাতের পাশেই রয়েছে শুভলং পাহাড়। শুভলং পাহাড় এর অন্য নাম ‘টি এন্ড টি পাহাড়’।প্রায় ২০০০ ফুট উঁচু এই ‘টি এন্ড টি পাহাড়’ এর চূড়ায় রয়েছে সেনাক্যাম্প ও একটি টি অ্যান্ড টি টাওয়ার। দীর্ঘ সিঁড়ি বেয়ে পাহাড়ে ঠ
উঠতে পারবেন। পাহাড়ের ওপর থেকে রাঙামাটি আরো আকর্ষনীয় দেখায়।পাহাড়ের ওপর থেকে মনে হবে সমস্ত রাঙামাটি জেলা পদ্মফুলের মতো কাপ্তাই লেকের পানিতে ভাসছে।
শুভলং যাওয়ার জন্য প্রথমে যেতে হবে রাঙামাটি।যদি ঢাকা থেকে বাসে চড়ে রাঙামাটি যেতে চান তাহলে ঢাকা থেকে রাঙ্গামাটিগামী যেকোনো বাসে করে করে সহজেই পৌছে যাবেন রাঙামাটি। ঢাকা থেকে রাঙামাটি বাসের ভাড়া ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা (নন এসি)এবং এসি বাসের ভাড়া ৮০০ থেকে ১০০০ এর মধ্যে।
রাঙামাটি পৌঁছাবার পর রিজার্ভ বাজার থেকে শুভলং যাবার নৌকা সারাদিনের জন্য ভাড়া করতে হবে। সারাদিনের জন্য ভাড়া করলে শুভলং ঝর্ণা ছাড়াও আরো ৭-৮ টা দর্শনীয় স্থান ঘুরে দেখতে পারবেন।
এজন্য হাতে যথেষ্ট সময় নিয়ে বের হতে হবে। সাধারণত নৌকার আকারের উপর ভাড়া কম বেশি হয়ে থাকে। তবে ১০০০-১৫০০ টাকার মধ্যে মোটামুটি আকারের একটা নৌকা ভাড়া করা যায়।
এক নৌকাতে ১০-১৫ জন যাওয়া যায়।যদি এত জন ভ্রমণসঙ্গী না থাকে তাহলে রিজার্ভ বাজার থেকে জনপ্রতি প্যাকেজে দর্শনীয় স্থানগুলো ঘুরে আসার ব্যাবস্থা আছে।রিজার্ভ বাজার থেকে শুভলং ঝর্ণা পর্যন্ত যেতে প্রায় দেড় থেকে দুই ঘন্টা সময় লাগে।
রাঙ্গামাটি থেকে শুভলং এর উদ্দেশ্য খুব ভোরেই রওয়ানা হওয়া উচিত যাতে করে দিনে গিয়ে দিনেই রাঙ্গামাটি ফিরে আসা যায়। কারণ শুভলং এলাকায় থাকা বা খাওয়ার জন্য কোন ভাল ব্যবস্থা নেই। এজন্য সাথে করে খাবার নিয়ে বের হোন।নৌকা নিয়ে যদি পেডা টিং টিং এ যান তাহলে সেখানে খেতে পারবেন।
যেহেতু শুভলং এলাকায় থাকার ভালো ব্যবস্থা নেই তাই আপনাকে সকালে গিয়ে সন্ধ্যার আগেই রাঙ্গামাটি ফিরে আসতে হবে। প্রয়োজনে হালকা খাবার সাথে নিয়ে ভ্রমণ করুন।
রাঙ্গামাটিতে থাকার জন্য বিভিন্ন মানের বেশ কিছু গেষ্ট হাউজ ও আবাসিক হোটেল রয়েছে।যদি কাপ্তাই লেকের শান্ত পরিবেশ ও বাতাস উপভোগ করতে চান তাহলে রাঙ্গামাটি শহরের পুরাতন বাস স্ট্যন্ড ও রিজার্ভ বাজার এলাকায় লেকের কাছাকাছি থাকার জন্য হোটেল খুঁজুন। “হোটেল গ্রিন ক্যাসেল”রিজার্ভ বাজারে অবস্থিত,
“পর্যটন মোটেল” রাঙ্গামাটি ঝুলন্ত ব্রিজের পাশে অবস্থিত,”হোটেল আল-মোবা” রিজার্ভ বাজার এছাড়াও আরো অনেক জায়গা আছে থাকার জন্য। আপনার সুবিধা মতো যেকোনো একটিতে থাকতে পারেন। থাকার ব্যবস্থা হয়ে গেলে খাওয়ার ব্যাপারে আর না ভাবলেও চলবে।কারন হোটেল গুলোতো খাবারের ব্যবস্থা তো আছেই। আর না হলে রাঙামাটি শহরে বিভিন্ন মানের খাবার হোটেল আছে পছন্দ মতো একটাতে ঢুকে পরুন আর পেট ভরে খাবার খান।
