দেশে কৃষির পুর্ণাংগ আধুনিকায়ন হয়নি, আংশিক হয়েছে। বাদবাকী অর্জনের পথে প্রধান বাধা জমির আইল। অধুনা চাষাবাসে যুক্ত হয়েছে সর্বাধুনিক যান্ত্রিক ব্যবস্থা ফসলের উন্নত জাত ও কলা-কৌশল। কৃষক এগুলি কতকটা ব্যবহার করেন,পুরোমাত্রায় প্রয়োগ করা সম্ভব হয়না। আমাদের জমিগুলিতে প্রচুর সংখ্যক আইল বিদ্যমান। এসব আইলের ছোট ছোট ফাঁদে আধুনিক কৃষির চর্চা খুব কষ্টকর।
বৃহৎ পরিসরের জন্য প্রণীত ব্যবস্থাকে ক্ষুদ্র পরিধির মধ্যে আঁটানো কঠিন। এছাড়া অন্যান্য সমস্যা রয়েছে। তাই প্রযুক্ত আধুনিকতা পুর্ণাংগ নয়, তেমন ফলপ্রদও নয়। কৃষির প্রকৃত আধুনিকায়নে দরকার আইলের অপসারণ। প্রকৃত পক্ষে সনাতন চেতনাকে সন্তুষ্ট করা ছাড়া আইলের উপস্থিতি অনাবশ্যক।
গ্রামে ভুমি কেন্দ্রিক কোন্দল, বংশপরম্পরা ভাগ বাটোয়ারা ,সীমানা চিহ্নিত করণ প্রভৃতি বিষয়ের স্বস্তিকর মিমাংসা হিসাবে আইলের উদ্ভব। এই প্রক্রিয়া চলমান। এমন পরিস্থিতিতে মাঠে নেমেছে আধুনিক কৃষি। এতে কাজ কিছুটা হয়। তবে এ মিশেল ব্যবস্থা থেকে কৃষকের প্রাপ্তি কম।
চাষাবাদে উন্নত প্রযুক্তি ও কলাকৌশল ব্যবহারের জন্য ধারাবাহিক প্রচারণা আছে। তবে পথ আগলে থাকা দীর্ঘকালের জঞ্জাল সরানোর কথা বলা হয় না। এর কারণ আইল উচ্ছেদের জটিলতা। ভুমি সংষ্কারের কাজ চলমান, আগামীতে আরও সংষ্কার হবে। তবে এসবে আইলের নাম নাই। আইলের অপসারণ যান্ত্রিক কৃষিকে সহজ ও উন্নত করা ছাড়াও উৎপাদনেও বেশ কিছু পরিমাণে যোগ করবে। দেশের জনসংখ্যা ক্রমবর্ধমান।
কৃষিপণ্যের বর্ধিত চাহিদা মেটাতে আগামী দিনের প্রয়োজন অনেক বেশী উৎপাদনের। কিন্তু আবাদের জমি কম। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনষ্টিটিউট -এর মতে দেশে নীট ফসলী জমির পরিমাণ ১৯৬.২৯ লক্ষ একর। এর মধ্যে প্রতিবছর ১ শতাংশের মত জমি আবাদের বাইরে চলে যাচ্ছে আবাসন সহ নানা স্থাপনায়। আবাদে নতুন জমি যুক্ত হওয়ার সুযোগ নাই বা খুব কম; সেরকম জমি নাই।
তাই আইলের নীচে পড়ে থাকা জমি উদ্ধার ও চাষে যুক্ত করা প্রয়োজন। দেশে আইলি জমির পরিমাণ কম নয়। খোলা চোখে তাকালেই বোঝা যায় লুডুর ছকের মত মাঠ গুলিতে কি বিপুল পরিমাণ জমি অপচয় হচ্ছে।
আমন আবাদের ভিত্তিতে আমরা এর একটা পরিমাণ বের করেছি। বিবিএস এর হিসাবে গত ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে দেশে আমনের চাষ হয় ১৭৩.৭৯ লক্ষ একরে, উৎপাদন হয় ১৪২.০৩ লক্ষ মেঃ টন ধান।
প্রতি একর জমিতে সমান আকারের ৬টি করে প্লট বিবেচনা করে একরে মোট প্লট ও আইলের সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়। এরপর প্রতিটি আইলের নীচে থাকা জমির গড় পরিমাণ নিরুপণ করে দেশে ঐ বছরে আমনের জমিতে সর্বমোট আইলি জমির পরিমাণ বের করা হয়।
