প্রত্যেকটি স্বাধীন দেশের নিজস্ব জাতীয় খেলা রয়েছে। “সুস্থ দেহ, সুন্দর মন” গঠনে খেলাধুলার কোনো বিকল্প নেই। তাই, এটি অবশ্যই একটি দেশের ঐতিহ্যের সাথে জাতির খেলা-ধুলার প্রতি অনুরাগ প্রকাশ করে।
আজকে জানাবো কিছু দেশের জাতীয় খেলা নিয়ে যেগুলো বিভিন্ন দেশের প্রেক্ষিতে বিখ্যাত এবং অত্যন্ত জনপ্রিয়। উল্লেখ্য, অনেকে সাধারণ জ্ঞান পড়ার সময় জাতীয় খেলাগুলো মনে রাখতে পারেননা। এই আর্টিকেলটি তাদের জন্য উপকারী হবে বলে আশা করি।
বর্তমান পৃথিবীর সবচেয়ে বড় পরিসরের কোনো খেলা থাকলে সবার আগে ফুটবলের নাম চলে আসে। বর্তমানে ফুটবলের আন্তর্জাতিক ফেডারেশন “ফিফা” তে নিবন্ধকৃত দেশ রয়েছে সর্বমোট ২০৯ টি। এ থেকেই বোঝা যায় দুনিয়া ব্যপী ফুটবলের বিস্তৃতি কত বেশি।
চলুন, এক নজরে দেখে নেই কোন কোন দেশের জাতীয় খেলার তালিকায় ফুটবল রয়েছে।
ইটালি, নাইজেরিয়া, ব্রাজিল, গ্রীস, মিয়ানমার, আয়ারল্যান্ড, ক্রোয়েশিয়া, ভিয়েতনাম, বুলগেরিয়া, কোস্টারিকা, মিশর, জার্মানি, ইরাক, ইউক্রেন, মরিশাস, নরওয়ে ও ক্যামেরুন।
ফুটবল একটি দলগত খেলা। এটি বৈশ্বিকভাবে ব্যাপক পরিচিত ও জনপ্রিয় খেলা। এটি আন্তর্জাতিক ফুটবল ফেডারেশন (ফিফা) কর্তৃক পরিচালিত ক্রীড়ার আনুষ্ঠানিক নাম। কেবলমাত্র আমেরিকা এবং কানাডায় খেলাটি সকার নামে পরিচিত।
এটি দুই দলের মধ্যে খেলা হয়, যার প্রতিটি দলে ১১ জন করে খেলোয়ার থাকে। মোট সময় ৯০ মিনিট। তবে নক আউট ম্যাচে অতিরিক্ত সময় এবং পেনাল্টির সুযোগ থাকে।
একবিংশ শতকে এসে ফুটবল খেলা দুই শতাধিক দেশের ২৫০ মিলিয়নেরও অধিক খেলোয়াড় খেলে থাকেন। এর ফলে ফুটবল বিশ্বের সর্বাধিক জনপ্রিয় ও প্রচলিত খেলা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।
এছাড়া কিছু দেশ রয়েছে যাদের ফুটবল সহ অন্য কোনো খেলা জাতীয় খেলার অন্তর্গত রয়েছে।চলুন জেনে নেই সেসব দেশের ফুটবল ছাড়া অন্য জাতীয় খেলাগুলো সম্পর্কে।
জিম্বাবুয়ে, নেপাল, জ্যামাইকা, ত্রিনিদাদ, ইংল্যান্ডের জাতীয় খেলা হলো ক্রিকেট। ফুটবলের পর বিশ্বে জনপ্রিয় সব ক্রীড়া আসরের তালিকায় অবশ্যই ক্রিকেটের নাম উঠে আসবে। ক্রিকেট মূলত তিনটি ফরম্যাটে খেলা হয়- টেস্ট, ওডিআই এবং টি-টোয়েন্টি। ক্রিকেটের পরিচালনার আন্তর্জাতিক সংস্থা হলো “ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল” বা “আইসিসি“।
