দিয়েগো ম্যারাডোনা ছিলেন গণমানুষের এক ‘বিপ্লবী ফুটবলার’। একজন খেলোয়াড় হিসেবে জয় করেছেন পুরো বিশ্ববাসীর মন। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আর্জেন্টিনা দীর্ঘসময় কোন সাফল্য না দেখলেও ম্যারাডোনাকে ঘিরে যে উন্মাদনা হয়েছিল সেটা এখনও প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম প্রবাহিত হচ্ছে। ১৯৮৬ সালে আর্জেন্টিনাকে একাই বিশ্বকাপ জিতিয়ে ইতিহাসের পাতায় ঠাঁই করে নেন। তার মতো একক কৃতিত্বে দলকে টেনে নেওয়ার ক্ষমতাসম্পন্ন খেলোয়াড় ফুটবল বিশ্বে খুব কমই আছে।
আর্টিকেলে যা থাকছেঃ
ম্যারাডোনা ছিল একটি বিশ্বাসের নাম। তিনি একজন আর্জেন্টিনীয় পেশাদার ফুটবল খেলোয়াড় এবং ম্যানেজার ছিলেন। এ পর্যন্ত যতগুলো সর্বকালের সেরা একাদশ হয়েছে তাতে দুইজন চয়েজ হিসেবে ছিল, একজন হচ্ছে ম্যারাডোনা আর একজন হচ্ছে ব্রাজিলের পেলে।
১৯৮০ এর দশকে তার একার কৃতিত্বেই তিনি পুরো বিশ্বকে চমকে দিয়েছেন। একজন খেলোয়াড় এর জন্য কোনো দেশের এতটা সমর্থক তা সম্ভব হয়েছিল ম্যারাডোনার জন্য। বল নিয়ন্ত্রণে, নিজের এবং অন্যদের জন্য স্কোরের সুযোগ তৈরি করার দক্ষতার জন্য তিনি খ্যাতিমান ছিলেন।
তিনি ক্লাব দলকে আর্জেন্টিনা, ইতালি এবং স্পেনের চ্যাম্পিয়নশিপে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। খেলোয়াড় জীবনের অধিকাংশ সময় আর্জেন্টিনোর জুনিয়র্স এবং নাপোলির হয়ে খেলেছেন। তিনি মূলত একজন আক্রমনাত্মক মধ্যভাগের খেলোয়াড় হিসেবে খেলেছেন। ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপ জিতে আর্জেন্টিনার জাতীয় দলের হয়ে খেলেছিলেন।ফিফা কর্তৃক পরিচালিত একটি জরিপে ম্যারাডোনাকে বিশ শতকের শীর্ষ খেলোয়াড় হিসেবে ঘোষণা করেছে।
ম্যারাডোনার জন্ম বুয়েন্স আয়ার্স প্রদেশের লেনাস শহরের এভিটা হাসপাতালে। সময়টা ছিল ১৯৬০ সালের ৩০ অক্টোবর। খুবই দারিদ্র পরিবারের সন্তান ছিলেন তিনি। মা-বাবার তিন কন্যা সন্তানের পর তিনিই প্রথম পুত্র সন্তান। এরপর আরো দুই ভাই রয়েছে তার।
একজনের নাম হুগো এবং অন্যজনের নাম রাউল। তারা দুজনও ছিলেন পেশাদার ফুটবলার।আট বছর বয়সেই তার ফুটবল খেলার প্রতি আগ্রহ জাগে, সেখান থেকেই তার ফুটবল প্রতিভা ফুটে ওঠে।
বাড়ির পাশের ক্লাব এস্ট্রেলা রোজার হয়ে খেলতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকেই তিনি নজরে পড়েন ট্যালেন্ট হান্টিং স্কাউটদের।এরপর ১২ বছর বয়সে আর্জেন্টিনো জুনিয়রের হয়ে প্রথমার্ধের পর মাঠে নামেন। এই অল্প সময়েই তিনি যে ঝলক দেখিয়েছিলেন তাই তার বিশ্বসেরা আসনে বসার প্রথম পথ।
