মুহিব খান বাংলাদেশের একজন জনপ্রিয় কবি, শিল্পী, কলামিস্ট, সাংবাদিক, টিভি আলোচক ও উপস্থাপক। তিনি উদারপন্থী একজন ইসলামি চিন্তাবিদ এবং দলমত নির্বিশেষে অন্যতম একজন প্রগতিশীল রাজনৈতিক বিশ্লেষক হিসেবেও তিনি সর্বমহলে সমাদৃত। আজ আমরা জাগ্রত কবি মুহিব খান সম্পর্কে জানার চেষ্টা করব।
মুহিব খান এর পুরো নাম হলো ‘মুহিববুর রহমান খান’। ১৯৭৯ সালের অক্টোবর মাসে কিশোরগঞ্জ শহরে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তার পারিবার ঐতিহ্য, সংগ্রাম ও ইসলামী শিক্ষা দাওয়াতের ইতিহাসে সমৃদ্ধ। মুহিব খান হলেন ভারতীয় উপমহাদেশের বরেণ্য আলেমে দ্বীন, রাজনীতিক, দার্শনিক, প্রাজ্ঞ পার্লামেন্টারিয়ান মাওলানা আতাউর রহমান খানের কনিষ্ঠ পুত্র ।
তিনি পড়াশুনায় খুব ভালো ছাত্র ছিলেন। ১৯৯৮ সালে ‘তাকমীল ফিল হাদিস ওয়াল উলূমিল ইসলামিয়া’ (বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়াহ বাংলাদেশ )৷ স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন “রাষ্ট্রবিজ্ঞানে” ২০০৪ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।
মুহিব খান বর্তমানে তার নিজ প্রতিষ্ঠান “ইসলামিক কালচারাল ইন্সটিটিউট” (আই.সি.আই) এর প্রতিষ্ঠাতা প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এছড়াও তাঁর লেখা কবিতা ও সংগীত দেশপ্রেম, মানবতাবাদ, বিশ্ব-শান্তি, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও জাতীয় সংহতির চেতনায় জাতিকে উদ্বুদ্ধ করে তোলে।
আমাদের দেশের বিপুল জননন্দিত জাতীয় সংগীত শিল্পীদের অনেকেই গনমাধ্যমে তার লেখা দেশের গান প্রায়শই পরিবেশন করে থাকেন । তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন, সুবীর নন্দী, আবিদা সুলতানা, শাকিলা জাফর, আইয়ুব বাচ্চু, হায়দার হোসেন, কনক চাঁপা, মনির খান, মমতাজ, আগুন, শুভ্রদেব, ফাহমিদা নবী প্রমুখ অন্যতম।
মুহিব খান নিজেও গনমাধ্যমে দেশাত্মবোধক ও আদর্শিক গান পরিবেশন করে কোটি মানুষের হৃদয় জয় করে নিয়েছেন। দেশে ও বিদেশে তার প্রায় সব কনসার্টে শ্রোতাদের স্বতস্ফুর্ত উচ্ছাস ও ব্যাপক জনসমষ্টি পরিলক্ষিত হয়।
বাংলাদেশের সমারিক বাহিনীর জন্য তার রচিত উদ্দীপনা সংগীত “ইঞ্চি ইঞ্চি মাটি” এবং বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় আইন শৃংখলা রক্ষী বাহিনী আনসার-ভিডিপির দলীয় সংগীতের রচয়িতা ও সুরকার মুহিব খান নিজেই।
বাংলাদেশের প্রথম পূর্ণাঙ্গ ধর্মীয় টিভি চ্যানেল ইসলামিক টিভির প্রথম অনুষ্ঠান নির্বাহীও ছিলেন কবি মুহিব খান। দেশের তারুণ্যকে অপসংস্কৃতি, উগ্রবাদ, কুসংস্কার ও সন্ত্রাসবাদের পথ থেকে রক্ষা করে শিক্ষা সংস্কৃতি ও মানবতার কল্যাণে উদ্বুদ্ধ করে সুযোগ্য ও সক্রিয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে গড়ে তুলতে তিনি ‘ইসলামিক কালচারাল ইনস্টিটিউট’ (আই.সি.আই) নামে একটি প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেন। এই প্রতিষ্ঠানে শিল্প সাহিত্য সংস্কৃতির বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়ে থাকে ।
এছাড়াও কবি মুহিব খান বাংলাদেশের প্রধান রাষ্ট্রীয় ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ইসলামিক ফাউন্ডেশনে নিয়মিত শিল্পী, আলোচক এবং বিভিন্ন জাতীয় সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার সম্মানিত বিচারকের দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি দেশের সর্বাধিক প্রচারিত ও পাঠক নন্দিত জাতীয় সাপ্তাহিক লিখনীর সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্বরত ছিলেন।