দেখা গেছে আইলের নীচে থাকা জমির পরিমাণ ৪ লাখ ৭৬ হাজার ৮২২ একর যা মোট আবাদকৃত জমির ২.৭৪ ভাগ। এতে উৎপাদিত ধানের পরিমাণ -আমন বোরো মিলিয়ে -প্রায় ৪ লাখ মেঃ টন যার বাজার মুল্য (প্রতিমণ ৮০০টাকা হিসাবে) প্রায় ২৪০০ কোটি টাকা। দেশে সব জমিতে আমন-বোরো হয়না। এর বাইরেও জমি আছে, শাকসব্জি ফলের বাগান আছে সেখানেও আইল আছে।
তাই টাকার পরিমাণ আরও বেশী হবে। বাস্তবে আইল ছাড়াও আরো নানা কারণে জমির অপচয় ঘটে। সাকুল্য ক্ষতির পরিমাণ ২৫০০ কোটি টাকা ধরা যায়। বিপুল জনসংখ্যা ও ক্ষুদ্রায়তনের এই দেশে এত ক্ষতি বহনের সুযোগ নাই। এই ক্ষতি আশু বন্ধ হওয়া উচিৎ।
এটা করার সহজ উপায় সমবায় খামার গঠন ও আধুনিক প্রক্রিয়ায় চাষাবাদ। আইল অপসারণ করে মাঠকে উন্মুক্ত করতে হবে। সেই মাঠে চাষের সকল কাজ হবে সর্বাধুনিক যান্ত্রিক উপায়ে। জমিতে কৃষকের মালিকানা থাকবে পুর্ববৎ, তিনি খামারে তার মালিকানা অনুযায়ী ফসলের বা অর্থের অংশ পাবেন।
পুরো বিষয়টি পরিচালনার জন্য একটি ছোট দপ্তর রাখা যেতে পারে। সমবায় খামারের সুবিধা ও উপকারীতার বিবরণ অনেক বিস্তৃত। নীচে তার কিছুটা আলোকপাত।
চাষ হবে ঝামেলা মুক্ত ও সাশ্রয়ী, কৃষক ভারমুক্ত হবেন। যে ভার তিনি এতদিন একা বহন করতেন তা এখন করবে সমবায়। কৃষকের ঝামেলার প্রধান কারণগুলি জানা -মৌসুমে উপকরণের মুল্য বৃদ্ধি , শ্রমিকের স্বল্পতা, ক্ষেতের প্রতি সর্বক্ষণ নজরদারী ইত্যাদি। হাল আমলে সেচের পানি , বিশেষ করে গভীর নলকুপের সেচ গ্রহণ করাও এক বৃহৎ সমস্যা। প্রায়শঃ ঝগড়া ফ্যাসাদের সৃষ্টি হয়। শ্রমিকের অভাবে মাঠে এখন গরুর হালের চেয়ে কলের লাংগলের ব্যবহার বেশী বলে মনে হয় । কৃষক ঝামেলা এড়াতে চান।
দুর্গম এসব পাহাড় অতিক্রম করে আবাদ শেষ করার পর তার মনে হয় যেন তিনি নরক থেকে উঠে এলেন। যদিও তখন পর্যন্ত নিম্নমুল্যের হতাশা তাকে আক্রমণ করেনি। সমবায় খামার এসবের হাত থেকে নিস্কৃতি।
সনাতন ধারার চাষে কৃষকের বেশকিছু পরিমাণ অপচয় হয়। সঠিকভাবে উপকরণ প্রয়োগ করা হয়না, দক্ষতার অভাব আছে। এছাড়া মাত্রাতিরিক্ত উপকরণ ব্যবহারও ক্ষতির কারণ। কর্তন সংগ্রহ ও বাজার জাত করার সময়ে কিছু পরিমাণ ফসল নষ্ট হয়। বলা হয় এর পরিমাণ উৎপাদিত ফসলের ৮ থেকে ১০ শতাংশ। এই ক্ষতি কম নয়। সমবায় খামার এগুলি এড়াতে সক্ষম। ব্যবস্থার পাশাপাশি থাকবে নজরদারী। তাই অপচয়ের সুযোগ নাই। এভাবে নানা খাতে কমা খরচ গিয়ে যুক্ত হবে প্রথমে কৃষকের প্রাপ্তিতে অতঃপর তার হাসিতে।
কৃষির এক ঐতিহাসিক দুর্যোগের নাম ফসলের নিম্নমুল্য। এর কোন প্রতিষেধক নাই। প্রতি ফসল মৌসুমে কৃষকের উপরে দুটো অভিশাপ অনিবার্য্য -একটা শ্রমিক সংকট অন্যটা ফসলের উপযুক্ত দাম না পাওয়া। এ পর্যন্ত কোন বাণী কিম্বা ব্যবস্থা এ গুলিকে সরাতে সক্ষম হয়নি, সমবায় খামার সরাবে। ফসলের উপযুক্ত মুল্য কৃষক না পাবার কারণ তার নিরুপায় বিক্রি।