গণমাধ্যমে “জার্সি নম্বর ১০” পরিচিত ম্যারাডোনা একজন সৃজনশীল প্রতিভার খেলোয়াড় ছিলেন। তিনি সাধারণত আক্রমণভাগের খেলোয়াড়দের পেছনে একজন আক্রমনাত্মক মধ্যমাঠের খেলোয়াড় হিসেবে অথবা দ্বিতীয় আক্রমণভাগের খেলোয়াড় হিসেবে খেলতেন।
এছাড়াও তাকে ৪-৪-২ বিন্যাসে একজন আক্রমনাত্মক ধাঁচের কেন্দ্রীয় মধ্যমাঠের খেলোয়াড় হিসেবে খেলতে দেখা গিয়েছে। ম্যারাডোনার দৃষ্টি, পাসিং, বল নিয়ন্ত্রণ এবং ড্রিবলিং দক্ষতার জন্য বিখ্যাত ছিলেন। তার সৃজনশীল দক্ষতা ছাড়াও তিনি ফ্রি -কিক বিশেষজ্ঞ হিসাবে পরিচিত ছিলেন। একটি স্পষ্ট প্রতিভা ম্যারাডোনাকে “এল পাইবে দে ওরো ( গোল্ডেন কিড)” ডাকনাম দেওয়া হয়েছিল।
১৯৬৭-৬৮ সালের মৌসুমে, আর্জেন্টিনীয় ফুটবল ক্লাবে ম্যারাডোনা তার ক্লাব ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন আর্জেন্টিনোস জুনিয়রের হয়ে।৫ মৌসুমে ১৬৭ টি খেলায় তিনি ১১৫ টি গোল করেন।
প্রায় ১.৫ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে তিনি বোকা জুনিয়র্সে আসেন।এখানে এসে তিনি মাত্র ১ মৌসুমে একটি লিগ চ্যাম্পিয়নশিপ জেতেন।
বোকা জুনিয়র্স থেকে আসার পর ১৯৮২ সালে ম্যারাডোনা স্পেনীয় ক্লাব বার্সেলোনায় যোগ দেন। প্রায় ৫ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে বার্সেলোনায় যোগ দিয়েছিলেন। এখানে এসে তিনি গোড়ালির ইনজুরিতে পড়েন।
এছাড়া হেপাটাইটিসের সাথেও লড়াই করতে হয়। এসব প্রতিকূলতার মাঝেও তিনি বার্সেলোনার হয়ে সেসার লুইস মনোতির অধীনে ৩ টি শিরোপা জয় লাভ করেছেন। বার্সেলোনার হয়ে ২ মৌসুমে সকল প্রতিযোগিতায় ৪৫ ম্যাচে ৩০ টি গোল করেছিলেন।
কিন্তু বার্সার হয়ে ম্যারাডোনার কৃতিত্ব আসলে অন্য একটি জায়গায়। সেটা হলো ১৯৮৩ সালের ২৫ জুন বার্সেলোনা বনাম রিয়াল মাদ্রিদের খেলায়। সেখানে তিনি মাঝ মাঠ থেকে বল পাওয়ার পর সামনে ছিল গোলকিপার।
গোলকিপারকে কাটিয়ে ফাঁকা পোস্ট পেয়েও গোল করেননি! গোলটা করেছিলেন রিয়ালের আরেকজন এসে তাকে আটকানোর পর। এই জন্য খেলা শেষে রিয়ালের সমর্থকরা তাকে দাঁড়িয়ে অভিনন্দন জানিয়েছিল।
শেষ পর্যন্ত ১৯৮৪ সালে ‘ইতালিয়ান ক্লাব’ নাপোলিতে যোগ দেন। সেখানে তিনি প্রায় ৭ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে নাপোলিতে যোগ দিয়েছিলেন।
ম্যারাডোনা আসার আগে দলটি কখনো লিগ জিততে পারেনি। ১৯৮৩ -৮৪ এর মৌসুমে তারা চলে গিয়েছিল পয়েন্ট তালিকার ১২ নম্বর পজিশনে, শুধুমাত্র ১ পয়েন্টের জন্য রেলিগেশন থেকে বেঁচে যান ক্লাবটি। এ রকম ক্লাবে ম্যারাডোনার আগমন তাদের জন্য ছিল সৌভাগ্যের বিষয়।