এ যাবত তাঁর অডিও ভিডিও এ্যালবাম এবং সাহিত্য ও দর্শনের বেশকিছু বই প্রকাশিত হয়েছে। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে- লাল সগরের ঢেউ, প্রাণের আওয়াজ, অচিনকাব্য, ১২ টি সুন্দর গল্প, কবিতা কলাম, মুরাকাবা এবং মেঘে ঢাকা সুন্নাত।
মুহিব খান প্রকাশিতব্য প্রেম বিরহ, ইলহাম, শিশুপাঠ, রাষ্ট্রচিন্তা, প্রচ্ছদ প্রসঙ্গ,পৃথিবীর পথে ও সরল সংলাপ উল্লেখযোগ্য।
তাঁর প্রকাশিত এ্যালবাম গুলোর মধ্যে রয়েছে- মরু সাহারা, ইঞ্চি ইঞ্চি মাটি, ইয়ে মেরা ওয়াতান, আবার যুদ্ধ হবে, সীমান্ত খুলে দাও, দিন বদলের দিন এসেছে, নতুন ইশতেহার আসছে এবং দাস্তান-ই মুহাম্মাদ। তাঁর রচিত আরও কিছু বই ও এ্যালবাম প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে। এছাড়াও তাঁর অনেক প্রবন্ধ ও কলাম জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে।
কবি মুহিব খান রচিত ঐতিহাসিক অনুবাদ সাহিত্যের মধ্যে রয়েছে বিশ্বের প্রথম পূর্ণঙ্গ “আল-কোরআনের কাব্যনুবাদ” এবং বিস্ময়কর সিরাত এ্যালবাম ‘দাস্তান-ই-মুহাম্মদ’ যা বাংলা সাহিত্য সংস্কৃতির অন্যতম অবদান।
[১] ব্যক্তিগত জীবনে মুহিব খান এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। তাঁর কবিতা, সংগীত ও লেখেনি মাঝে কাজী নজরুল ইসলামের মত বিপ্লবী চেতানা পরিলক্ষিত ৷ বিভিন্ন সময়ে ইংল্যান্ড, সৌদীআরব, মালয়েশিয়া, বাহারাইনসহ বেশ কিছু দেশও ভ্রমন করেছেন।
[২] বর্তমানে দেশ ও দেশের বাইরে তিনি ‘জাগ্রত কবি’ উপাধিতে সমাদৃত হয়েছেন। পূর্ব লন্ডনে আয়োজিত এক গণসংর্বধনায় মুহিব খান কে ‘মুসলিম উম্মাহর জাতীয় কবি’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়। তাঁর ভক্ত ও অনুসারীরা তাকে একজন আধুনিক আলেম, রাষ্ট্রচিন্তাবিদ ও দার্শনিক হিসেবে মূল্যায়ন করে থাকেন।
[৩] তবে তাঁর অর্জনগুলোর মধ্যে বিস্ময়কর এক অর্জন হলো বিশ্বের ইতিহাসে প্রথম বাংলাভাষায় আল কোরআনের পূর্নাঙ্গ কাব্যানুবাদ। বিশ্বে এর আগে আরবিসহ বিভিন্ন ভাষায় কাব্যিক অনুবাদের চেষ্টা করলেও কেউই পূর্নাঙ্গ কাব্যানুবাদ করতে সক্ষম হয়নি। মহান আল্লাহ রহমতে তিনি এ কাজ করতে সফল হয়েছেন।
[৪] দেশের বিভিন্ন পত্রিকা ও টেলিভিশনে তার সাক্ষাৎকার বিভিন্ন সময়ে প্রচারিত হয়েছে । ২০১১ এর জুলাই মাসে তাঁর যুক্তরাজ্য সফরের সময় চ্যানেল আই ও এনটিভি ইউকে দেওয়া বিশেষ সাক্ষাৎকার লাইভ প্রচার করা হয়। তাঁর ছবিসহ সংবাদ প্রকাশিত হয় লন্ডনের স্থানীয় বিভিন্ন বাংলা পত্রিকাগুলোতে।
জাগ্রত কবি মুহিব খান মুসলিম উম্মাহর কবি হিসেবে সকলের খুব প্রিয় পাত্র হয়ে স্থান করে নিয়েছেন। তাঁর কবিতা, সংগীত ও লেখনীর মাঝে লক্ষ্য করা যায় মুক্তির প্রেরণা এবং দেশ জাতীয় সার্থে বিপ্লবী ও সংগ্রামী চেতনা। তাইতো পাঠক মহলে মুহিব খান বাংলার ২য় কাজী নজরুল ইসলাম হিসেবেও বেশ পরিচিত ৷
তথ্য সহায়তাঃ
আমি কি লিখাটা ইউটিউবে প্রচার করতে পারি ক্রেডিটের মাধ্যমে?
লিখাটা অডিও রেকর্ড করে উপস্থাপন করবো। খুব তাড়াতাড়ি উত্তর চাই প্লিজ
দ্বীনের সার্থে প্রচার করায় কোন বাধা নেই৷ বরং আলহামদুলিল্লাহ। তবে আপনি সংগৃহীত তথ্য কোন সাইট থেকে নিয়েছেন সেটা রেফারেন্স দিলে কপিরাইট মুক্ত থাকবেন৷
দু’এক দিন পর ভিডিও তৈরি করুণ৷ লেখাটিতে সামাণ্য কিছু সংস্কার করতে চাই। জাজাকাল্লাহ খাইরান
উনি কি কখনো কারাগারে ছিলেন? থাকলে কত সালে ছিলেন এবং কোন কারনে ছিলেন জানাবেন দয়া করে।