জীবনের জন্য পানি: জেনে নিন কখন কতটুকু বিশুদ্ধ পানি পান করবেন

জীবনের জন্য পানি: জেনে নিন কখন কতটুকু বিশুদ্ধ পানি পান করবেন

প্রত্যেক প্রানীর বেঁচে থাকার তাগিদে প্রতিনিয়ত পানি প্রয়োজন। পানির অপর নাম জীবন। একজন মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপনের জন্য প্রতিদিন বিশুদ্ধ পানি পান জরুরি। পানির সাহায্যেই দেহের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ও কোষগুলো পরিচালিত হয় এবং আরও বিভিন্ন জৈবিক কাজ সম্পন্ন হয়। একজন সুস্থ্য মানুষের প্রতিদিন প্রায় ২-৪ লিটার বা ৭-৮ গ্লাস বিশুদ্ধ পানি পান করা উচিত।

মানবদেহে পানির প্রয়োজনীয়তা:

আমাদের খাবার হজমের জন্য পর্যাপ্ত লালা প্রয়োজন যা লালাগ্রন্থি থেকে ক্ষরন হয় কিন্তু পরিমিত বিশুদ্ধ পানি পান না করলে লালাগ্রন্থি শুকিয়ে যায়। তাই জিহ্বা, মুখ ইত্যাদি ভেজা রাখার জন্য পানি প্রয়োজন।

পানি সবচেয়ে বেশি দরকার হয় মস্তিষ্কের কার্যকারিতায়। একটানা অনেকক্ষন বিশুদ্ধ পানি পান না করলে মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশের বিরাট ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থেকে তাই মস্তিষ্কের সুরক্ষায় পানি প্রয়োজন।

রক্তের শতকারা ৯০ ভাগই পানি তাই রক্তের মাধ্যমে পানি দেহের সর্বত্র অর্থাৎ প্রত্যেকটি কোষে পৌঁছে যায় এবং এর ফলে কোষগুলো সতেজ থাকে। এছাড়া প্রটোপ্লাজমের ৮০ ভাগই পানি।

কিডনি পানিসহ দেহের সব তরল পদার্থের মাত্রা নিয়ন্ত্রন করে তাই অপর্যাপ্ত পানি পান করলে কিডনি বিকল, কিডনিতে পাথর সব বিভিন্ন রোগ হতে পারে। তাই কিডনি সুস্থ্য রাখতে পানি পান জরুরি।

এছাড়াও পানি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে রাখে, দাঁত ও দাঁতের মাড়ি ভাল রাখে, ত্বকে সতেজতা দেয় এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়।

কখন কতটুকু বিশুদ্ধ পানি খাবেন:

১। পানি পান বয়স, আবহাওয়া, পরিশ্রমের উপর নির্ভর করে। একজন কঠোর পরিশ্রম করা ব্যাক্তির জন্য দিণে ৩-৫ লিটার পানির প্রয়োজন হতে পারে। একজন ব্যাক্তি দৈনিক কি পরিমান পানি পান করবে তা মূলত নির্ভর করে ঐ ব্যাক্তির শরীর থেকে প্রতিদিন কি পরিমান পানি নির্গত হচ্ছে তার উপর।

২। খাবার খাওয়ার সময় পানি পান না করাই ভাল। তাই খাবারের অন্তত ৩০ মিনিট আগে এবং খাবারের ৩০ মিনিট পরে বিশুদ্ধ পানি পান করা শ্রেয়।

৩। খুব বেশি ঠান্ডা পানি বা খুব বেশি গরম পানি পান করা ঠিক নয়। তাই সবসময় কুসুম গরম পানি পান করা উচিত।

৪। দাঁড়িয়ে পানি পান করা ঠিক নয় এতে সরাসরি কিডিনির উপর চাপ পরে তাই বসে পানি পান করা উচিত।

৫। একবারে অধিক পানি পান না করে বরং বারে বারে অল্প অল্প করে বিশুদ্ধ পানি পান করা উচিত।

৬। ঠোঁট শুকিয়ে যাওয়া মানে দেহে পানির সল্পতা সৃষ্টি হওয়া তাই ঠোঁট বা জিহ্বা শুকিয়ে গেলে বা তৃষ্ণা পেলে সাথে সাথে পানি পান করা উচিত।

৭। ব্যায়াম বা যেকোন শারীরিক কসরতের পরে প্রচুর বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে।

৮। প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠেই ২-৩ গ্লাস পানি করা উচিত এবং সারাদিনের তুলনায় রাতে তুলনামূলক কম পানি পান করা উচিত।

পানি পানের ক্ষেত্রে এই নিয়মগুলো অনুসরন করা খুবি জরুরি নাহলে হিতে বিপরীত হয়তে পারে। তাই নিয়মিত সচেতনতার সাথে পানি পান করুন এবং সুস্থ্য থাকুন।

আরও পড়ুনঃ

লুয়াক কফি: বিশ্বের সবচেয়ে দামী কফি লুয়াক

চুল পড়ার প্রধান কারন ও প্রতিকার

ভিটামিন আমাদের কোন শক্তি প্রদান করে না

ছবিঃ সংগৃহীত

Exit mobile version