১ম মৌসুমে ম্যারাডোনা ১৪ গোল করার কারণে নাপোলি লিগে ৮ম হয়। পরের মৌসুমে ম্যারাডোনা সর্বোচ্চ ১১টি গোল করেন। যার ফলে নাপোলি উঠে আসে লিগ টেবিলের ৩ নম্বরে।
নাপোলিতে ১৯৮৪-১৯৯১ সাল পর্যন্ত মোট ১৮৮ ম্যাচ খেলে গোল করেছে ৮১ টি। তিনি তার জীবনের সোনালী সময়টা কাটান নাপোলিতেই।
নাপোলির হয়ে জিতেছেন দুটি সিরি-আ শিরোপা, একটি কোপা ইতালিয়া, একটি উয়েফা কাপ এবং একটি সুপার কোপা ইতালিয়া শিরোপা।
নাপোলি থেকে বিদায় নেওয়ার পর ১৯৯২ সালে যোগ দিয়েছিলেন ‘স্প্যানিশ ক্লাব সেভিয়ায়’।সেখানে এক মৌসুমে ২৬টি খেলায় মাত্র ৫টি গোল করেন।
সেভিয়া থেকে চলে আসেন আর্জেন্টিনার নিওয়েল ওল্ড বয়েজে।এখানে এক মৌসুমে মাত্র ৫টি ম্যাচ খেলে একটিও গোল করতে পারেন নি। এখানেই তার ক্যারিয়ারের ইতি ঘটে।
ন্যু ক্যাম্পেও তিনি বেশিদিন ছিলেন না। মাত্র দুই মৌসুম খেলেন তিনি সেখানে। তবে দুই মৌসুমে খেলেছেন কেবল ৩৬ টি ম্যাচ এবং গোল করেছেন ২২ টি।
আর্জেন্টিনা জাতীয় ফুটবল দলের হয়ে ম্যারাডোনা টানা ৪টি ফিফা (১৯৮২,১৯৮৬,১৯৯০ এবং ১৯৯৪) বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করেন। এর মধ্যে ১৯৮৬ সালে আর্জেন্টিনা বিজয়ী হন এবং ১৯৯০ এ রানারআপ হয়।
১৯৭৭ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি, ১৬ বছর বয়সে হাঙ্গেরির বিপক্ষে তার অভিষেক হয়। তিনি ৩ টি কোপা আমেরিকায় (১৯৭৯, ১৯৮৭ এবং ১৯৮৯) অংশগ্রহণ করেছিল। ১৯৭৯ সালে ১৮ বছর বয়সে ফিফা বিশ্ব যুব চ্যাম্পিয়ন শিপে আর্জেন্টিনার হয়ে ফাইনালে সোভিয়েত ইউনিয়নকে ৩-১ গোলে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হয়।
১৯৭৯ সালের ২ জুন, স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে সিনিয়র দলের হয়ে প্রথম গোল করেছে তিনি। তিনিই একমাত্র খেলোয়াড় যিনি ফিফা অনূর্ধ্ব ২০ বিশ্বকাপ (১৯৭৯) ও ফিফা বিশ্বকাপ (১৯৮৬) উভয় প্রতিযোগিতায় গোল্ডেন বল জিতেছেন।
১৯৮২ সালে ম্যারাডোনা প্রথম বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পান। প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী খেলায় বেলজিয়ামের বিপক্ষে আর্জেন্টিনা খেলে। কিন্তু তিনি তার নৈপুণ্য দেখাতে ব্যর্থ হন। ম্যাচটা ১-০ গোলে হারে আর্জেন্টিনা। আর্জেন্টিনা গ্রুপ অপর দুই পর্বে ওঠে। হাঙ্গেরি আর স্যালভাদরকে হারিয়ে দ্বিতীয় পর্বে ওঠে। কিন্তু দ্বিতীয় পর্বে ইতালি এবং ব্রাজিলের বিপক্ষে পরাজিত হয়ে ম্যাচ থেকে বিদায় নিতে হয়। ব্রাজিলের বিপক্ষে ফাউল করার কারণে ম্যারাডোনাকে লাল কার্ড দেখানো হয়।