ক্রিকেট মূলত দুই দলের খেলা। দুই দলে বিভক্ত হয়ে ১১ জন করে প্লেয়ার পরস্পরের বিপক্ষে খেলে থাকেন।সাধারণত ওডিআই ম্যাচ ৫০ ওভারে হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে, সারাদিন লেগে যায় একটা ম্যাচ শেষ করতে।
বিভিন্ন টি-টোয়েন্টটি ফ্র্যাঞ্চাইজি আসরগুলোর খেলা শুরু হলে উন্মাদনা দেখা দেয়। যেমন: ভারতের আইপিএল, বাংলাদেশের বিপিএল, ওয়েস্ট ইন্ডিজের সিপিএল ইত্যাদি। এর সাথে ৪ বছর অন্তর ক্রিকেটের সবচয়ে বড় আসর বিশ্বকাপ তো আছেই।
এছাড়া বিশ্বব্যপী কিছু স্বল্প পরিচিত খেলা রয়েছে যেগুলো বিভিন্ন দেশের জাতীয় খেলার মর্যাদা লাভ করেছে।
জাতীয় খেলা | দেশ | জাতীয় খেলা | দেশ |
---|---|---|---|
গ্লিমা | আইসল্যান্ড | বেজবল | যুক্তরাজ্য |
কটো | আর্জেন্টিনা | রেস্টলিং | ইরান |
রাগবি | দক্ষিণ আফ্রিকা | ঘোড় দৌড় | সৌদি আরবের |
রাগবি | স্কটল্যান্ডের | আইস হকি | চেক রিপাবলিক |
সাইক্লিং | নেদারল্যান্ড | আইস হকি | সুইডেনের |
টেবিল টেনিস | চীন | বাস্কেটবল | মরোক্কো |
ষাঁড়ের লড়াই | কলম্বিয়া | বাস্কেটবল | ইজরায়েল |
আলপিন স্কিয়িং | অস্টিয়া | বাস্কেটবল | জর্ডান |
ড্রাইভিং | পর্তুগাল | ব্যাডমিন্টন | সিঙ্গাপুর |
জুজুৎসু | জাপান | দাবা | রাশিয়া |
সাইক্লিং | পর্তুগাল | কাবাডি | বাংলাদেশ |
একটি দেশের জাতীয় প্রতীক থাকে, জাতীয় মাছ,পশু, ফল, ফুল সবই থাকে। এগুলো একটি দেশের ঐ শ্রেণির বস্তু বা পশুর প্রাচুর্যতা এবং জনপ্রিয়তার ভিত্তিতে জাতীয়করণ করা হয়ে থাকে।
জাতীয় খেলাও তার ব্যতিক্রম নয়। প্রত্যেকটি জাতি চায় তার ভবিষ্যত প্রজন্ম সুনাগরিক হয়ে গড়ে উঠুক। সুনাগরিকের পুস্তকের সঙ্গা এখন আর খুব বেশি কেউ পরোয়া করেনা। বিজ্ঞান চর্চার পাশাপাশি খেলা ধুলা অত্যাবশ্যক এই বিষয়টি সব জাতির অনুভবে রয়েছে।
খেলাধুলা শরীর ও মন উভয়কে সতেজ রাখে। খেলাধুলার মাধ্যমে বাইরের দেশের কাছে সহজেই পৌঁছানো যায় এবং একই জাতীয় খেলা সম্পন্ন দেশগুলোর ভিতর সম্প্রীতির অলিখিত বন্ধন গঠিত হয়।
আমাদের দেশের জাতীয় খেলা বিপন্ন প্রায়। কাবাডি বা হাডুডু খেলা গ্রামাঞ্চলের শিশু কিশোর ছাড়া খুব কমই খেলতে পারে। এটি জাতীয় খেলা হিসেবে লজ্জাজনক এবং অপ্রীতিকর। আমাদের সবার উচিৎ খেলাধুলায় মনোনিবেশ করা এবং নিজ দেশের জাতীয় খেলাকে প্রচার করার সাথে অন্য দেশের জাতীয় খেলাকে সম্মানের দৃষ্টিতে দেখা।
ছবিঃ সংগৃহীত
তথ্যসূত্র: উইকিপিডিয়া
মন্তব্য লিখুন