রাঙ্গামাটি গেলে শুধু মাত্র শুভলং জলপ্রপাত দেখেই বোকার মতো ফিরে আসবেন না কিন্তু, রাঙ্গামাটি ঝুলন্ত ব্রিজ, ইকো পার্ক, উপজাতীয় জাদুঘর, পেদা টিং টিং, কাপ্তাই লেক, টুকটুক ইকো ভিলেজ, ঐতিহ্যবাহী চাকমা রাজবাড়ি, উপজাতীয় টেক্সটাইল মার্কেট, বেতবুনিয়া ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র নৌ-বাহিনীর পিকনি স্পট সহ আরো অনেক দর্শনীয় স্থান রয়েছে রাঙামাটি জেলায়।
হাতে বেশি সময় থাকলে এই সাথেই ঘুরে আসতে পারেন সাজেক ভ্যালি থেকে।তাহলে একইসাথে পাহাড় ও ঝর্ণা বা জলপ্রপাত দুই ই ভ্রমণ হয়ে যাবে।
দেশের অন্যান্য দর্শনীয় জলপ্রপাত স্থান থেকে শুভলং কিছুটা পেছনে। কতৃপক্ষ যদি শুভলং এ যথাযথ ভাবে পদক্ষেপ গ্রহন করে এবং এখানে আগত পর্যটকদের থাকার ভালো ব্যবস্থ করে তাহলে শুভলং ও পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্র হতে পারে।
ছবিঃ সংগৃহীত
তথ্যসূত্রঃ উইকিপিডিয়া, ভ্রমণগাইড ব্লগ, বিডিএলএসটি ব্লগ, Sylhetdiv.gov.bd
এখন ভালোই বৃষ্টি হচ্ছে চাইলেই ঘুরে আসতে পারেন💥হামহাম ঝর্ণা। মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার রাজকান্দি সংরক্ষিত বনাঞ্চলের গভীরে ২০১০ সালের শেষের দিকে পর্যটন গাইড শ্যামল দেববর্মাকে সাথে নিয় একদল পর্যটক হাম হামের এই অনিন্দ্য জলপ্রপাতটি আবিষ্কার করেন। স্থানীয়দের কাছে এই ঝর্ণা চিতা ঝর্ণা হিসাবে পরিচিত, তাদের মতে এই জঙ্গলে আগে চিতা পাওয়া যেত। প্রায় ১৪০ফিট উঁচু এই ঝর্ণার বুনো সৌন্দর্য দেখার জন্যে অনেক কষ্ট স্বীকার করে সমগ্র বাংলাদেশ থেকে মানুষ ছুটে আসে। শীতকালে তুলনামূলক পানি কিছটাু কম থাকলেও কিন্তু বর্ষাকালে কালে হাম হামের বুনো সৌন্দর্য্য দেখার উপযুক্ত সময়।
✅ সিন্ডিকেট মুক্ত নিরাপদ ও আনন্দময় ভ্রমনের জন্য হামহাম ঝর্ণা লোকাল গাইড সাজ্জাদ 01717760509
🇧🇩হামহাম জলপ্রপাত
মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার রাজকান্দি সংরক্ষিত বনাঞ্চলের গভীরে ২০১০ সালের শেষের দিকে পর্যটন গাইড শ্যামল দেববর্মাকে সাথে নিয় একদল পর্যটক হাম হামের এই অনিন্দ্য জলপ্রপাতটি আবিষ্কার করেন। স্থানীয়দের কাছে এই ঝর্ণা চিতা ঝর্ণা হিসাবে পরিচিত, তাদের মতে এই জঙ্গলে আগে চিতা পাওয়া যেত। প্রায় ১৪০ফিট উঁচু এই ঝর্ণার বুনো সৌন্দর্য দেখার জন্যে অনেক কষ্ট স্বীকার করে সমগ্র বাংলাদেশ থেকে মানুষ ছুটে আসে। শীতকালে তুলনামূলক পানি অনেক কম থাকে তাই বর্ষা কাল হাম হামের বুনো সৌন্দর্য্য দেখার উপযুক্ত সময়।
#লোকাল_গাইড
ঝর্ণা সম্পর্কে বা যে কোন গাড়ি সম্পর্কে বা ভাড়া সম্পর্কে জানতে অবশ্যই লোকাল গাইডের সাথে কথা বলবেন।
🏂সিন্ডিকেট মুক্ত নিরাপদ ও আনন্দময় ভ্রমণের জন্য যেকোনো প্রয়োজনে যোগাযোগ করবেন।
লোকাল গাইড 01717760509
চাঁদের গাড়ি 01732465067
💚 ধন্যবাদ হ্যাপি ট্রাভেলিং 🇧🇩