১৯৮৬ বিশ্বকাপে ম্যারাডোনা আর্জেন্টিনার অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয়েছিল মেক্সিকোয়। ১৯৮৬ বিশ্বকাপেই সম্ভবত সবচেয়ে বেশি দর্শকের আবির্ভাব হয়েছিল।
১৯৮৬ বিশ্বকাপ পুরো মাতিয়ে ছিলেন ম্যারাডোনা। বিশেষ করে ‘কোয়ার্টার ফাইনালে’। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে করেছিলেন ২ গোল। তার করা এই দুটি গোল ইতিহাসের পাতায় আজও চমক হয়ে রয়েছে।
প্রথম গোলটি করেছিলেন হাত দিয়ে। যার জন্য এ গোলটির নাম দেওয়া হয় “দ্য হ্যান্ড অব গড”। পরের গোলটি বিশ্বকাপের ইতিহাসের সেরা গোল হিসেবে বিবেচিত হয়। মাঠের অর্ধেকের বেশি অংশ দৌড়িয়ে, ৫ জন ইংরেজ ডিফেন্ডার এবং গোলরক্ষককে কাটিয়ে গোল করেন। এই গোলটির নাম হয়ে যায় “গোল অব দ্য সেঞ্চুরি”।
১৯৯০ বিশ্বকাপে পুনরায় আর্জেন্টিনার অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। কিন্তু গোড়ালির ইনজুরির কারণে দাপটের সাথে খেলা দেখাতে পারেননি। প্রথম পর্বে গ্রুপে তৃতীয় স্থানে থেকেও কোনোরকমে দ্বিতীয় পর্বের টিকেট পায় আর্জেন্টিনা। দ্বিতীয় পর্বে গিয়ে প্রতিপক্ষ হয় ব্রাজিল।
১৬ দলের পর্বে ব্রাজিলের বিপক্ষে ক্লদিও ক্যানিজিয়ার একমাত্র গোলে জয় পায় তারা তবে গোলটি ম্যারাডোনার বানিয়ে দেওয়া ছিলো। পরবর্তীতে কোয়ার্টার ফাইনালে আর্জেন্টিনার মুখোমুখি হয় ইয়োগোস্লাভিয়ার। ১২০ মিনিটের খেলাটি শেষ পর্যন্ত ০-০ সমতায় শেষ হলে পেনাল্টি পর্যন্ত গড়ায়।
তবুও আর্জেন্টিনা ৩-২ ব্যবধানে পেনাল্টিতে জয় লাভ করেন। সেমিফাইনালে ইতালির বিপক্ষে মাঠে নামেন আর্জেন্টিনা। ১-১ সমতার ফলে খেলা গড়ায় পেনাল্টিতে। এবারো ম্যারাডোনা একই ধরনের শর্ট নেয়। ফাইনালে আর্জেন্টিনার প্রতিপক্ষ হয় পশ্চিম জার্মানি কিন্তু সেবার জার্মানির কাছে হেরে যেতে হয় তাদের।
১৯৯৪ বিশ্বকাপ তার জন্য ছিল একটা ট্রাজেডি। কারণ প্রথম দুটি ম্যাচ খেলার পর আর তাকে খেলতে দেয়া হয়নি ড্রাগ টেস্টে এফিড্রিন ডোপিং এর কারণে। ফিফা তাকে ১৯৯৪ বিশ্বকাপ থেকে বহিষ্কার করে।
এখানেই তার ১৭ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের ইতি ঘটে। পুরো ক্যারিয়ারে তিনি মোট ৯১ টি খেলায় ৩৪ টি গোল করে।
১৯৯৪ সালে খেলা জীবনের ইতি টানার পর কোচ হিসেবে অভিষেক হয় টেক্সটিল মান্দিউর হয়ে। এখানে তিনি মাত্র ১ বছর দায়িত্ব পালন করেছিলেন। এরপর ১৯৯৫ সালে রেসিং ক্লাবের কোচ হিসেবে যোগদান করেন।
