কোভিড-১৯ এর কবলে পুরো বিশ্ব নানাভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। এখন পর্যন্ত এর থেকে নিস্তার পায় নি পৃথিবীর প্রতিটি মানুষ। আশার আলো হিসেবে আমরা টিকা নেয়া শুরু করলেও এই ভাইরাসের বিস্তার রোধে এখনো পুরোপুরি সফলতা আসে নি। ভয়াবহ এ ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে আমাদের সুরক্ষা দিতে পারবে “ভোল্টিক স্প্রে”। সম্প্রতি আবিষ্কৃত এ স্প্রে ইতোমধ্যে সাড় ফেলে দিয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে।
এটি এমন একটি রাসায়নিক পদার্থ সমৃদ্ধ স্প্রে যা বিভিন্ন পৃষ্ঠতলে থাকা ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়াকে আকর্ষণ করে এবং মেরে ফেলতে পারে। এটি ব্যবহারের প্রধান সুবিধা হল এ স্প্রে পরবর্তী ১৪ দিন পর্যন্ত কার্যকর থাকে। আমরা সাধারণত যেসকল স্যানিটাইজার ব্যবহার করি তার সাথে এটিই ভোল্টিক স্প্রের প্রধান পার্থক্য।
বিদ্যুতচালিত এ স্প্রেটি প্রায় সকল প্রকার প্যাথোজেন যেমন করোনা ভাইরাস, ইবোলা ভাইরাস, নোরো ভাইরাস অ্যাভিয়ান ফ্লু, ইনফ্লুয়েঞ্জা এ, সারস ইত্যাদির বিরুদ্ধে কার্যকর। অর্থাৎ এটি একটি হাইব্রিড -বায়োডিগ্রেডেবল ন্যানোস্কেল ব্যারিয়ার কোটিং যা ৩৩৬ ঘন্টারও বেশি সময় পর্যন্ত পৌনঃপুনিক ভাবে জীবাণু নিধন করতে সক্ষম।
ব্রিটিশ বাংলাদেশী চিকিৎসা বিজ্ঞানী এবং প্রজনন বিজ্ঞান বিশেষজ্ঞ ২৬ বছর বয়সী সাদিয়া খানমের ৮ মাসের গবেষণার ফসল এই ভোল্টিক স্প্রে। ছোট বেলা থেকেই বিজ্ঞানের প্রতি প্রবল ঝোঁক ছিল সাদিয়ার।
১৪ বছর বয়সে তার দাদা আলঝেইমার্স এ আক্রান্ত হলে সাদিয়ার জীবনের লক্ষ্য হয়ে যায় এ রোগ নিয়ে বিস্তর গবেষণা করার। সে লক্ষ্যেই নিজেকে প্রস্তুত করেন তিনি। পর্যাপ্ত ফান্ডের অভাবে নিজের গবেষণা চালিয়ে যেতে অসুবিধার সম্মুখীন হলে সাদিয়া ভিন্ন কিছু করার কথা ভাবেন। সেই চিন্তা থেকেই ভোল্টিকের জন্ম।
তিনি তার বাবা মায়ের রেস্টুরেন্টকে নিজের এক্সপেরিমেন্টের জন্য ব্যবহার করেন এবং অভাবনীয় ফলাফল দেখতে পান। এ স্প্রে সকল ধরনের পৃষ্ঠতলে কার্যকর যা কোভিড পপরিস্থিতির জন্য খুবই সহায়ক।
ভোল্টিক স্প্রেকে পরীক্ষা নীরিক্ষা করে স্বীকৃতি দিয়েছে The NHS, NASA সহ আরও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা। ইতোমধ্যে এটি উৎপাদনে বেশ কিছু দেশ এবং ব্লু চিপ কোম্পানি আগ্রহ প্রকাশ করেছে। ভোল্টিকের টিম এরই মাঝে বিশ্বব্যাপী প্রায় ১০ মিলিয়ন ইউরো সমমূল্যের অর্ডার পাওয়ার অপেক্ষা করছে। সাদিয়ার লক্ষ্য সমগ্র বিশ্বে এ আবিষ্কার পৌঁছে দেয়া।
ভোল্টিক স্প্রে সম্পর্কে আরও বিস্তৃত পরিসরে জানার জন্য ওয়েবসাইট রয়েছে। www.voltique.co.uk নামক এই সাইটটি থেকে এটির উদ্দেশ্য জানার পাশাপাশি এর মূল্য এবং কেনার প্রক্রিয়া সম্পর্কেও খুব সহজেই ধারণা লাভ করা যাবে।
বর্তমানে এ করোনা পরিস্থিতিতে ভোল্টিক স্প্রে বেশ সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে। যানবাহন, বাসাবাড়ি এবং সকল প্রতিষ্ঠানকে এ স্প্রের আওতায় এনে ১৪ দিন পর্যন্ত কোভিড-১৯ থেকে নিরাপদে থাকতে পারবে। কেবল করোনাকালীন সময়ই না, সকল ক্ষেত্রেই সব ধরনের ভাইরাস ব্যাকটেরিয়ার কবল থেকে সকল পৃষ্ঠতলকে নিরাপদ রাখতে ভোল্টিক স্প্রের ব্যবহার উপযোগী হতে পারে।
খুবই চমৎকার আবিষ্কার।জেনে ভালো লাগলো
এই স্প্রে আমরা হাতে কবে পাবো