তিনি নানা জায়গায় ধার দেনা করে আবাদ করেন। ফসল ওঠার পর সব পাওনাদার একসংগে চাপ দেন দেনা পরিশোধের। তখন আর ন্যায্য মুল্যের অপেক্ষায় থাকা চলেনা, যা মেলে তাতেই পণ্য বিক্রি করেন।
বিশেষ করে রাখা চলেনা বোরো ধান,বর্ষাকাল হওয়ায় দ্রুত বিক্রি অপরিহার্য্য; কৃষকের উপায় থাকেনা। এই তাড়া আর অসহায়ত্বের সুযোগ নেন বাজারের ঠগিরা। কৌশলে যতটা পারা যায় সস্তায় পণ্য কেনেন। অতীতে কয়েকশ বছর ধরে ভারতের নানা জায়গায় ঠগিরা দল বেধে পথ চলতেন শিকারের আশায়; পেলে গলায় একখন্ড কাপড় পেঁচিয়ে স্বর্বস্ব লুটে নিতেন। পরে পথিকের আর কোন খোঁজ পাওয়া যেতনা। সময়ের পরিবর্তন হয়েছে।
ঠগিদেরকে আর পথের শ্রান্তি বহন করতে হয়না; বাজারে বসে সবার দেখা মেলে। এখানে সবাইকে একসাথে পাওয়া যায়। অতঃপর কেবল সুযোগ বুঝে ঝাঁপিয়ে পড়া। কৃষকের এই অসহায়ত্বের প্রধান ওষুধ সমবায় খামার। তাকে আর পুর্বের মত একা বা এককভাবে উৎপাদন করতে হবেনা, তেমনি পণ্য নিয়ে বাজারে অসহায়ভাবে দাঁড়িয়েও থাকতে হবেনা।
বিক্রির ব্যবস্থা হবে খামারে, ক্রেতা-মহাজন বা মিলারের সংগে চুক্তিতে যা মৌসুমের শুরুতেই নির্ধারিত হবে। ব্যক্তি কৃষকের দুশ্চিন্তার কারণ নাই। এ স্বস্তি বলে বোঝানোর নয়। এরপর নিম্ন মুল্যের দিন ইতিহাসের পাতায় ঠাঁই নেবে -এমন কথা অবশ্য বলা যাবেনা। বাজারের ভোগদখলকারীদের নেশা বহুদিনের,তারা হঠাৎ ছাড়বেন কীভাবে। এর বাইরে সমবায় গুলো যদি নিজেরা প্রসেসিং এর ব্যবস্থা করে তবে আরও উত্তম হয়। সেটা করা কঠিন কিছু নয়।
বর্তমানে দেশে খাদ্যপণ্যের দশা বেহাল,মানহীন ও বিষযুক্ত পণ্যের ছড়াছড়ি। জন স্বাস্থ্যের উপর এসবের প্রতিক্রিয়া ব্যাপক। সমবায় খামার এর একটি মৌলিক সমাধান। তারা পরিকল্পিত উপায়ে উৎপাদন করে দেশের মানুষকে মান সম্পন্ন বিষমুক্ত খাদ্যপণ্য (চালডাল, মাছ, শাকসব্জি) যোগান দিতে পারেন। এই একটি ভুমিকা তাদের টিকে থাকার জন্য যথেষ্ঠ।
কাজের চাপে এখন কৃষকের সাংষ্কৃতিক জীবন প্রায় শুন্যের কোঠায়। প্রত্যহ উদয়াস্ত খাটুনি চাষের উদ্বেগ নিম্নমুল্যের হতাশা আর পরিবারের চাপের মধ্যে কেটে যায় তার সমগ্র জীবন, অনেকে টেরও পাননা।
বাড়ীতে কিছুটা সময় কমদামী টিভি সেটের সামনে বসে থাকা তার সৌখিনতা। সমবায় খামারের দেয়া অবসর তাকে একটি ভিন্নমাত্রার জীবন উপহার দেবে। এই অবসর তার নিজেকে নতুনভাবে অনুভব করার ও পুনর্মুল্যায়নের একটা সুযোগ। এর গুরুত্ব অনেক।
সমবায় খামার কৃষকের নতুন জীবনের প্রতিষ্ঠাতা। অগ্রসর সমাজ কৃষককে কেবল পণ্য ও মুনাফা উৎপাদনকারী হিসাবে দেখে, তার মানস-মননের মুল্যায়ন করে না, খোঁজও রাখেনা। না হলে পরিবর্তনটা হত আরও আগে।