প্রায় ১৩ বছর দীর্ঘ বিরতির পর ২০০৮ সালে আর্জেন্টিনার জাতীয় দলে তাকে কোচ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। তার অধীনে ২০১০ সালে ফিফা বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছিল। ২ বছর এখানে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
২০১১ সালে কোচ হন ‘আল ওয়াসলের’। ২০১৩-২০১৭ সাল পর্যন্ত ছিলেন দেপোর্তিভো রেইস্ট্রার সহকারী কোচ। ২০১৭-২০১৮ সাল পর্যন্ত ছিলেন ফুজাইরাহর কোচ। ২০১৮-২০১৯ সাল পর্যন্ত ছিলেন দোরাদোস সিনালোয়ার কোচ।
সর্বশেষ ২০১৯ সালে লা-প্লাতায় কোচ হিসেবে যোগদান করেছিলেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সেখানেই ভারপ্রাপ্ত ছিলেন।
ব্যক্তিগতভাবে ম্যারাডোনা বেশ কিছু পুরষ্কার অর্জন করেছেন। যার মধ্যে রয়েছে –
গোল্ডেন বলঃ ১৯৮৬ সালে গোল্ডেন বল অর্জন করেছেন।
ব্রোঞ্জ বলঃ ১৯৯০ সালে ব্রোঞ্জ বল জয় অন্যতম।
ফিফা শতাব্দীর সেরা খেলোয়াড়ঃ ২০০০ সালের ডিসেম্বরে প্রকাশিত ফিফা শতাব্দীর সেরা খেলোয়াড় হিসেবে ২ জনকে বাছাই করেন। একজন হচ্ছে ‘ম্যারাডোনা’ আর একজন হচ্ছে ‘ব্রাজিলের পেলে’। তাদের দুজনকে ফিফা সেরা খেলোয়াড় হিসেবে ঘোষণা করেন।
এছাড়া দলগতভাবে, ঘরোয়া ফুটবলে, ম্যারাডোনা মোট ৯ টি শিরোপা অর্জন করেছেন। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় সর্বমোট ৩ টি শিরোপা জয়লাভ করেছেন। এর মধ্যে ১৯৮৬ ফিফা বিশ্বকাপ শিরোপা জয় অন্যতম।
গত কয়েক বছর যাবৎ স্বাস্থ্য জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি। ২০২০ সালের ২৫ নভেম্বর আর্জেন্টিনার তিগ্রে শহরে তার নিজ বাসভবনে মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬০ বছর। এর একমাস আগে হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরেছিলেন তিনি।
রক্তস্বল্পতার কারণে বুয়েন্স আয়ার্সের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল তাকে। সেখানে তাকে মস্তিষ্কের জরুরি অপারেশন করা হয়েছিল। পুনর্বাসনের জন্য তাঁকে তিগ্রের একটি মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছিল।
ফুটবল নামটা যতোদিন থাকবে সোনার হরফে ততোদিন লেখা থাকবে বিশ্ব ফুটবল প্রেমিকদের হৃদয়ে দিয়েগো ম্যারাডোনা নামটি। বিশ্ব ফুটবলের কিংবদন্তি এই তারকা থাকবেন মানুষের অন্তরের মণিকোঠায়।
ছবিঃ সংগৃহীত
তথ্যসূত্রঃ Wikipedia, BBC News, Prothom Alo, Anandabazar patrika, Britannica, NTV News
মন্তব্য লিখুন