অবসরে পাওয়া সময়ে আরও একটা বড় কাজ হবে -গ্রামে শুরু হবে নিবিড় চর্চায় পশুপাখী পালন ও ফলমুলের চাষ। হাতের নানা কাজের বিকাশের সুযোগ আছে। এগুলি আয়বর্ধক, কৃষকের বাড়তি স্বাচ্ছন্দ্যের যোগানদার। কিছু বাড়তি উপার্জনের আশায় কেউ কেউ টুকটাক এখনও এসব করেন গিন্নি ও ছেলে মেয়ের সহায়তায়।
আইল থেকে উদ্ধার হওয়া জমি চাষাবাদ ছাড়াও আরও অনেক কাজে ব্যবহার করা যাবে। আমরা উপরে এমন জমির একটা হিসাব দিয়েছি ৪ লক্ষ ৭৬ হাজার একর। প্রকৃতপক্ষে পরিমাণটা আরো বেশী হবে। আমাদের ধারণা এটা হবে ৩ ভাগ, অর্থ্যাৎ ৫লাখ ২২ হাজার একর। এর অতিরিক্ত উৎপাদন হতে খামারের ব্যয় নির্বাহ হতে পারে
গ্রামে গৃহহীন মানুষ রয়েছে তাদের জন্য গৃহ নির্মাণ করা যায়। এইসব মানুষেরা খামারের শ্রমশক্তি। তাদের বসবাসের সুরাহা মানে খামারের পরিচালনা নিশ্চিত করা। সুযোগ পেলে অনেক শ্রমজীবি মানুষ শহরের কলুষিত জীবন থেকে গ্রামের নির্মল পরিবেশে ফিরবেন।
বিশেষতঃ তাদের জন্য সব মৌসুমে কাজের সংস্থান হবে যা বর্তমানে নাই। গ্রামে পশুচারণ ভুমির অভাব; এটা পশু পালনের এক বৃহৎ সংকট। নতুন জমিতে পশুচারণ ক্ষেত্র গড়া যায়। এছাড়া হতে পারে খেলার মাঠ স্কুল ক্লাব প্রভৃতি প্রতিষ্ঠান। এগুলির কার্যক্রম সমাজ বিনির্মাণে সহায়ক।
সমবায় খামার একটি বৃহৎ কার্যক্রম। এর পরিচালনায় নানা ধরণের দক্ষ জনবল প্রয়োজন। সেসব নিয়োগ হতে পারে গ্রামীণ জনগোষ্ঠী হতে। উৎপাদনের ধারাবাহিকতা ও উচ্চমাত্রা বজায় থাকায় কৃষিপণ্যের নানা কাজে এবং সৃষ্ট অন্যান্য পেশায় বহু মানুষের জীবিকার সুরাহা হবে।
সংক্ষেপে বলা যায় সমবায় খামার গ্রামীণ জীবনের আমুল পরিবর্তনের আধার। এসবের পাশাপাশি সমবায় খামার জলবায়ু পরিবর্তন রোধ পরিবেশ রক্ষা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রশমনে ভুমিকা রাখবে।
এই পদ্ধতির প্রধান সমস্যাটা গোঁড়ায় -খামার বাস্তবায়নে। মানুষ আইলকে চেনে তার স্বত্ত্ব ও দখল রক্ষার প্রতীক রুপে। এই চেতনা বহুযুগের। তাই আইল তুলতে তারাই প্রধান অন্তরায়। কৃষকের চাওয়া জমির নিরাপত্তা ও নিশ্চয়। তিনি জমিতে তার স্বত্ত্ব-দখল পুর্বের মত রাখতে চান। স্বভাবতঃই এ বিষয়ে তিনি আপোষহীন।
তাই সমবায় খামার প্রতিষ্ঠার আগে কৃষককে তার জমির বিষয়ে আশ্বস্ত করতে হবে। এই কাজ সরকারের। কৃষক সরকারী কাগজ (দলিলপত্র) মুলে মালিকানা সম্পর্কে নিশ্চিন্ত থাকেন।
সমবায়ের ক্ষেত্রেও অনুরুপ কাগজ থাকতে হবে। তখন কৃষককে বোঝানো সহজ হবে। ব্যবস্থা অনেকটা উন্নত হওয়ায় তিনি পুর্বের চেয়ে অনেক বেশী রিটার্ণ পাবেন। স্বস্তি ও প্রাপ্তির চিত্র সকলকে উদ্বুদ্ধ করে, কৃষককেও করবে। তবে ব্যাপারটা সহজে ঘটবেনা। অনেকদিনের জঞ্জাল সরাতে সময়ের দরকার। খারাপ কাজ দ্রুত ও সহজে হয়; ভাল কাজের জন্য সময় ও ত্যাগ স্বীকার প্রয়োজন। তাই সমবায় খামার বাস্তবায়ন সময় সাপেক্ষ। প্রথমে নজীর স্থাপন করা দরকার। শুরু করা যেতে পারে প্রতি জেলায় একটি করে মডেল খামার স্থাপন করে।